পৃথিবী অদ্ভুত এবং বিস্ময়কর জায়গার অভাব নেই। আর এর বেশ কয়েকটি রয়েছে একেবারে মানুষের ধরা ছোঁয়ার মধ্যে। এমনই একটি জায়গা হল মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের মাঙ্কি আইল্যান্ড। দক্ষিণ ক্যারোলিনার বিউফোর্ট উপকূলের অনতিদূরে অবস্থিত এই দ্বীপ জুড়ে ঘুরে বেড়ায় হাজার-হাজার বানর, যারা বহন করছে এক ভয়ঙ্কর রোগের জীবাণু।
দ্বীপে যাওয়া সম্ভব হলে দেখা যাবে, দ্বীপ জুড়ে নিশ্চিন্তে ঘুরে বেড়াচ্ছে কয়েক হাজার বানর। তবে এই বানরগুলো কোনো সাধারণ বানর নয়... কারণ এগুলো বহন করছে এক ভয়ঙ্কর রোগের জীবাণু।
প্রায় দুই হাজার একর জায়গা নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের দক্ষিণ ক্যারোলিনার বিউফোর্ট উপকূলের অনতিদূরে অবস্থিত এই দ্বীপটির আসল নাম মর্গান আইল্যান্ড। আর এই রহস্যময় দ্বীপে আনুমানিক প্রায় চার হাজার বানর বাস করে।
১৯৭৯ সালে পুয়ের্তো রিকোর এক গবেষণাগার থেকে পালিয়ে গিয়েছিল একদল রিসাস ম্যাকাক বানর। তাদের দেহে ছিল হারপিস বি সংক্রামক রোগের ভাইরাস।
বানরগুলি পালিয়ে যাওয়ার পর, স্থানীয় স্তরে মধ্যে হারপিস বি মহামারি দেখা দিয়েছিল। মহামারির মোকাবিলায় দক্ষিণ ক্যারোলিনার এই জনবসতিহীন মর্গান দ্বীপকে বেছে নেওয়া হয়েছিল, ওই ভাইরাস বহনকারী বানরগুলির বাসস্থান হিসেবে।
রোগাক্রান্ত বানরগুলিকে ওই দ্বীপেই রেখে আসা হয়, যাতে তারা সেখানে নিশ্চিন্তে বসবাস করতে পারে এবং নিজেদের মতো করে বংশবৃদ্ধি করতে পারে। সেই থেকেই এই দ্বীপ মাঙ্কি আইল্যান্ডে পরিণত হয়েছে।
তবে, এই দ্বীপটি নিয়ে প্রচুর বিতর্কও রয়েছে। বলা হয়, দ্বীপ থেকে বানর এবং অন্যান্য প্রাণীদের ধরে ব্যবহার করা হয় গবেষণার কাজে। দ্বীপ থেকে প্রাণীদের পাঠানো হয় আমেরিকার বিভিন্ন গবেষণাগারে। দ্বীপটির রক্ষণাবেক্ষণ করে দক্ষিণ ক্যারোলিনা ডিপার্টমেন্ট অব ন্যাচারাল রিসোর্সেস।
সাধারণ মানুষের এই দ্বীপে যাওয়ার অনুমতি নেই। তবে, নৌকো নিয়ে দ্বীপটির চারপাশে ঘুরে দেখা যায়। পর্যটকদের জন্য কঠোর সতর্কবার্তা দিয়ে রেখেছে প্রশাসন।
তারা সাফ জানিয়েছে, এই দ্বীপ মোটেও নিরাপদ নয়। প্রথমত, এই দ্বীপে থাকা বানররা অত্যন্ত হিংস্র। তাদের এলাকায় মানুষ ঢুকতে দেখলে আঁচড়ে-কামড়ে শেষ করে দিতে পারে। পাশাপাশি, তাদের দেহে বেশ কিছু অজানা, স্বল্প জানা রোগের জীবাণু থাকতে পারে। যা থেকে সংক্রমণ ছড়াতে পারে।