রাজধানীর গোপীবাগে বেনাপোল এক্সপ্রেসে ট্রেনে আগুনের ঘটনায় দগ্ধ আরও দুই নারীকে শেখ হাসিনা বার্ন অ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারি ইন্সটিটিউটে ভর্তি করা হয়েছে। এর আগে তারা মুগদা জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসা নিচ্ছিলেন। এ নিয়ে ওই আগুনে হাসপাতালটিতে ভর্তি রোগীর সংখ্যা বেড়ে দাঁড়ালো ১০ জনে।
শনিবার হাসপাতালটিতে ভর্তি হওয়া ওই নতুন রোগীর দুই জনই নারী। তারা হলেন- ওয়াহিদা আক্তার (২৬) ও হালিমা বেগম (৫০)।
হাসপাতালটির প্রধান সমন্বয়ক ডা. সামন্ত লাল জানিয়েছেন, দগ্ধ আট জনের অবস্থাই অত্যন্ত আশঙ্কাজনক। তাদের সবার শ্বাসনালী পুড়ে গেছে, একজনের শরীর দগ্ধ হয়েছে ৯ শতাংশ। সবাইকে পর্যবেক্ষণে রেখেছি। এই রোগীদের মেন্টাল ট্রমা থেকে যাবে লম্বা সময়।
বার্ন ইনস্টিটিউটের আবাসিক চিকিৎসক তরিকুল ইসলাম জানান, দগ্ধদের মধ্যে হালিমা বেগমকে (৫০) আইসিইউতে ও ওয়াহিদাকে (২৬) এইচডিইউতে চিকিৎসাধীন রয়েছে।
এছাড়াও শুক্রবার রাতে আসা শিশুসহ আট জনকে এইচডিইউতে রাখা হয়েছে। আহতদের সবারই কমবেশি শ্বাসনালী ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
চিকিৎসাধীন অন্যরা হলেন- ডেইজি আক্তার রত্না (৪০), তার স্বামী ইকবাল হোসেন (৪৮), তাদের দুই ছেলে রেহান (৬) ও দিহান (১১)।
এছাড়া ডা. কৌশিক বিশ্বাস (৩২), নাফিজ আলম (২২), মাসুদ রানা (৩১), আসিফ মো: খান (৩০)।
ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের বার্ন ইউনিটে অমিত দেবনাথ (২৭) নামে একজন চিকিৎসা নিয়ে চলে গেছেন।
ভোট ঠেকানোর আন্দোলনে থাকা বিএনপি-জামায়াতসহ সমমনা দলগুলোর ৪৮ ঘণ্টার হরতাল শুরুর আগের রাতে বেনাপোল এক্সপ্রেস ট্রেনে আগুন দেয় হরতালকারীরা। শুক্রবার রাত ৯টার দিকে রাজধানীর গোপীবাগ কাঁচাবাজারের কাছে ওই ট্রেনের চারটি বগিতে আগুন দেওয়া হয়। এই ঘটনায় এখন পর্যন্ত চারজনের নিহত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে, আহত হয়েছেন অনেকেই।
রাজধানীর গোপীবাগে বেনাপোল এক্সপ্রেস ট্রেনে ভয়াবহ আগুন দেয়ার ঘটনায় জড়িত সন্দেহে আট জনকে গ্রেপ্তার করেছে ডিবি পুলিশ। এদের একজন যুবদল নেতা কাজী মনসুর স্বীকার করেছেন নির্বাচন বানচাল করতে ভিডিও কনফারেন্সে মিটিং করে নাশকতার এই সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের দাবি, বিএনপি নেতা নবী উল্লাহ নবী এই আগুন নাশকতার পরিকল্পনাকারী ও অর্থদাতা।
৫ জানুয়ারি সন্ধ্যা ছয়টা থেকে ৬ জানুয়ারি সকাল ১০টা পর্যন্ত ১৬ ঘণ্টায় সারাদেশে ১৪টি আগুনের সংবাদ পেয়েছে ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স। এতে ৬টি যানবাহন ও ৯টি স্থাপনা পুড়িয়ে দেওয়া হয়।