বিএনপিপন্থী সংগঠন জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরাম থেকে ব্যারিস্টার মাহবুব উদ্দিন খোকনকে অব্যাহতি দিয়ে যে চিঠি দেওয়া হয়েছে, তার কোনো বৈধতা নেই বলে দাবি করেছেন এই আইনজীবী।
সোমবার দুপুরে সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতিতে এক সংবাদ সম্মেলনে এই দাবি করেন ব্যারিস্টার খোকন। এর একদিন আগেই জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরাম থেকে খোকনকে অব্যাহতি দেয়ার খবর বের হয়।
সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির নতুন সভাপতি খোকনের বিরুদ্ধে অভিযোগ, তিনি ‘দলীয় চরম শৃঙ্খলা পরিপন্থী’ কাজে জড়িত ছিলেন।
ব্যারিস্টার খোকন বলেন, বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরামের কেনো গঠনতন্ত্র নেই। তাই তাকে ওই সংগঠন থেকে থেকে অব্যাহতি দেওয়া অবৈধ।
সংবাদ সম্মেলনে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরামের মহাসচিব ব্যারিস্টার কায়সার কামালকে বিএনপি থেকে বহিষ্কারের দাবি জানান মাহবুব উদ্দিন খোকন।
তিনি বলেন, কায়সার কামাল সরকারের এজেন্ট। নৈতিক স্খলনজনিত অপরাধে তিনি অপরাধী। তার ভূমিকার তদন্ত করা হোক।
সম্প্রতি অনুষ্ঠিত হওয়া সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির দ্বিবার্ষিক (২০২৪-২৫) নির্বাচনে সভাপতি হন ব্যারিস্টার মাহবুব উদ্দিন খোকন। ১৪টি পদের মধ্যে খোকনসহ চারটি পদে বিজয়ী হয় বিএনপিপন্থী আইনজীবীরা।
আর সম্পাদকসহ ১০টি পদে বিজয়ী হয় আওয়ামী লীগ সমর্থিত বঙ্গবন্ধু আওয়ামী আইনজীবী পরিষদ।
ভোটের পরই খোকনসহ বিজয়ী চারজনকে সংগঠনের দায়িত্ব না নিতে চিঠি দেয় জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরাম। তবে ওই নির্দেশ অমান্য করে গত চার এপ্রিল মাহবুব উদ্দিন খোকন দায়িত্ব গ্রহণ করেন।
খোকনসহ চারজন দায়িত্ব নেয়ার পর গত ৬ এপ্রিল বিএনপি চেয়ারপারসনের গুলশান কার্যালয়ে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী ফোরামের কেন্দ্রীয় কমিটি, উপদেষ্টামণ্ডলী ও সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির সাবেক নেতারা বৈঠক করেন বলে বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয়েছে।
এদিনের পুরো সংবাদ সম্মেলনে খোকনের বক্তব্যই ছিল জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরামের মহাসচিব ও বিএনপির কেন্দ্রীয় কমিটির আইন বিষয়ক সম্পাদক কায়সার কামালকে ঘিরে।
তিনি বলেন, কায়সার কামাল সমিতির নির্বাচনে সরকারকে ওয়াকওভার দিতে চেয়েছিলো। কায়সার কামাল একটা কুলাঙ্গার। সে পরকীয়া প্রেম করতে গিয়ে গণপিটুনির শিকার হয়েছিলো।
কায়সার কামালকে সরকারের এজেন্ট উল্লেখ করে মাহবুব উদ্দিন খোকন বলেন, কায়সার কামাল বার নির্বাচনে সরকারকে জেতানোর জন্য ষড়যন্ত্র করেছেন এই ষড়যন্ত্রের মূলে ছিলো ভোট গণনার সময় এজেন্টদের সরিয়ে নেওয়া। যদি এজেন্টদের সরিয়ে নেওয়া না হতো, তাহলে আমরা ১২ পদে জয়ী হতাম।
এ সময় কায়সার কামালকে ‘অর্বাচীন’ বলেও আখ্যায়িত করেন ব্যারিস্টার খোকন। বলেন, উনি একজন আত্মস্বীকৃত অপরাধী। সে কীভাবে আইনজীবীদের নেতা হন? নৈতিক স্খলনের কারণে আইনজীবী ফোরাম থেকে তার সদস্যপদ থাকা উচিত নয়।
‘সরকারের এই এজেন্টকে দল থেকে বহিষ্কার করা উচিত। আমি মনে করি, কায়সার কামালের ভূমিকা বিএনপির স্থানয় কমিটির সদস্যদের তদন্ত করা উচিত,’ যোগ করেন তিনি।
ছাত্রাবস্থা থেকে বিএনপির রাজনীতির সাথে জড়িত থাকার কথা উল্লেখ করে ব্যারিস্টার খোকন বলেন, বিএনপি ছাড়া জীবনে আর কোনো দল করি নাই। আর তারেক রহমানতো সমিতির নির্বাচন করতে নিষেধ করেননি।