ভোরের আলো ফুটতেই রবি’র আলোয় স্নাত সকালে মানবতা ও মনুষ্যত্বের জয়গানে, মানুষের মিছিলে শুরু হলো ১৪৩২ বঙ্গাব্দ। শুরুতে রাগালাপ দিয়ে রমনার বটমূলে নতুন বছরকে স্বাগত জানালো দেড় শতাধিক শিল্পী। সোমবার (১৪ এপ্রিল) সকাল সোয়া ছয়টায় ছায়ানটের ৫৮তম আয়োজনে শুরু হয় বর্ষবরণে আনুষ্ঠানিকতা। প্রায় ১০ মিনিট চলে রাগালাপের অমৃত সুরের খেয়া। অতঃপর শুরু হয় গান পর্ব।
বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর, জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম, লালন ও বাংলাদেশের লোকজ ধারার বেশ কিছু গান এই পর্বে জায়গা করে নিয়েছে। ছিল একক ও সমবেত কণ্ঠের পরিবেশনায় থাকা গানগুলো।
এর ফাঁকে আবৃত্তিশিল্পীরা কবিতা আবৃত্তি করেন। সকাল সাড়ে আটটার দিকে অনুষ্ঠানের শেষ হয় জাতীয় সংগীত ‘আমার সোনার বাংলা আমি তোমায় ভালোবাসি’ দিয়ে।
ছায়ানটের এবারের আয়োজনের বার্তা, ‘আমার মুক্তি আলোয় আলোয়’। যথারীতি অনুষ্ঠান সাজানো হয় নতুন আলো, প্রকৃতি এবং মানুষকে ভালোবাসবার গান, দেশপ্রেম-মানবপ্রেম আর আত্মবোধন-জাগরণের সুরবাণী দিয়ে। সব মিলিয়ে বাঙালি সমাজকে নিয়ে আলোর পথে মুক্তির পথযাত্রী হবার আহ্বান ছিল এবারের পরিবেশনায়। এবারের অনুষ্ঠানসজ্জায় ছিল ৯টি সম্মেলক ও ১২টি একক গান এবং ৩টি পাঠ।
ছায়ানটের বর্ষবরণ আয়োজনের অন্যতম দিক লিখিত বক্তব্য কিংবা বিশেষ বার্তা। যা বরাবরই পাঠ করে আসছিলেন সনজীদা খাতুন। এবার ছায়ানটের হয়ে সেই বার্তা পাঠ করেন নির্বাহী সভাপতি ডা. সারওয়ার আলী।
দেশের ঐতিহ্যবাহী সাংস্কৃতিক সংস্থা ছায়ানট ১৯৬৭ সাল থেকে রমনার এই বটমূলে পহেলা বৈশাখে বর্ষবরণের অনুষ্ঠানের আয়োজন করে আসছে। এবারেও ১৪৩২ বঙ্গাব্দকে বরণ করা হলো রমনার এই বটমূল থেকেই।
১৯৬৭ সালে পাকিস্তানি শাসকের বাঙালিত্বের প্রতি রাঙানো চোখ উপেক্ষা করে যে আয়োজনের সূচনা করেছিল ছায়ানট, তা-ই আজ বর্ষবরণে বিশ্ব বাঙালির প্রধান প্রাণের উৎসব।