ঈদুল আজহায় কোরবানির পশুর বর্জ্য সরানোর কাজ আনুষ্ঠানিকভাবে শেষ ঘোষণা করেছে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন।
সোমবার (৯ জুন) বিকেলে রাজধানীর ওয়াসা ভবনে এক সাংবাদিক সম্মেলনে এই ঘোষণা দেন দক্ষিণ সিটির প্রশাসক মো. শাহজাহান মিয়া।
এসময় তিনি বলেন, ঈদুল আজহার প্রথম ও দ্বিতীয় দিনে ঢাকা দক্ষিণ সিটির ৭৫টি ওয়ার্ডে শতভাগ কোরবানির পশুর বর্জ্য সরানো হয়েছে। আর তৃতীয় দিনে দুপুর পৌনে তিনটা পর্যন্ত সবগুলো ওয়ার্ড থেকে বর্জ্য সরানো হয়েছে।
তিনি জানান, ঈদের তৃতীয় দিন দুপুর পৌনে তিনটা পর্যন্ত মোট ৩১ হাজার ২২৬ মেট্রিক টন বর্জ্য সরানো করা হয়েছে। এ বছর লক্ষ্যমাত্রা ছিলো ৩০ হাজার মেট্রিক টন। অর্থাৎ লক্ষ্যমাত্রার অধিক বর্জ্য নির্ধারিত সময়ের আগেই সরানো করা সম্ভব হয়েছে।
শাহজাহান মিয়া জানান, ঢাকা দক্ষিণ সিটির অস্থায়ী ইজারা দেওয়া আটি পশুর হাটের সবগুলোর বাঁশের খুঁটিসহ ভাসমান ও উড়ন্ত ময়লা সরানো হয়েছে। হাটের সামগ্রিক বর্জ্য অপসারণ কার্যক্রম প্রায় শেষ পর্যায়ে। আশা করা যায় দ্রুত শেষ হবে।
এ বছর ঈদুল আজহায় দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনে মোট এক লাখ ৬৬ হাজার ৭৫৪টি পশু কোরবানি করা হয়েছে উল্লেখ করে প্রশাসক জানান, তার মধ্যে প্রথম দিনে এক লাখ ৩৩ হাজার ৩১৭টি, দ্বিতীয় দিনে ৩১ হাজার৭৪৫টি এবং তৃতীয় দিনে এক হাজার ৬৯২ টি পশু কোরবানি হয়েছে।
তিনি আরও জানান, বর্জ্য ব্যবস্থাপনা কার্যক্রমে জড়িত ছিলো ১২ হাজার ৮৫৩ জন। বর্জ্য সরাতে ছোট-বড় দুই হাজার ৭৯টি যানবাহন এবং ৩৪৪টি যান যন্ত্রপাতি ব্যবহার করা হয়েছে।
এছাড়া, নগর ভবনে স্থাপিত কেন্দ্রীয় নিয়ন্ত্রণ কক্ষের মাধ্যমে কোরবানির পশুর হাট ও কোরবানির পশুর বর্জ্য সরানোর কাজ সরেজমিনে সচিত্র তদারকি কার্যক্রম পরিচালনা করা হয়। তাছাড়া প্রতিটি হাটে আলাদা আলাদা নিয়ন্ত্রণ কক্ষ স্থাপন করা হয়েছিল। প্রতিটি হাটে আলাদা আলাদা তদারকি কমিটি, অঞ্চলভিত্তিক আঞ্চলিক তদারকি কমিটি এবং কেন্দ্রীয়ভাবে সার্বিক তদারকি কমিটির মাধ্যমে সরেজমিনে মনিটরিং করা হয়। হাটে আইন শৃঙ্খলা তদারকির জন্য নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট এর নেতৃত্বে মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করা হয় এবং ৮টি হাটে ৪০০ জন আনসার ভিডিপির সদস্য মোতায়েন করা হয়েছিল।
কোরবানি বর্জ্য ব্যবস্থাপনার অংশ হিসেবে নগরবাসীর মধ্যে প্রায় ৪৫ টন ব্লিচিং পাউডার, ২০৭ গ্যালন (প্রতি গ্যালনে ৫ লিটার) এবং এক লাখ ৪০ হাজার বায়ো-ডিগ্রেডেবল ব্যাগ বিতরণ করা হয়েছে।
বৃষ্টি উপেক্ষা করে নির্ধারিত সময়ের আগেই কোরবানির পশুর বর্জ্য সরানোয় মাঠ পর্যায়ের পরিচ্ছন্ন কর্মী এবং বর্জ্য ব্যবস্থাপনা সংশ্লিষ্ট সবাইকে ধন্যবাদ জানিয়েছেন প্রশাসক মো. শাহজাহান মিয়া।
এছাড়া, কোরবানির বর্জ্য সরাতে ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনকে সহযোগিতা করায় নগরবাসীর প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন তিনি।
এসময় সংবাদমাধ্যমগুলোর প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে প্রশাসক বলেন, নগরবাসীকে নির্ধারিত জায়গায় কোরবানি দিতে ও বর্জ্য ফেলতে উদ্বুদ্ধ করার মাধ্যমে এবং সঠিক সময়ে নগরবাসীকে সিটি কর্পোরেশনের বার্তা পৌঁছানোর মাধ্যমে তারা দায়িত্বশীল ও সর্বোচ্চ পেশাদারিত্বের পরিচয় দিয়েছে।
ব্রিফিংয়ে ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের সচিব মুহাম্মদ শফিকুল ইসলাম, প্রধান বর্জ্য ব্যবস্থাপনা কর্মকর্তা এয়ার কমডোর মো. মাহাবুবুর রহমান তালুকদারসহ ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাগণ উপস্থিত ছিলেন।
খবর বিজ্ঞপ্তির।