সিরাজগঞ্জে দুই বাউল শিল্পী ও তাদের সফরসঙ্গীদের মারধরের অভিযোগ পাওয়া গেছে। মঙ্গলবার (১৬ আগস্ট) বিকেল সাড়ে পাঁচটার দিকে জেলার তাড়াশ উপজেলার মাধাইনগর ইউনিয়নের কাস্তা বাজার এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। আহতদের স্থানীয় হাসপাতালে প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে সিরাজগঞ্জ শেখ ফজিলাতুন্নেসা মুজিব ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।
হামলার শিকার বাউল শিল্পীরা হলেন- কামনা সরকার (২৮), তার স্বামী বাবু সরকার ও সঙ্গীরা। তাদের বাড়ি নাটোর জেলার গুরুদাসপুর উপজেলার কাছিকাটা গ্রামে।
যাদের বিরুদ্ধে মারধরের অভিযোগ তারা হলেন- কাস্তা গ্রামের বাসিন্দা ও কাস্তা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক হাফিজুর রহমান ও তার ছেলে হৃদয় হোসেন (২০)। হাফিজুর সাত নং মাধাইনগর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান হাবিবুর রহমান হাবিলের বড়ো ভাই বলে জানা গেছে।
স্থানীয়রা জানান, বাউল শিল্পীরা কাস্তা বাজারে চা পান করছিলেন। এ সময় সেখানে থাকা শিক্ষক হাফিজুর রহমান শিল্পী কামনা সরকার ও তার সফরসঙ্গীদের বেশভূষা নিয়ে কটূক্তি করেন। এতে ওই শিল্পীরা প্রতিবাদ করলে তিনি ক্ষিপ্ত হয়ে তাদের আরও গালাগাল করতে থাকেন। এক পর্যায়ে ওই শিক্ষকের ছেলে হৃদয় হোসেন ঘটনাস্থলে এসে শিল্পীদের অকথ্য ভাষায় গালাগাল করতে থাকেন। কিন্তু বাউল শিল্পী কামনা সরকার শিক্ষক হাফিজুর রহমান ও তার ছেলেকে সংযত হয়ে কথা বলার অনুরোধ করেন।
এ সময় শিক্ষক হাফিজুর রহমান বাউল শিল্পী কামনাকে লাথি মেরে মাটিতে ফেলে দেন। পাশাপাশি বাবা-ছেলে মিলে দুই শিল্পীকে মারধর করতে থাকেন। পরে তাদের চিৎকারে স্থানীয়রা এগিয়ে এসে উদ্ধার করে।
তাড়াশ উপজেলা ৫০ শয্যা বিশিষ্ট স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের জরুরি বিভাগের দায়িত্বে থাকা চিকিৎসক মো. রাকিবুল ইসলাম জানান, আহত এক শিল্পীকে আমরা প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে উন্নত চিকিৎসার জন্য সিরাজগঞ্জ শেখ ফজিলাতুন্নেসা মুজিব ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট হাসপাতালে স্থানান্তর করেছি।
এ প্রসঙ্গে মাধাইনগর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান হাবিবুর রহমান হাবিল জানান, তার বড়ো ভাইয়ের সঙ্গে আলাপ করতে গিয়ে শিল্পীরা গালাগাল করেন। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে তাদের মধ্যে ধস্তাধস্তির ঘটনা ঘটেছে। তারপর খবর পেয়ে আমি হাসপাতালে গিয়ে শিল্পী কামনা সরকারকে উন্নত চিকিৎসার জন্য নিজ উদ্যোগে সিরাজগঞ্জে পাঠিয়েছি।
আরও পড়ুন: বরগুনা জেলা ছাত্রলীগকে অবাঞ্ছিত, সমর্থকদের উলঙ্গের ঘোষণা
তবে এ ঘটনার পর গা ঢাকা দিয়েছেন ওই শিক্ষক ও তার ছেলে। বক্তব্য নিতে মোবাইলে ফোন এমনকি বাড়িতে গিয়েও তাদের পাওয়া যায়নি।
তাড়াশ থানার অফিসার ইনচার্জ মো. শহিদুল ইসলাম জানান, বিষয়টি আমার জানা নেই। এ ঘটনায় থানায় কেউ অভিযোগও করেন নি।
একাত্তর/এসি