মাদ্রাসা শিক্ষার্থী শিফার মৃত্যুর রহস্যের জট খুলেছে। আত্মহত্যা নয়, ধর্ষণের পর হত্যা করা হয়েছে তাকে। এমন তথ্যে পাওয়া গেছে ময়নাতদন্তের রিপোর্টে।
এ ঘটনায় শিফার বাবা বাদী হয়ে বগুড়া সদর থানায় অজ্ঞাত পরিচয় ব্যক্তিদের আসামি করে একটি হত্যা মামলা দায়ের করেছেন। জড়িতদের গ্রেপ্তার করে বিচার নিশ্চিতের দাবি স্বজনদের।
পুলিশ বলছে, শিগগিরই এ মামলার রহস্য উন্মোচন করতে চান তারা।
২০২৩ সালের ১৮ সেপ্টেম্বর বগুড়া শহরের গোদারাপড়ার তা’লীমুল কুরআন মহিলা মাদ্রাসার স্টোর রুমে মেলে শিফা নামে ১৪ বছর বয়সী এক শিক্ষার্থীর মরদেহ। প্রাথমিকভাবে ঘটনাটি আত্মহত্যা হিসেবে ধরে নেয় সবাই। ঘটনার দেড় বছর পর ময়নাতদন্ত প্রতিবেদন মেলে চাঞ্চল্যকর তথ্য। হাফেজা শিফাকে ধর্ষণের পর হত্যা করা হয়েছে।
নিহত শিফা বগুড়ার দুপচাঁচিয়া উপজেলার পোথাট্টি গ্রামের বাসিন্দা ছিলো।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, দিন মজুর বাবার দুই মেয়ে। বড় মেয়েকে বিয়ে দিয়েছিলেন অনেক আগেই। স্বপ্ন ছিলো ছোট মেয়েকে হাফেজা করে ভালো পাত্র দেখে বিয়ে দিবেন। অভাবের সংসারে সুখ শান্তি না পেলেও মেয়েরা ভালো থাকলে তিনি প্রশান্তি পাবেন। কিন্তু মেয়ের মৃত্যুর পর মা-বাবার সেই স্বপ্ন যেন অঙ্কুরেই শেষ হয়েছে। এখন তারা চান ঘাতকদের বিচার।
শিফার মৃত্যুর পর একটি অপমৃত্যু মামলা হয় থানায়। কিন্তু দীর্ঘ সময় পর গত ১৮ মার্চ ময়নাতদন্ত প্রতিবেদন আসে পুলিশের হাতে।
পুলিশ জানায়, প্রতিবেদনে শিফাকে ধর্ষণের পর হত্যার কথা উল্লেখ করা আছে। ২৫ মার্চ শিফার পরিবারের পক্ষ থেকে একটি মামলা নেয় পুলিশ। তবে এখনও এ ঘটনায় কাউকে শনাক্ত বা গ্রেপ্তার করা যায়নি।
শিফার মৃত্যুর পর ২০২৩ সালেই মাদ্রাসাটি রহস্যজনকভাবে বন্ধ করে দেয় কর্তৃপক্ষ। তবে প্রতিষ্ঠানটির পরিচালক এস এম দেলোয়ারের দাবি, শিফার মৃত্যুর সঠিক বিচার চান তিনিও।
বগুড়ার পুলিশ সুপার জেদান আল মুসা জানান, ঘটনা তদন্ত চলছে। শিগগিরই এ মামলার রহস্য উন্মোচন করতে চান তারা।