ময়মনসিংহ থেকে নাটোরের উদ্দেশে রওনা হওয়া একটি উচ্চ বিদ্যালয়ের চারটি পিকনিকের বাসের ডাকাতির ঘটনায় আরও দুই ডাকাতকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। এসময় লুট হওয়া একটি মোবাইল ফোন ও ডাকাতির কাজে ব্যবহৃত পিকআপ জব্দ করা হয়েছে। এ নিয়ে ওই ঘটনায় ছয় ডাকাতকে গ্রেপ্তার করা হলো।
গ্রেপ্তাররা হলেন- রংপুরের শফিকুল ইসলাম শরিফ (১৯) এবং রূপন চন্দ্র ভাট (২৪)। গত ২৭ ফেব্রুয়ারি গাজীপুর সদর এবং বাসান এলাকা থেকে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়।
সোমবার (৩ মার্চ) দুপুরে টাঙ্গাইলের পুলিশ সুপার মিজানুর রহমান নিজ কার্যালয়ে সাংবাদিকদের প্রেস ব্রিফিং এ তথ্য জানান।
পুলিশ সুপার মিজানুর রহমান বলেন, এ ঘটনায় পুলিশ প্রথমে লুট করা মালামালসহ চার জনকে গ্রেপ্তার করে। তারা স্থানীয় ডাকাত হিসেবে পরিচিত। গ্রেপ্তারদের ভিকটিমের মাধ্যমে যাচাই করে এ ঘটনায় জড়িত হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে। পরে তাদের তথ্যে নতুন দুই জনকে গ্রেপ্তার করা হয়। তারা বর্তমানে পুলিশের রিমান্ডে। অন্য চার জন টাঙ্গাইল কারাগারে।
তিনি আরও বলেন, এ ঘটনায় জড়িত অন্য পাঁচ জন গত শনিবার পঞ্চগড়ের তেঁতুলিয়া থানায় একটি বাড়িতে ডাকাতি ঘটনায় গ্রেপ্তার হয়েছে। তাদের শোন অ্যারেস্ট দেখিয়ে টাঙ্গাইলে আনা হবে।
এর আগে গত ২৫ ফেব্রুয়ারি ভোর পৌনে চারটার দিকে ময়মনসিংহের ফুলবাড়িয়া উপজেলাার সোয়াইতপুর উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষক, শিক্ষার্থী ও অভিভাবকরা শিক্ষা সফরের জন্য চারটি বাস নিয়ে নাটোরের গ্রিনভ্যালি পার্কের উদ্দেশ্য রওনা দেয়।
ভোর চারটার দিকে টাঙ্গাইলের ঘাটাইল উপজেলার সাগরদীঘি ইউনিয়নের লক্ষণের বাধা এলাকায় পৌঁছালে রাস্তায় গাছের গুড়ি ফেলে বাস থামায় একদল ডাকাত। পরে ১০/১২ জনের একটি ডাকাত দল দেশীয় অস্ত্র দিয়ে জিম্মি করে চারটি বাসের থাকা শিক্ষক, শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের কাছ থেকে নগদ টাকা, মোবাইল ফোন ও মূল্যবান জিনিসপত্র লুট করে। পরে বাসের যাত্রীরা ৯৯৯ নম্বরে ফোন করলে ঘটনাস্থলে পুলিশ যাওয়ার আগেই ডাকাত দল পালিয়ে যায়। এসময় ডাকাতরা নগদ দেড় লাখ টাকা, এক ভরি স্বর্ণ, ১০টি স্মার্টফোন লুট করে।
সোয়াইতপুর উচ্চ বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক ওবায়দুল ইসলাম রুবেল জানান, ডাকাত দলের কয়েকজন প্রথমে সড়কে গাছ ফেলে। পরে চালককে অস্ত্রে মুখে জিম্মি করে গাড়িতে ঢুকে গলায় অস্ত্র ঠেকিয়ে সর্বস্ব লুট করে। তখন বাসে থাকা শিক্ষার্থীরা চিৎকার শুরু করলে মেরে ফেলার হুমকি দেওয়া হয়। আতঙ্কে যার কাছে যা ছিল সব দিয়ে দিয়েছে।
এ ঘটনায় মারধরের শিকার হয়েছেন ওই বিদ্যালয়ের কম্পিউটার ল্যাব অপারেটর সাখাওয়াত হোসাইন রবিন ও অভিভাবক শহিদুল্লাহ তালুকদার। এসময় কয়েকজন শিক্ষার্থী অজ্ঞান হয়ে পড়ে। পরে বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক বাদি হয়ে অজ্ঞাত ১০ থেকে ১২ জনকে আসামি করে থানায় মামলা দায়ের করেন।