সিরাজগঞ্জে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে কলেজছাত্র আসিফ হোসাইনকে (১৯) হত্যার ঘটনায় সাবেক দুই এমপিসহ ৭৭ জনের নামে মামলা করা হয়েছে। মামলায় অজ্ঞাত আসামি করা হয়েছে অন্তত ৩০০ জনকে।
আসামিদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলেন- সিরাজগঞ্জ-১ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য তানভীর শাকিল জয় ও সিরাজগঞ্জ-২ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য জান্নাত আরা হেনরী।
রোববার (২৩ মার্চ) সকাল ১০টায় সিরাজগঞ্জ সদর আমলি আদালতে মামলাটি দায়ের করেন নিহত আসিফের মা আসমানী খাতুন।
নিহত আসিফ হোসাইন সিরাজগঞ্জ পৌর এলাকার একডালা পুনর্বাসন মহল্লার নজরুল ইসলাম ও আসমানী খাতুনের ছেলে। তিনি সিরাজগঞ্জ সরকারি টেকনিক্যাল স্কুল অ্যান্ড কলেজের ছাত্র ছিলেন।
সিরাজগঞ্জের অতিরিক্ত পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) হুমায়ুন কবীর কর্নেল জানান, আদালত মামলাটি শুনানি করে এজাহার নিতে সিরাজগঞ্জ সদর থানার অফিসার ইনচার্জ হুমায়ুন কবীরকে নির্দেশ দিয়েছেন।
এদিকে জয়-হেনরী ছাড়াও মামলার উল্লেখযোগ্য আসামিদের মধ্যে রয়েছেন, সদর থানা আওয়ামী লীগের সভাপতি আব্দুল হাকিম, জেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি আব্দুর বারী, পৌর ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক রুবেল, কাজীপুর উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক খলিলুর রহমান শিরাজী, কাজীপুর পৌরসভার সাবেক মেয়র আব্দুল হান্নান, চৌহালী উপজেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক আব্দুল হাই ভুট্টো, চৌহালী উপজেলা যুবলীগের সাবেক সভাপতি কামরুল হায়দার মুন্না, সদর উপজেলার বাগবাটি ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি আমজাদ হোসেন, সাধারণ সম্পাদক ইউসুফ আলী, ছোনগাছা ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আব্দুল্লাহ আল মামুন, বহুলী ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি মনজুরুল ইসলাম, সাধারণ সম্পাদক সোহেল রানা প্রমুখ।
অভিযোগ পত্রে উল্লেখ করা হয়েছে, আসিফ ও তার বন্ধু শাহীন শেখ বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে সক্রিয় কর্মী ছিল। ২০২৪ সালের চার আগস্ট সকালে ছাত্র সমন্বয়কদের ডাকে আসিফ আন্দোলনে যেতে বাড়ি থেকে বের হয়। তারা শহরের চৌরাস্তা মোড়ে ছাত্র আন্দোলনে অংশ নেয়। দুপুর দুইটার দিকে শহরের ভিক্টোরিয়া কোয়ার্টার থেকে জেলার বিভিন্ন এলাকা থেকে আসা আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা জয় ও হেনরীর নেতৃত্বে হামলা চালায়। এসময় আসিফ ও শাহীনকে হত্যার পর মরদেহ হেনরী বাড়ির বাথরুমে লুকিয়ে রাখে। পরে গান পাউডার দিয়ে মরদেহ পুড়িয়ে দেওয়া হয়। আসিফের মরদেহ ডিএনএ টেস্টের পর গত চার মার্চ পরিবারে ফেরত দেওয়া হয়।