ঢাকার হাসপাতালগুলোতে কমতে শুরু করেছে ডেঙ্গু রোগী। মৃত্যু হারও নিম্নমুখী। তবে, ঢাকার রোগী কমলেও জেলার রোগীর সংখ্যাটা এখনও বেশি। জটিল পরিস্থিতি নিয়ে এখনও জেলার রোগী আসছে ঢাকায়। তাই হাসপাতালে রোগী কমলেও পরিস্থিতি সহনীয় হলো কিনা সেটি বুঝতে পুরো অক্টোবর পর্যন্ত সময় লাগবে বলছেন চিকিৎসকরা।
মুগদা জেনারেল হাসপাতালের ডেঙ্গু ওয়ার্ডে সেপ্টেম্বরের প্রথম সপ্তাহে রোগীর চাপে মেঝেতে চিকিৎসা দিতে হয়েছে চিকিৎসকদের। হাসপাতালটিতে এক মাসের ব্যবধানে রোগীর সংখ্যা ৩শ’ থেকে দুইশ’তে নেমেছে। মৃত্যুর হারও কমেছে। প্রতিমাসে এখনো মৃত্যুর তালিকায় ঢাকার থেকে বাহিরের জেলার রোগীর সংখ্যাটাই বেশি থাকছে।
মুগদা জেনারেল হাসপাতালের পরিচালক ডা. নেয়াতুজ্জামান বলেন, এবার ডেঙ্গু প্রচলিত ধারার মতো ছিলো না। অনেকে উপসর্গ ছাড়াও ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়েছেন।
মহাখালী ডিএনসিসি হাসপাতালেও মাসের ব্যবধানে রোগী কমছে। এই হাসপাতালে সেপ্টেম্বরের প্রথম সপ্তাহে রোগী ভর্তি ছিলো ৩শ’ ৬০ জন। এখন ভর্তি আছে ২শ’ ৫০ জন। শেষ দুই সপ্তাহেও মৃত্যুর হার শূন্য এই হাসপাতালে। তবে ঢাকার বাইরে থেকে এখনও জটিল রোগী আসছে।
ডিএনসিসি হাসপাতালের পরিচালক ডা. এ কে এম জহিরুল হোসেইন খান বলেন, আমাদের দক্ষ নার্স দরকার।
এবার ডেঙ্গুতে মৃত্যুর সংখ্যা হাজার ছাড়িয়ে অতীতের সকল রেকর্ড ভেঙেছে।
টিকা বিশেষজ্ঞ ডা. তাজুল ইসলাম বলেন, এবার উপসর্গবিহীন রোগী ছিলো ৮০ শতাংশেরও বেশি। কিছু কিছু ক্ষেত্রে উপসর্গ দেখা গেছে এবার।
রোগী কমছে নাকি বাড়ছে সেটি বুঝতে পুরো অক্টোবর পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হবে বলছেন এই চিকিৎসক।
চলতি বছরের পহেলা জানুয়ারি থেকে ৫ অক্টোবর পর্যন্ত ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়েছেন দুই লাখ ১৬ হাজার ৮৬৪ জন। তাদের মধ্যে ঢাকার বাসিন্দা ৮৬ হাজার ৪৯৩ জন। ঢাকার বাইরের হাসপাতালগুলোতে ভর্তি হয়েছেন এক লাখ ৩০ হাজার ৩৭১ জন।
ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত হয়ে গত ২৪ ঘণ্টায় সারাদেশে নতুন ৯ জনসহ চলতি বছর মোট মৃত্যু হলো এক হাজার ৫৫ জনের।
ডেঙ্গু নিয়ে হাসপাতাল থেকে ছুটি পাওয়ার হার ৯৫ শতাংশ। বর্তমানে হাসপাতালে ভর্তি আছেন ৯ হাজার ২৬৫ জন। ভর্তির হার চার শতাংশ এবং মৃত্যুর হার শূন্য দশমিক পাঁচ শতাংশ।
২০২২ সালে ডেঙ্গুতে দেশে ২৮১ জন মারা যান। ওই বছরের শেষ মাস ডিসেম্বরে ডেঙ্গুতে ২৭ জনের মৃত্যু হয়। একই সঙ্গে ওই বছর ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হন ৬২ হাজার ৩৮২ জন।
২০২০ সালে করোনা মহামারিকালে ডেঙ্গু সংক্রমণ তেমন একটা দেখা না গেলেও ২০২১ সালে সারাদেশে এডিস মশাবাহী এই রোগে আক্রান্ত হন ২৮ হাজার ৪২৯ জন। একই বছর দেশব্যাপী ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে ১০৫ জনের মৃত্যু হয়েছিলো।