বিশ্বে প্রথমবারের মতো ম্যালেরিয়া রোগের টিকার অনুমোদন দিলো বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও)। মশাবাহিত এ রোগে প্রতিবছর বিশ্বজুড়ে প্রায় পাঁচ লাখ মানুষের মৃত্যু হয়, যার অধিকাংশই মারা যায় আফ্রিকার দেশগুলোতে। এ টিকার অনুমোদনের ফলে আফ্রিকায় লাখো শিশুর মৃত্যু ঠেকানো সম্ভব হবে।
বৃহস্পতিবার (৭ অক্টোবর) ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে, একশ বছরেরও বেশি সময় ধরে চেষ্টার পর ম্যালেরিয়ার একটি কার্যকর টিকা তৈরি হলো। চিকিৎসা শাস্ত্রের জন্যও এটি একটি বড় অর্জন।
ডব্লিউএইচও মহাপরিচালক তেদ্রোস আধানম গেব্রেয়াসুস বলেন, শিশুদের জন্য ম্যালেরিয়া টিকার প্রতীক্ষা বহু দিনের। বিজ্ঞান, শিশু স্বাস্থ্য ও ম্যালেরিয়া নিয়ন্ত্রণে এটা যুগান্তকারী ঘটনা। এই টিকা প্রতিবছর লাখো মানুষের জীবন বাঁচাতে পারে।
যুক্তরাষ্ট্রের সংবাদমাধ্যম নিউ ইয়র্ক টাইমস জানিয়েছে, অনুমোদিত টিকাটি উদ্ভাবন করেছে ব্রিটিশ ওষুধ প্রস্তুতকারী প্রতিষ্ঠান গ্ল্যাক্সোস্মিথক্লাইন (জিএসকে)। আরটিএস, এস নামের এই টিকা কেবল ম্যালেরিয়া নয়, যেকোনো পরজীবীঘটিত রোগের বিরুদ্ধে মানুষের তৈরি করা প্রথম কার্যকর টিকা।
গ্ল্যাক্সোস্মিথক্লাইনের তৈরি এই টিকা কার্যকর বলে প্রমাণিত হয়েছিলো আরও ছয় বছর আগে। এরপর আফ্রিকার দেশ ঘানা, কেনিয়া ও মালাবিতে ২০১৯ সাল থেকে পরিচালিত একটি পাইলট কর্মসূচির মাধ্যমে এর পরীক্ষামূলক প্রয়োগেও সফলতা আসে।
পরীক্ষামূলক প্রয়োগে এ টিকা দেওয়া হয় আফ্রিকার ২৩ লাখ শিশুকে। যা ম্যালেরিয়ার সংক্রমণ ৩০ শতাংশ কমাতে সক্ষম। সেই ফলাফলের ভিত্তিতে ডব্লিউএইচও এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
আরও পড়ুন: কাবুলে তালেবানের হাতে আটক চার আইএস জঙ্গি
এ টিকার মোট চারটি ডোজ নিতে হবে। শিশুর বয়স পাঁচ মাস হলে, এক মাস অন্তর অন্তর প্রথম তিনটি ডোজ দিতে হবে। আর চতুর্থ বুস্টার ডোজটি দিতে হবে ১৮ মাস বয়স হলে।
বিশ্বের অন্যতম পুরনো ও প্রাণঘাতী সংক্রামক রোগ ম্যালেরিয়ায় প্রতিবছর প্রায় ২৩ কোটি মানুষ আক্রান্ত হয়। আর মৃত্যু হয় পাঁচ লাখ মানুষের।
একাত্তর/আরবিএস