ইউক্রেনের দুই শহর মারিউপোল ও ভলনোভাখা থেকে নাগরিকদের সরিয়ে নেয়ার জন্য একটি ‘নিরাপদ করিডোর’ দিতে রাশিয়া সাময়িক যুদ্ধবিরতির ঘোষণা দিলেও তা মানছে না বলে অভিযোগ করেছে দেশটির কর্তৃপক্ষ। বলছে, নিরাপদ করিডোরেই গোলাবর্ষণ করা হচ্ছে।
মানবিক করিডর তৈরি করে ইউক্রেনের দক্ষিণ-পূর্ব সীমান্তের শহর মারিউপোল এবং পূর্বদিকে অবস্থিত ভলনোভাখা থেকে উদ্ধার করা হবে যুদ্ধে আটকে পড়া সাধারণ মানুষকে। মারিউপোল শহরের মেয়রের এমন আহবানে সাড়া দিয়েছিলো ক্রেমলিন।
ঘোষণা আসে শনিবার সাড়ে পাঁচ ঘণ্টার জন্য যুদ্ধবিরতির। মস্কোর স্থানীয় সময় শনিবার সকাল দশটা থেকে কার্যকর এই আংশিক যুদ্ধবিরতি কার্যকর হবার কথা ছিলো। এমনও বলা হয়েছিলো, এই সময় দুই শহরে গোলাগুলি ও গোলা বর্ষণ বন্ধ রাখবে রুশ সেনারা।
কিন্তু ইউক্রেন কর্তৃপক্ষ অভিযোগ করেছে, শহর দুটোতে হামলা অব্যাহত আছে। আর এ কারণে মারিউপোল শহর থেকে বাসিন্দাদের সরিয়ে নেয়ার কাজ স্থগিত হয়ে গেছে। গত কয়েক দিন ধরে এই শহরটি দখলে রেখেছে রুশ সেনারা।
এসব অভিযোগ উড়িয়ে দিয়ে রুশ প্রতিরক্ষা মন্ত্রনালয় জানিয়েছে, মারিউপোল ও ভলনোভাখা শহরের কাছে নির্দিষ্ট করে দেয়া ‘মানবিক করিডোর’ খুলে দেয়া হয়েছে এবং রুশ সেনারা করিডোর পাহারা দিচ্ছে, যাতে করে নির্বিঘ্নে দেশ ছাড়তে পারে ইউক্রেনিয় নাগরিকরা।
তবে মারিউপোল সিটি কাউন্সিল দাবি করেছে, রুশ সেনারা সাময়িক যুদ্ধবিরতি মানছে না। তাই নাগরিকদের নিরাপদ আশ্রয়ে ফিরে যেতে বলা হয়েছে। রেড ক্রিসেট জানিয়েছে, এই পরিস্থিতির কারণে দুই শহরের বাসিন্দাদের শনিবারে সরিয়ে নেয়া হচ্ছে না।
ন্যাটো ইউক্রেনের আকাশকে ‘নো ফ্লাই জোন’ ঘোষণার দাবি নাকোচ করে দেওয়ার বেজায় চটেছেন দেশটির প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি। তিনি বলেন, যারা ভেতরে নিরাপত্তাহীনতায় ভোগে এটা তাদের নিজেদের প্রবোধ দেয়া ছাড়া কিছু নয়।
এদিকে, রাশিয়ার ওপর পশ্চিমাদের একের পর এক নিষেধাজ্ঞা ইউক্রেনে হামলাকে আরও বেশি যৌক্তিক করে তুলছে বলে দাবি করেছেন পুতিন। তিনি হুশিয়ারী দিয়েছেন, এসব নিষেধাজ্ঞার পরিণতি খুব একটা ভালো হবে। এসব নিষেধাজ্ঞা বিশ্বে বড় ধরনের মন্দা ডেকে আনতে পারে।
শনিবার ইউক্রেনে রুশ হামলা দশম দিন ভোরেও দুই পক্ষের তীব্র লড়াই হয়েছে। বিবিসি বলছে, রুশ সেনাবাহিনীর এক উপ-প্রধানসহ তিনজন কমান্ডার নিহত হয়েছেন। নতুন করে কিয়েভে আরও ৫৩ জনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে।
রুশ অভিযানে সামরিক বেসামরিক কোনো স্থাপনাই বাদ যাচ্ছে না। তিন দিক থেকে চালানো রুশ আক্রমণে সবচেয়ে চাপে আছে ইউক্রেনের দক্ষিণাঞ্চল। গুরুত্বপূর্ণ শহরে বাড়ছে মস্কোর নিয়ন্ত্রণ। রুশ সেনারা এবার ইউক্রেনের দ্বিতীয় বৃহত্তম পারমাণবিক কেন্দ্রের দিকে যাচ্ছে।
বিবিসি বলছে, যুদ্ধের মাঝে পড়ে অন্তত তিন রুশ কমান্ডার নিহত হয়েছে। তবে, রুশ গণমাধ্যম শুধুমাত্র কম্বাইন্ড আর্মস আর্মির উপ প্রধান মেজর জেনারেল সুখোভেটস্কি মৃত্যুর খবর দিয়েছে। এসবের মাঝে ইউক্রেন সীমান্ত দিয়ে মহড়ার অংশ হিসাবে উড়ে গেছে মার্কিন বোমারু বিমান।
একাত্তর/ এনএ