ইউক্রেনে চলমান রুশ আগ্রাসনে এখন পর্যন্ত ৯০২ বেসামরিক নাগরিকের মৃত্যুর খবর নিশ্চিত করেছে জাতিসংঘ। এ সময় গোলাগুলি ও বিমান হামলায় আহত হয়েছে আরও ১৪৫৯ জন ইউক্রেনীয়।
জাতিসংঘের মানবাধিকার কার্যালয় (ওএইচসিএইচআর) জানিয়েছে, আগ্রাসন শুরুর পর থেকে অর্থাৎ ২৪ ফেব্রুয়ারি থেকে ১৯ মার্চ পর্যন্ত এ হতাহতের ঘটনা ঘটে।
সংস্থাটির বরাতে রয়টার্স জানিয়েছে, বেশিরভাগ হতাহতের ঘটনা ঘটেছে বিস্ফোরণের জারে। এছাড়া কামান, রকেট লাঞ্চার, ক্ষেপণাস্ত্র এবং বিমান হামলার কারণে হতাহত আরও বেশি হয়েছে বলে জানিয়েছে জাতিসংঘ।
ওএইচসিএইচআর বলছে, ইউক্রেনে প্রকৃত হতাহতের সংখ্যা আরও অনেক বেশি। ক্ষতিগ্রস্ত এলাকাগুলো থেকে নিয়মিত তথ্য আসছে না, ফলে হতাহতের প্রকৃত সংখ্যা সম্পর্কে নিশ্চিত করে কিছু বলা যাচ্ছে না।
মারিউপোলে বাড়ছে উত্তেজনা
এদিকে ইউক্রেনের মারিউপোল শহরের নিয়ন্ত্রণ নেওয়ার পর ইউক্রেনীয় সেনাদের আত্মসমর্পণের প্রস্তাব দিয়েছে মস্কো। যদিও এ প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করে কিয়েভ। ইউক্রেনীয় সেনারা বলছে, বেঁচে থাকা পর্যন্ত লড়াই চালিয়ে যাবে তারা। এর ফলে নতুন করে বাড়ছে উত্তেজনা। দুই সপ্তাহের বেশি সময় শহরটি অবরোধ করে রেখেছে রুশ বাহিনী। গোলাবর্ষণ অব্যাহত রয়েছে।
ইউক্রেনীয়রা আত্মসমর্পণ করলে মারিউপোল শহরের বাসিন্দা ও সেনাদের দুটি নিরাপদ করিডোর দিয়ে চলে যাওয়ার সুযোগ দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে মস্কো। তবে ইউক্রেন সরকার এবং মারিউপোলের স্থানীয় প্রশাসন প্রস্তাবটি প্রত্যাখ্যান করেছে।
মারিউপোল শহরের মেয়রের এক উপদেষ্টা বিবিসিকে বলেছেন, নিরাপদে চলে যাওয়ার যে প্রতিশ্রুতি মস্কো দিয়েছে, তাতে বিশ্বাস করা যায় না। শেষ সৈন্য বেঁচে থাকা পর্যন্ত প্রতিরোধ চলবে।
যুক্তরাজ্যের জয়েন্ট ফোর্সের সাবেক কমান্ডার জেনারেল স্যার রিচার্ড ব্যারনস বিবিসি ফোরকে দেওয়া এক সাক্ষাতকারে জানান, রুশ সেনারা যদি মারিউপোলের দখল নিতে পারে, তাহলে রাশিয়া থেকে লুহানেস্ক ও দোনেস্ক হয়ে ক্রিমিয়ায় সরাসরি যোগাযোগের পথ স্থাপন করতে পারবে তারা। এ বিষয়টি রাশিয়ার জন্য অনেক বড় একটি বিজয় হিসেবে বিবেচিত হবে।
আরও পড়ুন: ইউক্রেন যুদ্ধ নিয়ে ইতিহাসের সঠিক পথেই আছে চীন
এমন পরিস্থিতিতে চীন, তুরস্ক কিংবা ফ্রান্সের মতো দেশগুলো এ যুদ্ধ থামাতে তাদের আলোচনায় চালিয়ে যাচ্ছে। যদিও এ পর্যন্ত যুদ্ধ স্থগিত করার মতো কোনো সমঝোতায় পৌঁছাতে পারেনি কিয়েভ-মস্কো।
একাত্তর/আরবিএস