ষষ্ঠ মার্কিন রাজ্য হিসেবে মৃত্যুর পর মরদেহ জৈব সারে পরিণত করাকে বৈধতা দিলো নিউইয়র্ক। এর ফলে একজন ব্যক্তি নিজের মরদেহ দিয়ে জৈব সার তৈরির সিদ্ধান্ত নিতে পারবেন, যেটিকে কবর দেয়া বা আগুনে পোড়ানোর চেয়ে পরিবেশবান্ধব বলে মনে করা হচ্ছে।
শনিবার (৩১ ডিসেম্বর) এই আইনে সই করে এটিকে বৈধতা দেন নিউইয়র্কের গভর্নর ক্যাথি হোচুল।
যুক্তরাষ্ট্রে সর্বপ্রথম এই আইন চালু করে ওয়াশিংটন। পরে একে একে কলোরাডো, ওরেগন, ভারমন্ট ও ক্যালিফোর্নিয়াও এই পথে হাঁটে।
সম্পূর্ণ প্রক্রিয়াটি মাটির উপরে একটি বিশেষ ফ্যাসিলিটিতে সম্পন্ন হয়। এ প্রক্রিয়ায় প্রথমে মরদেহকে কাঠের গুঁড়া, আলফালফা উদ্ভিদ ও খড়ের সাথে একটি বন্ধ বাক্সে রাখা হয়। সময়ের সাথে সাথে জীবাণুর প্রভাবে মরদেহটি পচে যায়।
এক মাস পর প্রাপ্ত মাটিকে তাপ প্রয়োগের মাধ্যমে জীবাণুমুক্ত করা হয় ও মৃত ব্যক্তির পরিবারের সদস্যদের কাছে দিয়ে দেয়া হয়। এই মাটি তারা গাছ লাগাতে ব্যবহার করতে পারেন।
এই প্রক্রিয়ার সাথে জড়িত মার্কিন প্রতিষ্ঠান রিকম্পোজ জানায়, গতানুগতিক শবদাহ বা কবর দেয়ার তুলনায় এই প্রক্রিয়ায় কার্বন নিঃসরণের পরিমাণ অনেক কম।
জলবায়ু পরিবর্তনের জন্য অন্যতম দায়ী উপাদান হলো কার্বন ডাই অক্সাইড, যা মরদেহ পোড়ানোর ফলে ব্যাপকভাবে উৎপন্ন হয়। মরদেহ কবর দিলেও কাঠ, জমি ও অন্যান্য প্রাকৃতিক সম্পদ খরচ হয়।
মানব কম্পোস্টিংয়ের উদ্যোক্তারা বলছেন, এই প্রক্রিয়া শুধু পরিবেশবান্ধবই নয়, শহরাঞ্চলে যেখানে কবরের জন্য জায়গা সীমিত সেখানেও এটি কাজে লাগতে পারে।
আরও পড়ুন: দামেস্কাস বিমানবন্দরে ইসরাইলি মিসাইল হামলার অভিযোগ
তবে এই প্রক্রিয়ার নৈতিক দিক নিয়েও প্রশ্ন তুলেছেন অনেকে। এই আইনের বিরোধিতা করে নিউইয়র্কের ক্যাথলিক বিশপরা বলছেন, মানবদেহকে 'বাসাবাড়ির বর্জ্যের' মতো ব্যবহার করা ঠিক নয়।
সুইডেনে এই প্রক্রিয়া আগে থেকেই বৈধ। এছাড়াও যুক্তরাজ্যে 'প্রাকৃতিক কবর' দেয়া যায়, যেখানে মরদেহকে কফিন ছাড়া বা পচনশীল কফিনে কবর দেয়া হয়।
একাত্তর/এসজে