আফগানিস্তানের কিছু কিছু প্রাক্তন সামরিক ঘাঁটিকে ব্যবসার জন্য অর্থনৈতিক অঞ্চলে পরিণত করার ঘোষণা দিয়েছে তালেবান সরকার।
সোমবার (২০ ফেব্রুয়ারি) বিবিসি জানিয়েছে, অর্থনৈতিক বিষয়ক ভারপ্রাপ্ত উপ-প্রধানমন্ত্রী মোল্লা আবদুল গনি বেরাদার এই সিদ্ধান্ত ঘোষণা করেছেন।
২০২১ সালের আগস্টে তালেবান দেশটির নিয়ন্ত্রণ পুনরুদ্ধার করার পর থেকে আফগানিস্তান একটি গভীর অর্থনৈতিক ও মানবিক সংকটের সম্মুখীন হয়েছে। এর আগে প্রায় দুই দশক ধরে বিদেশি সামরিক বাহিনী দেশটিতে ছিল।
রোববার (১৯ ফেব্রুয়ারি) মোল্লা বেরাদার এক বিবৃতিতে বলেন, বিদেশী বাহিনীর অবশিষ্ট সামরিক ঘাঁটিগুলিকে বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চলে রূপান্তর করার অভিপ্রায়ে শিল্প ও বাণিজ্য মন্ত্রণালয় ধীরে ধীরে সেগুলোর নিয়ন্ত্রণ নিয়ে নেবে।
তিনি জানান, প্রকল্পটি রাজধানী কাবুল এবং উত্তর বলখ প্রদেশে শুরু হবে। তবে এ ব্যাপারে তিনি বিশদ বিবরণ দেননি।
সিঙ্গাপুরের এস রাজারত্নম স্কুল অফ ইন্টারন্যাশনাল স্টাডিজের মুহম্মদ ফয়জল বিন আবদুল রহমান বিবিসিকে বলেছেন, তালেবানকে যদি আরও ভালভাবে শাসন করতে এবং কিছু অভ্যন্তরীণ বৈধতা অর্জন করতে হয় তবে তাদেরকে কোষাগারের সম্পদ বাড়াতে হবে।
তিনি বলেন, আরও গুরুত্বপূর্ণ হলো অর্থনৈতিক পরিকল্পনার প্রতি তালেবানের প্রতিশ্রুতি প্রমাণ করা। এর মধ্যে রয়েছে চীনের মতো সম্ভাব্য বিদেশী বিনিয়োগকারীদের জন্য রাজধানী এবং সীমান্তের কাছাকাছি নিরাপদ অঞ্চল স্থাপন এবং প্রতিবেশী দেশগুলির সাথে আঞ্চলিক বাণিজ্য পুনরুজ্জীবিত করা।
আফগানিস্তান প্রাকৃতিক গ্যাস, তামা এবং বিরল মৃত্তিকাসহ প্রাকৃতিক সম্পদে পরিপূর্ণ বলে অনুমান করা হয়, যার মূল্য প্রায় এক ট্রিলিয়ন ডলার।
তবে দেশটিতে কয়েক দশকের অশান্তির কারণে এই মজুদের বেশিরভাগই অব্যবহৃত রয়ে গেছে।
বিদেশী সামরিক বাহিনী প্রত্যাহারের পর থেকে আফগানিস্তানের অর্থব্যবস্থা একাধিক সমস্যায় জর্জরিত হয়ে পড়েছে। সরকারের সদস্যদের উপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়েছে, কেন্দ্রীয় ব্যাংকের বিদেশী সম্পদ হিমায়িত করা হয়েছে, এবং বেশিরভাগ বিদেশী সাহায্য- যা আগে এর অর্থনীতিকে সমর্থন করতো- স্থগিত করা হয়েছে।
আরও পড়ুন: আবারও মিসাইল ছুঁড়লো উত্তর কোরিয়া
এই বছরের শুরুতে তালেবান জানায় যে তারা উত্তর আফগানিস্তানে তেল খননের জন্য একটি চীনা সংস্থার সাথে একটি চুক্তি স্বাক্ষর করার পরিকল্পনা করেছে। ২৫ বছরের চুক্তিটি এই অঞ্চলে চীনের অর্থনৈতিক সম্পৃক্ততার উপর জোর দেয়।
বেইজিং আনুষ্ঠানিকভাবে আফগানিস্তানের তালেবান প্রশাসনকে স্বীকৃতি দেয়নি। তবে দেশটিতে এর উল্লেখযোগ্য স্বার্থ রয়েছে, যেটি চীনের বেল্ট অ্যান্ড রোড ইনিশিয়েটিভের জন্য গুরুত্বপূর্ণ একটি অঞ্চলের কেন্দ্রে রয়েছে।
একাত্তর/এসজে