পাস হওয়ার চার বছর পর সংশোধিত নাগরিকত্ব আইন (সিএএ) কার্যকর হয়েছে ভারতে। এ আইন কার্যকরের ঘোষণার পর থেকেই ভারতজুড়ে বিক্ষোভ-প্রতিবাদ চলছে। এর পরিপ্রেক্ষিতে প্রতিবাদকারীদের আশ্বস্ত করলেও বিজেপি সরকারের অনড় অবস্থানের কথা জানিয়েছেন দেশটির স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ।
ভারতীয় বার্তা সংস্থা এএনআইকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে সরকারের অবস্থানের কথা স্পষ্ট করেন অমিত শাহ। প্রতিবাদের মুখে আইনটি পরিবর্তন করা হবে না বলেও জানিয়ে দেন তিনি।
অমিত শাহ বলেন, সিএএ মুসলিমবিরোধী নয় এবং এ আইনে এমন কোনো ধারা নেই, যা দিয়ে কোনো ভারতীয় নাগরিকের অধিকার কেড়ে নেয়া হবে। তবে প্রতিবাদের মুখে আইনটি পরিবর্তন করা হবে না।
বিরোধীপক্ষ বিষয়টি নিয়ে মিথ্যার রাজনীতি করছে এমন অভিযোগ করে তিনি বলেন, ভারতের সংখ্যালঘুদের এই আইন নিয়ে ভয় পাওয়ার কোনো দরকার নেই। এতে কোনো নাগরিকের অধিকার ফিরিয়ে নেওয়ার মতো কোনো বিধান নেই।
তিনি আরও যোগ করেন, ভারতের মুসলমানদেরও সংবিধান অনুসারে ভারতের নাগরিকত্বের জন্য আবেদন করার অধিকার আছে। এটিকে বাতিল করা অসম্ভব। আমরা এ বিষয়ে সারাদেশে সচেতনতা সৃষ্টি করবো।
এদিকে মানবাধিকার সংগঠন অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল বলছে, আইনটির মাধ্যমে ভারতে ধর্মীয় বৈষম্যকে বৈধতা দেয়া হয়েছে। পাশাপাশি আইনটির সমালোচনা অব্যাহত রেখেছে বিরোধী দলগুলোও।
এর আগে ২০১৯ সালে মোদির সরকারের পাস করা এই আইনে বলা হয়, বাংলাদেশ, পাকিস্তান ও আফগানিস্তানের মতো মুসলিম ধর্মাবলম্বী দেশ থেকে যদি সে দেশের ধর্মীয় সংখ্যালঘুরা (হিন্দু, খ্রিষ্টান, বৌদ্ধ, শিখ, জৈন ও পার্সি) ধর্মীয় উৎপীড়নের কারণে এ দেশে আশ্রয় চান, তা হলে তা দেবে ভারত। সংসদের দু’কক্ষে পাশ হওয়ার পরে দেশের তৎকালীন রাষ্ট্রপতি অনুমোদন দিয়েছিলেন সিএএ বিলে। কিন্তু এত দিন ধরে সিএএ কার্যকর করা নিয়ে কোনও বিজ্ঞপ্তি জারি করা হয়নি।
এই আইনের আওতায় ২০১৪ সালের ৩১ ডিসেম্বরের মধ্যে বাংলাদেশ, পাকিস্তান ও আফগানিস্তান থেকে যেসব হিন্দু, খ্রিষ্টান, বৌদ্ধ, শিখ, জৈন ও পার্সিধর্মীয় সংখ্যালঘু সাম্প্রদায়িক নির্যাতন ও নিপীড়নের কারণে ভারতে চলে এসেছেন, তাদের নাগরিকত্ব দেওয়া হবে।
সবশেষ ২০১৯-এ নাগরিকত্ব সংশোধনী আইন (সিএএ) পাসের পর থেকেই দেশজুড়ে শুরু হয়েছিল বিক্ষোভ। এমনকি দাঙ্গাও বাঁধে দিল্লিতে।