পশ্চিমাদের দাবি ও চাপের পরও ফিলিস্তিনের স্বাধীনতাকামী সংগঠন হামাস প্রশ্নে নিজেদের অবস্থানে অনড় থাকার কথা জানিয়েছে বিশ্বের অন্যতম ধনাঢ্য দেশ কাতার। গাজা যুদ্ধে মধ্যস্থতা করার প্রক্রিয়া চলার সময় দোহাতে হামাসের কার্যালয় বন্ধ করে দেয়ার কোন পরিকল্পনা নেই বলে জানিয়েছে দেশটির সরকার।
এর আগে, ফিলিস্তিনের ইসলামী প্রতিরোধ আন্দোলন- হামাসের রাজনৈতিক কার্যালয় কাতার থেকে অন্য কোনো দেশে সরিয়ে নেয়া হচ্ছে বলে পশ্চি মা গণমাধ্যম যে খবর প্রকাশিত হয়েছে, তা প্রত্যাখ্যান করেছে হামাস। কাতারের সবশেষ ঘোষণার মধ্যে দিয়ে বিষয়টি আরও পরিস্কার করা হয়েছে।
রেডিও তেহরানের অনলাইন সংস্করণ পার্স টুডে বুধবার এক প্রতিবেদনে বলেছে, হামাসের গণমাধ্যম বিষয়ক মুখপাত্র ওয়ালিদ আল-কিলানি মঙ্গলবার জানিয়েছেন, হামাসের শীর্ষ নেতারা কাতারে অবস্থান করছেন এবং দেশটি ত্যাগ করার কোনো পরিকল্পনা তাদের নেই।
হামাস দোহা থেকে তাদের কার্যালয় সরিয়ে নেওয়ার চেষ্টা চালায়নি বলে উল্লেখ করেন তিনি। মার্কিন দৈনিক ওয়াল স্ট্রিট জার্নাল গত শনিবার এক প্রতিবেদনে দাবি করে, কাতারের রাজধানী দোহা থেকে নিজের রাজনৈতিক কার্যালয় সরিয়ে নেয়ার জন্য হামাস অন্তত দুটি দেশের সঙ্গে আলোচনা করেছে।
দৈনিকটি জানায়, ইসরায়েলের সঙ্গে যুদ্ধবিরতির আলোচনায় হামাসকে নমনীয় হওয়ার জন্য কাতার ও মিশর চাপ সৃষ্টি করার পর সংগঠনটি দোহা ত্যাগ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। হামাস কাতার ত্যাগ করলে গাজায় যুদ্ধ বিরতি প্রতিষ্ঠা কিংবা হামাসের হাতে আটক ইসরাইলি জিম্মিদের মুক্তির আলোচনা ভেঙে যেতে পারে।
আল-কিলানির বক্তব্যের আগে কাতার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র মাজিদ মোহাম্মাদ আল-আনসারি বলেন, কাতার যতদিন গাজা পরিস্থিতিতে মধ্যস্থতা করছে ততদিন হামাসের দোহা ত্যাগ করার প্রশ্ন উঠছে না। তিনি বলেন, হামাস নেতারা দোহায় আছেন এবং তাদের ওপর কোনো বিধিনিষেধ আরোপ করা হয়নি।
তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়েপ এরদোয়ান একই কথা বলেছেন। ইরাক সফর থেকে ফেরার সময় তিনি সাংবাদিকদের বলেন, হামাস নেতারা কাতার ছেড়ে যাচ্ছেন এমন কোনো লক্ষণ তিনি দেখেননি। হামাসের প্রতি কাতারের যে আন্তরিকতা, তা পরিবারের সদস্যদের মতোই। এই অবস্থান অপরিবর্তনীয়।
হামাসের রাজনৈতিক কার্যালয় কাতারের দোহায় রয়েছে। সংগঠনের পলিটব্যুরো প্রধান ও সাবেক ফিলিস্তিনি প্রধানমন্ত্রী ইসমাইল হানিয়া এবং হামাসের পররাষ্ট্র বিষয়ক প্রধান ও সাবেক পলিটব্যুরো নেতা খালেদ মিশালসহ আরো কয়েকজন কর্মকর্তা দোহায় অবস্থান করছেন।