কোটিপতি হবার স্বপ্ন দেখেন না এমন মানুষ পাওয়া কঠিন। হতদরিদ্র মানুষটিও স্বপ্ন দেখে কোটিপতি হবার। সে জন্য লটারির টিকেটও কিনেন তারা। একটা সময় এদেশেও ছিলো লটারির প্রচলন। তখন দেখা গেছে, বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই লটারির বিজয়ীরা ছিলেন শ্রমজীবী মানুষ।
এবার, একজন বাংলাদেশিসহ ১৬ জন শ্রমজীবী মানুষের কোটিপতি হবার স্বপ্নপূরণ করে দিয়েছে ধনী দেশ সংযুক্ত আরব আমিরা। তবে তারা কোটিপতি হয়েছিলেন মাত্র একদিনের জন্য। এই একটি দিনে তারা একজন কোটিপতির মতোই জীবনযাপন করেছেন। চলনে বলনে একদম মিলিয়নিয়ান যাকে বলে।
শনিবার দুবাইভিক্তিক সংবাদপত্র খালিজ টাইমস এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে, ১৬ জন শ্রমিককে কোটিপতি হওয়ার সুযোগ দিয়েছে আরব আমিরাত। সেখানে একদিনের জন্য মিলিয়নিয়ার বনে যান এক বাংলাদেশিসহ ১৬ শ্রমিক। তারা সবাই একটি দিন মিলিয়নিয়ারদের মতো করে কাটিয়েছেন।
আন্তর্জাতিক শ্রমিক দিবসের উপলক্ষে এমন উপহার পেয়েছেন দুবাইয়ের ১৬ শ্রমিক। তারা সবাই দুবাইয়ের শীর্ষস্থানীয় ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ওয়াল্ড স্টারের কর্মী। আন্তর্জাতিক শ্রমিক দিবস উপলক্ষে তাদেরকে গোল্ডেন অ্যাচিভমেন্ট তুলে দেয়া হয়। একই সঙ্গে তাদের লাইফটাইম গিফটও দেয়া হয়।
মে দিবসে নির্বাচিত ১৬ জন শ্রমিককে উপহার হিসাবে দেয়া হয় তাদের স্বপ্নের পোশক। এরপর তাদেরকে একটি বিলাসবহুল গাড়িতে করে শহরের চারপাশে ঘোরানো হয়। তারা সমুদ্রভ্রমণে যান এবং ব্যক্তিগত ইয়টে করে পার্টি করেন। সবশেষে পাঁচতারকা হোটেলে ডিনার করে রাত কাটানোর সুযোগ পেয়েছেন তারা।
একদিনের জন্য কোটিপতি বনে যাওয়া ভারতের শ্রমিক রামদয়াল জানান, তিনি দুবাইয়ে অসংখ্য পাঁচতারকা হোটেলে কাজ করেছেন। তবে, তিনি কখনো কোনো পাঁচতারকা হোটেলে থাকেননি। অসংখ্য বিলাসবহুল গাড়ি দুবাইতে চলাচল করে। ইয়টে চড়ে সমুদ্র যাত্রা শুধু ধনীদের পক্ষেই সম্ভব।
তিনি বলেন, আমি কখনও কল্পনাও করিনি যে, পাঁচতারকা হোটেল রাত্রিযাপনের সুযোগ পাবো। বিলাসবহুল গাড়িতে আর ইয়টে চড়বো। এটি একটি দুর্দান্ত অনুভূতি যা আমি ভাষায় প্রকাশ করতে পারব না। আমাদের কাছে সব কিছু স্বপ্নের মতো। একটি দিনের হলেও নিজেকে কোটিপতি মনে হয়েছে, সেটা কম কিসে।
স্যুট-প্যান্ট পরিহিত ১৬ জন শ্রমিককে ফেরারি, ল্যাম্বরগিনি এবং বেন্টলির মতো বিলাসবহুল গাড়িতে করে দুবাইয়ে ঘোরানো হয়। ঘোরাফেরার পর প্রথমে তাদের দুবাই মেরিনাতে নেয় হয়। সেখানে তারা ইয়টে করে পার্টি করেন এবং কেক কেটে উদযাপন করেন। এরপর তাদের নিয়ে যাওয়া হয় পাঁচ তারকা হোটেলে।
দুবাইয়ের ওই প্রতিষ্ঠানে ১২ বছর ধরে কাজ করা বাংলাদেশি শ্রমিক জাহিদ বলেন, এমন সুযোগ জীবনে খুবই কম মানুষের ভাগ্যে জোটে। এটি আমাদের জন্য স্বপ্ন। অনেক আনন্দের। এমন সুযোগ দেওয়া ওয়াল্ড স্টারের ব্যবস্থাপনা পরিচালক হাসিনা নিশাদ বলেন, এ ধরনের উদ্যোগকে বলা হয় ‘ওয়ান ডে মিলিয়নিয়ার’। কর্মীদের উন্নত জীবনের অভিজ্ঞতা দিতে এমন আয়োজন করা হয়ে থাকে বলেও জানান তিনি।