গত এক অক্টোবর ইসরাইলি ভূখণ্ডজুড়ে ইরানের ‘অপারেশন ট্রু প্রমিজ-টু’ হামলার প্রতিশোধ নিতে শনিবার ভোররাতে ইরানের বেশ কিছু লক্ষ্যবস্তুতে হামলা করে ইসরাইল। এই হামলায় ইরাকের আকাশসীমা ব্যবহার করে ইসরাইল ইরানে হামলা চালিয়েছে বলে অভিযোগ তুলেছে তেহরান।
শনিবার সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম এক্সে দেয়া এক পোস্টে ইরানে জাতিসংঘের মিশন জানায়, ইসরাইলি যুদ্ধবিমান ইরাকের আকাশসীমা ব্যবহার করে প্রায় ৭০ মাইল দূরে ইরান সীমান্তের কাছাকাছি থেকে রাডার ও সামরিক ঘাঁটিগুলোতে আঘাত হানে। একই অভিযোগ করেছেন, ইরানের সশস্ত্র বাহিনীও।
ইরানের সরকারি সংবাদমাধ্যম ইরনা রোববার জানিয়েছে, ইরানের জেনারেল স্টাফের পক্ষ থেকে দেওয়া এক বিবৃতিতে দাবি করা হয়েছে, ইসরাইলের এই আক্রমণের জন্য যুক্তরাষ্ট্রকেও অভিযুক্ত করা হয়েছে। কারণ, ইরাকি আকাশসীমা যুক্তরাষ্ট্রের দখলে রয়েছে।
ইরানের সীমান্ত থেকে ১০০ কিলোমিটারের মধ্যে অবস্থান করছিলো ইসরাইলের যুদ্ধবিমানগুলো। সেখানে ইরাকের মার্কিন নিয়ন্ত্রিত আকাশসীমা ব্যবহার করে ইরানের লক্ষ্যবস্তুতে বেশ কয়েকটি ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপ করা হয়েছে। যুক্তরাষ্ট্র জানিয়েছে, তারা এই হামলার আগে ইসরাইল থেকে খবর পেয়েছিলো, তবে আক্রমণে সরাসরি জড়িত ছিল না।
ইসরাইলি আগ্রাসনের ফলে দুটি সীমান্ত প্রদেশ ও রাজধানী তেহরানের কাছাকাছি কিছু রাডার ইউনিট খুবই 'সামান্য' ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ক্ষতিগ্রস্ত রাডার ইউনিটগুলো ইতোমধ্যে মেরামত করা হয়ে গেছে বলেও দাবি করা হয়। ইরানের সেনাবাহিনী মতে, এই 'অবৈধ' আক্রমণের সময় ইসরাইলের উল্লেখযোগ্য সংখ্যক মিসাইল সনাক্ত করেছে তারা এবং শত্রু বিমানগুলোকে দেশের আকাশসীমায় প্রবেশ করতে দেয়নি।
জেনারেল স্টাফের পক্ষ থেকে আরও বলা হয় এই আগ্রাসনের যথাযথ জবাব দেয়ার অধিকার আছে তাদের। ইসরাইলি হামলায় ইরানের চার সেনা সদস্য নিহত হয়েছে। তবে তা সত্ত্বেও গাজায় যুদ্ধবিরতি ও লেবাননে নিরীহ মানুষকে হত্যা বন্ধের দাবি পুনর্ব্যক্ত করে ইরানের সেনাবাহিনী।
এদিকে, ইরাকের মিলিশিয়া নেতা মুকতাদা আল-সাদর ইরাকের সরকারকে ‘ইসরাইলের এই আকাশসীমা লঙ্ঘনের অভিযোগের বিষয়ে কূটনৈতিক ও রাজনৈতিক পদক্ষেপের মাধ্যমে দ্রুত প্রতিক্রিয়া জানানোর’ আহ্বান জানিয়েছেন। যদিও এই বিষয়ে ইরাক থেকে এখনও কোনও আনুষ্ঠানিক প্রতিক্রিয়া আসেনি।
ইসরাইলি আকাশসীমা ব্যবহারের বিষয়ে প্রশ্ন করা হলে, ইসরাইলি প্রতিরক্ষা বাহিনী সিএনএনকে জানায়, এ বিষয়ে তারা কিছু জানাতে পারছে না। এর আগে এক আইডিএফ মুখপাত্র জানিয়েছিলেন, শনিবার ভোরে ডজনের বেশি ইসরাইলি বিমান ইরানে হামলা চালিয়েছিল। আক্রমণগুলো প্রায় ১,৬০০ কিলোমিটার দূরে আঘাত হানে। তিনি আর কোনও বিস্তারিত তথ্য জানাননি।
তেল আবিব ও তেহরানের নেতারা উভয়ই এই বিষয়ে উত্তেজনা কমানোর চেষ্টা করছেন বলে মনে হচ্ছে। কারণ ইসরাইলি কর্মকর্তারা এই অভিযানের ব্যাপারে খুবই সংযত প্রতিক্রিয়া জানাচ্ছেন।