কারো প্রতি হিংসা বা প্রতিশোধ নয়, সবাইকে ক্ষমা করে দেওয়া হয়েছে। আফগানিস্তানের
রাজধানী কাবুল নিয়ন্ত্রণে নেয়ার পর প্রথম সংবাদ সম্মেলনে এমন কথাই জানিয়েছিলো তালেবান।
এই ঘোষণার ২৪ ঘন্টা পর হতে না হতেই দেশটির প্রথম নারী গভর্নর সালিমা মাজারিকে আটক করার খবর এসেছে। যিনি তালেবান রুখতে হাতে তুলে নিয়েছিলেন অস্ত্র।
সালিমা মাজারিকে আটক ও তার বর্তমান অবস্থান সম্পর্কে তালেবান তরফে কোনো আনুষ্ঠানিক বক্তব্য এখনো আসেনি। তবে, ভারতীয় গণমাধ্যম আটকের খবর নিশ্চিত করেছে।
একটা সময় যখন অনেক আফগান নেতা লেজ গুটিয়ে দেশ ছেড়ে পালিয়ে যাচ্ছিলেন, তখন তালেবানের বিরুদ্ধে নিজের অঞ্চলে প্রতিরোধে অবিচল ছিলেন সালিমা।
তালেবানের হাতে তার জেলা চাহার কিন্টের পাশাপাশি বালখ প্রদেশও আফগানদের
নিয়ন্ত্রণে চলে যায়, তখন সালিমা আত্মসমপর্নের আগ পর্যন্ত লড়াই চালিয়ে যান।
আফগানিস্তানের সব প্রদেশ, জেলা ও শহর অনেকটা বিনা বাধায় দখলে নিলেও, বালখ প্রদেশে কঠিন চ্যালেঞ্জের মুখে পড়তে হয় তালেবান যোদ্ধাদের।
দুই পক্ষের মধ্যে তুমুল লড়াই হলেও শেষ রক্ষা করতে পারেননি প্রদেশটির এই গর্ভনর। তালেবানের বিশাল বাহিনীর সঙ্গে এঁটে উঠতে পারেননি শেষ পর্যন্ত।
বিভিন্ন সংবাদ সূত্র বলছে, তালেবান কাবুলসহ আফগানিস্তানের বেশিরভাগ এলাকা দখলে নেয়ার পর এবং প্রেসিডেন্ট আশরাফ ঘানি পালিয়ে যাবার পরপরই সালিমা হাজারিকে আটক করা হয়।
ঘানি সরকারের সময়ে আফগানিস্তানের যে তিন জন মহিলা গর্ভনর ছিলেন তাদের মধ্যে এক জন হলেন সালিমা। যার নেতৃত্বে বালখ প্রদেশে গড়ে উঠে একটি প্রত্যয়ী প্রশাসন।
আরও পড়ুন: করোনা টিকার ভুয়া সনদপত্র চক্রের ১ জন আটক
তিনি কোনো দিন জঙ্গি গোষ্ঠীর সঙ্গে আপোষ করেননি। উল্টো, জঙ্গিদের বহু আক্রমণ ঠেকিয়ে সরকার নিয়ন্ত্রিত সবচেয়ে মজবুত ঘাঁটি হিসেবে চাহার কিন্টকে প্রতিষ্ঠিত করেছিলেন।
খুব অল্প সময়ের মধ্যে জনপ্রিয়তার শিখরে পৌঁছে যান সালিমা। নারীদের মধ্যে তার প্রভাব ছিলো অনেক। মার্কিন সেনারা চলে যাবার পর আফগান নারীদের নিয়ে উদ্বেগে ছিলেন তিনি।
তিন বছর আগে গভর্নরের দায়িত্ব পেয়ে ৩০ হাজার মানুষের নিরাপত্তার দায়িত্ব নিজের কাঁধে তুলে নেন সালিমা। শুধু দাপ্তরিক কাজ নয়, তালেবান প্রতিরোধে অস্ত্রও তুলে নেন তিনি।
মাজারির জন্ম ইরানে। সোভিয়েত যুদ্ধের সময় যারা আফগানিস্তান থেকে পালিয়েছিল তাদের মধ্যে তার পরিবারও ছিলো। তিনি তেহরান বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতক এবং পরে একই বিশ্ববিদ্যালয়ে কর্মজীবন শুরু করেন এই তেজস্বী আফগান নারী।
একাত্তর/আরবিএস