গাজা উপত্যকায় ত্রাণ সহায়তা নিয়ে আসা ক্ষুধার্ত ও অনাহারী ফিলিস্তিনিদের ওপর দখলদার ইসরাইলের এলোপাতাড়ি গুলিতে অন্তত ৫০ জন নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছেন দুই শতাধিক মানুষ। এতে করে উপত্যকাটিতে নিহতের মোট সংখ্যা ৫৪ হাজার ৪০০ ছাড়িয়ে গেছে।
মধ্যপ্রাচ্যভিত্তিক সংবাদমাধ্যম মিডল ইস্ট মনিটরের উদ্ধৃতি দিয়ে রোববার (২ জুন) এক প্রতিবেদনে সিনহুয়া এ খবর জানায়।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, স্থানীয় সময় রোববার দক্ষিণ গাজার রাফাহ শহরের পশ্চিমে আল-মাওয়াসি এলাকায় ত্রাণ সহায়তা গ্রহণের জন্য জড়ো হওয়া ক্ষুধার্ত ফিলিস্তিনির উপর এলোপাতাড়ি গুলি চালায় দখলদার ইসরাইলি বাহিনী। এসময় অন্তত ৫০ জন নিহত হয়েছেন।
গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় বলছে, গাজার তথাকথিত ত্রাণ কেন্দ্রগুলো ইসরাইলি মৃত্যুফাঁদে পরিণত হয়েছে। গণহত্যা চালাতে ইসরাইলি বাহিনী ত্রাণ বিতরণের নামে নতুন কৌশল কাজে লাগাচ্ছে।
এদিকে জাতিসংঘ জানিয়েছে, গাজায় চরম খাদ্য সংকট এবং দুর্ভিক্ষের আশঙ্কা দেখা দিয়েছে।
গেলো ২ মার্চ থেকে সব ধরনের সহায়তা বন্ধ হয়ে যাওয়ার পর থেকে গাজায় অনাহার, অপুষ্টি ও মানবিক বিপর্যয় ভয়াবহভাবে বেড়েছে। এরইমধ্যে গত সপ্তাহে অনাহারে ২৯ জনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে। দুর্ভিক্ষের ঝুঁকিতে থাকা মানুষের সংখ্যাও বেড়েছে।
জাতিসংঘের মানবিক সংস্থা-ওসিএইচএ বলেছে, গাজা ‘পৃথিবীর সবচেয়ে ক্ষুধার্ত স্থানে’ পরিণত হয়েছে এবং অবরুদ্ধ এই উপত্যকার ২৩ লাখ মানুষ ভয়াবহ খাদ্য সংকটের মুখোমুখি হচ্ছে।
এর আগে ২০২৩ সালের অক্টোবর মাসের ৭ তারিখে ইসরাইলে এই দশকের সবচেয়ে বড় সামরিক অভিযান চালায় গাজার হামাস সরকার। এর পরপরই গাজায় বিমান হামলা ও স্থল হামলা শুরু করে ইসরাইল।
ইসরাইলি আগ্রাসনে এখন পর্যন্ত প্রায় ৫৫ হাজারের বেশি ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন যাদের অধিকাংশই নারী ও শিশু। আহত হয়েছেন এক লাখের বেশি মানুষ। এছাড়াও নিখোঁজ রয়েছেন কয়েক হাজার গাজাবাসী।
এ গণহত্যা বন্ধের আহ্বান জানিয়ে জাতিসংঘ বলছে, ইসরাইলি আক্রমণের ফলে গাজার জনসংখ্যার ৮৫ শতাংশ খাদ্য, বিশুদ্ধ পানি এবং ওষুধের তীব্র সংকটের মধ্যে রয়েছে। অভ্যন্তরীণভাবে বাস্তুচ্যুত হয়েছে কয়েক লাখ মানুষ।