যুক্তরাজ্যে পরিচালিত এক গবেষণায় দেখা গেছে, ধনীদের আয় বেশি, আয়ুও বেশি। অভাব নেই বলে সুখও বেশি। কিন্তু সত্যিই কি তাই? বিশ্বের অন্যতম ধনী দেশ জাপানের একটি জরিপ বলছে উল্টো কথা। বলা হচ্ছে, দেশটির মানুষের মধ্যে সুখ নেই, অর্থের মধ্যে থেকেও অনিশ্চয়তা ভোগেন জাপানিরা।
সম্প্রতি জাপান সরকারের এক জরিপ বলছে, বিশ্বের চতুর্থ বৃহত্তম অর্থনীতির দেশ জাপানের অধিকাংশ মানুষ অর্থনৈতিক অনিশ্চয়তায় ভোগেন এবং ভবিষ্যৎ নিয়ে নেতিবাচক মনোভাব রয়েছে। এর প্রভাবে জাপানে অর্থনৈতিক চাপ অনুভব করা মানুষের হারও দিনকে দিন বাড়ছে।
বাংলাদেশের অন্যতম উন্নয়ন সহযোগী জাপান বিশ্বের অন্যতম শক্তিশালী অর্থনীতির দেশ। তবে অবাক করা খবর হলো, আর্থিকভাবে সচ্ছ্বল হলেও বতর্মানে স্বস্তিতে নেই সেখানাকার মানুষ। দেশটিতে অর্থনৈতিক চাপ অনুভব করা মানুষের হার দিনকে দিন বাড়ছে।
সম্প্রতি এক জরিপে দেখা গেছে, জাপানে ২০২২ সালের তুলনায় ২০২৩ সালে অর্থনৈতিক চাপ অনুভব করা মানুষের সংখ্যা বেড়েছে শূন্য দশমিক সাত শতাংশ পয়েন্ট। দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতির কারণে এই হার বেড়েছে।
এতে দেখা গেছে, রেকর্ড ৬৩ দশমিক ২ শতাংশ মানুষ এমন অবস্থান জানিয়েছেন। গত বছরের নভেম্বর ও ডিসেম্বরে করা জরিপে ১৮ বছর বয়সী বা বেশি বয়সের তিন হাজার মানুষের মধ্যে ৫৭ শতাংশ উত্তর দিয়েছেন। দেখা গেছে ৬৯.৪ শতাংশ মানুষ মনে করছে, মূল্যস্ফীতি জাপানকে পেছনে টানছে।
বড় একটি অংশ দেশের অর্থনীতি নিয়ে নিজেদের উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। ২০২৩ সালে জাপানের মৌলিক ভোক্তা মূল্য ৩ দশমিক ১ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে। যা ছিল গত ৪১ বছরের মধ্যে সর্বোচ্চ। এর বিপরীতে ওই বছর প্রকৃত মজুরি টানা দ্বিতীয় বছরের মতো কমেছে দুই দশমিক পাঁচ শতাংশ।
সরকারি তথ্য বলছে, মজুরি বৃদ্ধি মূল্যস্ফীতির সাথে সামঞ্জস্যতা বজায় রাখতে পারেনি। জরিপের আরও উঠে এসেছে, অংশগ্রহণকারীদের ২৮ দশমিক ৬ শতাংশ শিশু লালনপালনে সমস্যার কথা তুলে ধরেছেন। ২৮ শতাংশ বলেছেন তরুণদের পক্ষে স্বাধীন থাকা খুব কঠিন।
নারীরা সমাজে কোনও সক্রিয় ভূমিকা রাখতে পারছেন নাবলে মনে করেন ২৬ দশমিক শতাংশ। এছাড়া, ২৫ দশমিক ৮ শতাংশ জানিয়েছেন তারা তাদের কর্মক্ষেত্রের সন্তুষ্ট নন। একাধিক উপার্জনকারী থাকা পরিবারগুলো অর্থনৈতিকভাবে হিমশিম খাচ্ছে। এই হার অন্তত ৪৬ শতাংশ।
সরকারি জরিপে ওঠে আসা ইতিবাচক দিকগুলোর মধ্যে রয়েছে, জাপানের চিকিৎসা ও কল্যাণ সেবা সঠিক পথে এগিয়ে যাচ্ছে। অন্তত ২৫ দশমিক শতাংশ মানুষ মনে করছে সরকার এক্ষেত্রে ভাল ভূমিকা রেখেছে।