সিরিয়ার দামেস্কে ইরানি কনস্যুলেটে ইসরাইলি হামলার কথা উল্লেখ করে জাতিসংঘে নিযুক্ত ইরানের রাষ্ট্রদূত আমির সাইদ ইরাভানি বলেছেন, আন্তর্জাতিক শান্তি ও নিরাপত্তা রক্ষায় দায়িত্ব পালনে ব্যর্থ হয়েছে জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদ। তাই ইসরাইলে হামলার মাধ্যমে পাল্টা জবাব দেওয়া ছাড়া তেহরানের হাতে আর কোনো উপায় ছিল না।
রোববার জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদে এসব কথা বলেন ইরাভানি। তিনি আরও বলেন, ইরান উত্তেজনা বা যুদ্ধ চায় না। তবে যেকোনো হামলার জবাব দেবে তারা। খবর আল-জাজিরা’র।
এপ্রিলের শুরুতে সিরিয়ার দামেস্কে ইরানি কনস্যুলেটে ইসরাইলি হামলায় কনস্যুলেট ভবনটি ধুলিস্মাৎ হওয়ার পাশাপাশি বেশ কয়েকজন ইরানি কূটনীতিক ও সেনাসদস্য হতাহত হন।
সে ঘটনার কথা উল্লেখ করে ইরাভানি বলেন, স্বাভাবিকভাবেই আত্মরক্ষার অধিকার তার দেশের রয়েছে। ইসরায়েলে হামলার মধ্য দিয়ে ইরান সেই অধিকারই রক্ষা করেছে।
ইরান থেকে ইসরাইলে রাতভর ৩০০টিরও বেশি ড্রোন ও মিসাইল নিক্ষেপ করা হয়েছে। তেহরান বলেছে, পহেলা এপ্রিল সিরিয়ায় তাদের কনস্যুলেটে হামলার জবাবে এসব ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালানো হয়েছে। তবে লক্ষ্যে পৌঁছানোর আগেই এসব ক্ষেপণাস্ত্রের প্রায় সবগুলো গুলি করে লক্ষ্যভ্রষ্ট করেছে ইসরাইল, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও তাদের মিত্রবাহিনীর বিমান প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা।
গাজায় চলমান যুদ্ধে ইসরাইলে ইরানের এটি প্রথম সরাসরি আক্রমণ।
ইরানের প্রতিশোধমূলক হামলার সময় প্রায় ৯৯ শতাংশ ক্ষেপণাস্ত্র, ড্রোন ও ক্রুজ ক্ষেপণাস্ত্র গুলি করে নামিয়ে দেওয়া হয়েছিল কিংবা বাধা দেওয়া হয়েছিল- যাকে মার্কিন কর্মকর্তারা ইরানের ওপর ইসরাইলি সামরিক শক্তির শ্রেষ্ঠত্ব হিসেবে দেখছেন। হামলার সময় মার্কিন বিমান ও নৌবাহিনী কয়েক ডজন ইরানি ক্ষেপণাস্ত্র গুলি করে ভূপাতিত করে। ৮০টিরও বেশি ড্রোন এবং কমপক্ষে ছয়টি ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র মার্কিন বিমান ও জাহাজ কিংবা বিমান প্রতিরক্ষা বাহিনীর দ্বারা ইরাকের ওপর ভূপাতিত করা হয়েছে।
এদিকে, যুক্তরাষ্ট্র ইসরাইলকে সতর্ক করে দিয়ে বলেছে যে, ইরানের বিরুদ্ধে কোনো প্রতিশোধমূলক হামলায় তারা জড়াবে না। প্রেসিডেন্ট বাইডেন প্রশাসনের সিনিয়র কর্মকর্তারা ইসরাইলকে সাফ জানিয়ে দিয়েছে সে কথা।
দেশটির কর্মকর্তারা বলছেন, জো বাইডেন ইরানের হামলার ব্যাপারে ইসরাইলকে তার প্রতিক্রিয়া সাবধানে বিবেচনা করার আহ্বান জানিয়েছেন।
রোববার সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলার সময় মার্কিন প্রশাসনের একজন সিনিয়র কর্মকর্তা বলেন, ইরানের হামলার ব্যাপারে ইসরাইলি বাহিনী কীভাবে অভূতপূর্ব এ পদক্ষেপের জবাব দেয়, সে ব্যাপারে প্রেসিডেন্ট বাইডেন ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুকে খুব সাবধানে ও কৌশলগতভাবে চিন্তা করতে বলেছেন।