শুদ্ধতা ও পবিত্রতার আবেশে রমজান আসে বিশ্ব মুসলিমে। বছরজুড়ে এই একমাস যেন একটু ভিন্ন রকম, সারাদিনের কাজকর্ম-খাবারসহ সবকিছুতে যেন একটা উৎসব-উত্তেজনা পরিবেশ। পবিত্র রোজার মাসকে আরো আনন্দময় করতে কয়েকদিন আগে থেকেই শুরু হয় ঘর-গৃহস্থালি গোছগাছ ও দরকারি জিনিসপত্র জোগাড়ের ধুম।
সৃষ্টিকর্তার সন্তুষ্টি লাভ ও গুনাহ মাফের আশায় সারাদিন রোজা থাকার পর সন্ধ্যায় করা হয় ইফতার। এতে শরীরে আসে ক্লান্তি। যদিও এখন আবহাওয়া নাতিশীতোষ্ণ, তবে রোজার মাঝামাঝি প্রচণ্ড গরম পড়তে পারে, তাই রোজার আগে সেভাবে প্রস্তুতি নিয়ে রাখলে হয়তো তেমন সমস্যা পোহাতে হবে না।
বেল
গরমে সবচেয়ে উপকারী ফলের মধ্যে একটি হলো বেল। এটি শরীরের অতিরিক্ত প্রদাহ দূর করার পাশাপাশি পাকস্থলী এবং আন্ত্রিক সমস্যার সমাধান করে। সেইসঙ্গে হজমের সমস্যারও সমাধান করে এই ফল। তাই ইফতারে এক গ্লাস বেলের শরবত রাখতে পারেন। এটি তৃষ্ণা মেটানোর পাশাপাশি শরীর ঠান্ডা রাখতেও কাজ করবে।
ইসবগুলের ভুসি
ইসবগুলের শরবত রোজাদারকে শক্তি দেয়। এটি সারা দিন রোজা রাখার কারণে শরীরের নিস্তেজ ভাব দূর করতে সাহায্য করে। সারা দিনের ক্লান্তি দূর করার জন্য স্বাস্থ্যসচেতন রোজাদাররা নিয়মিত ইসবগুলের শরবত খেয়ে থাকেন। এ ছাড়া কোষ্ঠকাঠিন্য, ডায়রিয়া, আমাশয়সহ আরও বিভিন্ন রোগ সারিয়ে তোলে।
মেথি পানি
গরমে মেথি ভেজানো পানি পান করাও খুব উপকারী। কারণ এটি শরীরের অতিরিক্ত প্রদাহ দূর করে প্রশান্তি দেয়। এই মেথি ভেজানো পানি সেহরির সময় উঠে পান করার চেষ্টা করুন। এতে সারাদিন উপকার পাবেন, নিজেকে সতেজ লাগবে।
মঞ্জিষ্ঠা
উপকারী এই ভেষজ দেখতে অনেকটা দারুচিনির মতো। এটি খেলে তা রক্তে শীতলতা প্রদান করতে কাজ করে এবং শরীরকে ঠান্ডা রাখে। তাই ইফতারে শরবতের সঙ্গে মঞ্জিষ্ঠার গুঁড়া মিশিয়ে পান করতে পারেন। এতে প্রশান্তি পাবেন।
ঘরদোর পরিষ্কার করুন
ঘর পরিষ্কার থাকলে মনও ভালো থাকে। একমনে প্রার্থনা করা যায়। তাই রোজা শুরু হওয়ার আগেই বাড়িঘর পরিষ্কার করার চেষ্টা করুন। ধুলো-ময়লা ঝেড়ে চকচকে করে রাখুন। আসবাবপত্র নিয়মিত মুছুন। বিছানার চাদর, বালিশের কভার, পর্দা এবং এ জাতীয় যা আছে সেগুলো আগেভাগেই ধুয়ে রাখতে পারেন। রোজার আগে ঘর পরিষ্কার করা উচিত সবারই। বছরের অন্যান্য মাসের চেয়ে রমজান মাসের গুরুত্ব সবার কাছেই বেশি।
রান্নাঘর গোছগাছ
রান্নাঘরও রোজার আগেই গুছিয়ে নেয়া দরকার। যেসব উপকরণ রমজানে বেশি ব্যবহৃত হবে সেগুলো হাতের কাছে রাখা ভাল। এমনকি তুলে রাখা বাসনপত্র যদি প্রয়োজন হয় সেগুলো আগে থেকে বের করে নির্দিষ্ট স্থানে রাখা যেতে পারে।
রোজার সময় সাহরি এবং ইফতারে সকলে একসাথে বসে খেতে পছন্দ করে। বছরের অন্যান্য সময় পরিবারের সদস্যদের এক টেবিলে পাওয়া না গেলেও রমজান মাসে তা চেষ্টা করেন অনেকে। এতে করে পারিবারিক বন্ধন যেমন দৃঢ় হয় তেমনি ধর্মীয় দৃষ্টিকোণ থেকেও ইতিবাচক প্রভাব ফলে।
রমজান মাসের এই পবিত্রতা ও শুদ্ধতা বিরাজ করুক সারাবছর প্রতিটি মুসলমানের ঘরে-অন্তরে।