আমের বাম্পার উৎপাদন ও রপ্তানিতে এ বছর রেকর্ড গড়তে যাচ্ছে বাংলাদেশ। চলতি মৌসুমে প্রায় ২ লাখ ৫ হাজার ৩৪ হেক্টর জমিতে প্রায় ২৭ লাখ মেট্রিক টন আমের উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা রয়েছে। অন্যদিকে দেশ থেকে ৫ হাজার মেট্রিক টন আম রপ্তানির আশা প্রকাশ করছেন সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা।
যুক্তরাজ্য, ইতালি, ফ্রান্স, কানাডাসহ প্রতি বছর অন্তত ৩৮টি দেশে বাংলাদেশের আম রপ্তানি হয়ে থাকে। তবে, এবারই প্রথম চীনে আম রপ্তানি হতে যাচ্ছে। ইতোমধ্যে দু’দেশের সরকারের মধ্যে আম রপ্তানির বিষয়ে সমঝোতা স্মারক (এমওইউ) স্বাক্ষরিত হয়েছে বলে জানা যায়।
এ প্রসঙ্গে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের ‘রপ্তানিযোগ্য আম উৎপাদন প্রকল্পে’র প্রকল্প পরিচালক মোহাম্মদ আরিফুর রহমান বলেন, আবহাওয়াসহ বিভিন্ন প্রাসঙ্গিক বিষয় ঠিক থাকলে এবার আমের উৎপাদন ভালো হবে। আর প্রায় ৫ হাজার মেট্রিক টন আম বিদেশে রপ্তানির টার্গেট রয়েছে।
চীনে আম রপ্তানি প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ইতোমধ্যে দু’দেশের মধ্যে এমওইউ স্বাক্ষরিত হয়েছে। এছাড়া চীনে যেকোনো খাদ্যপণ্য রপ্তানি করার ক্ষেত্রে দেশটির জেনারেল অ্যাডমিনিস্ট্রেশনে অব কাস্টম অব চায়না (জিএসিসি) থেকে নিবন্ধন নিতে হয়। জিএসিসি গত বছরের জুলাইয়ে আম রপ্তানির নিবন্ধন দিয়েছে। এখন চীনের আমদানিকারক, ব্যবসায়ী ও রাষ্ট্রদূত পর্যায়ে বাংলাদেশ থেকে আম রপ্তানির বিভিন্ন পর্যায় যাচাই-বাছাই করছেন। হট ওয়াটার ট্রিটমেন্ট কেলিব্রেশন বা সঠিকতা, প্যাকেজিংসহ অনেক কিছুই যাচাই করছেন তারা।
তিনি আশা প্রকাশ করে বলেন, সব ঠিক থাকলে চীনে আম রপ্তানি দেশের জন্য একটি নতুন সম্ভাবনার দ্বার উন্মোচন করে দিবে। আগামী জুন থেকেই আশা করা যায় চীনে আম রপ্তানি শুরু হতে পারে।
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা যায়, ২০২০-২১ অর্থবছরে আমের ফলন হয়েছিল ২ লাখ ২ হাজার ৯৬৮ হেক্টর জমিতে ২৩ লাখ ৫০ হাজার ৪৯৯ মেট্রিক টন। ২০২২-২৩ অর্থ বছরে তা বেড়ে হয় ২৭ লাখ ৭ হাজার ৪৫৯ মেট্রিক টন। গত অর্থ বছর অর্থাৎ ২০২৩-২৪ অর্থ বছরে ২ লাখ ৫ হাজার ৩৪ হেক্টর জমিতে আমের চাষ হয়, আর উৎপাদন হয় ২৫ লাখ ৮ হাজার ৯৭৩ মেট্রিক টন আম।
বর্তমানে আম উৎপাদনে বাংলাদেশের অবস্থান বিশ্বে সপ্তম। বাংলাদেশের সুস্বাদু আম বিশ্বের বিভিন্ন দেশে রপ্তানি হয়। প্রধানত ভারত, নেপাল, শ্রীলঙ্কা, ফিলিপাইন, সৌদি আরব, কুয়েত, কাতার, যুক্তরাজ্য, ইতালি, জার্মানি, ফ্রান্স, সুইডেন এবং কানাডার মতো দেশগুলোতে বাংলাদেশের আম রপ্তানি করা হয়।