যুদ্ধাপরাধের দায়ে ফাঁসির দণ্ডপ্রাপ্ত আসামী আবুল কালাম আজাদ ওরফে বাচ্চু রাজাকারকে পালিয়ে যেতে সহায়তা করেছিলেন সাবেক জামায়াত নেতা আবু ইউসুফ। আদালতের নির্দেশে তার সেই মামলা এখন স্থগিত। জামিনে মুক্ত হয়ে একটি ইসলামি এনজিও চালাচ্ছেন ইউসুফ।
মানবতা বিরোধী অপরাধের দায়ে ২০১৩ সালে আবুল কালাম আজাদ ওরফে বাচ্চু রাজাকারকে ফাঁসির দণ্ড দেয় ট্রাইব্যুনাল। কিন্তু রায় ঘোষণার আগেই পালিয়ে পাকিস্তানে চলে যান এই অপরাধী।
অনুসন্ধানে জানা গেছে ২০১২ সালের ৩০ মার্চ একটি মাইক্রোবাসে করে পালিয়ে আগারগাঁওয়ের একটি বাসায় ওঠেন আবুল কালাম আজাদ। এরপর হিলি সীমান্ত দিয়ে পালিয়ে প্রথমে ভারত তারপর পাকিস্তানে যান মানবতাবিরোধী এই অপরাধী।
আগারগাওয়ের বাসায় আশ্রয় দেয়া থেকে দেশ ছাড়া পর্যন্ত; তাকে সব রকম সহায়তা দেন সাবেক জামায়াত নেতা ড. আবু ইউসুফ। যিনি ছিলেন জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন সাবেক শিক্ষক।
২০১২ সালের ২ মে দুর্নীতি, জঙ্গি তৎপরতা ও বাচ্চু রাজাকারকে পালিয়ে যেতে সহযোগিতার অভিযোগ এনেছিলো র্যাব। পরে বাচ্চু রাজাকারকে পাকিস্তানে পালিয়ে যাওয়ার সাথে জড়িত থাকার অভিযোগে গ্রেফতার হন ইউসুফ।
সেই ঘটনার ১১ বছর পর এখন একটি এনজিও পরিচালনা করছেন আবু ইউসুফ। শ্যামলীতে খুলেছেন এ্যাসোসিয়শেন ফর মাস এডভাসমেন্ট নেটওয়ার্ক (আমান) নামের একটি এনজিও। বাচ্চু রাজাকারকে পালিয়ে যেতে সহায়তা করার কথা স্বীকার করলেন অবলিলায়। সেই সাথে তার বিরুদ্ধে দায়ের করা মামলাটি আদালতের নির্দেশে স্থগিত আছে বলেও জানান তিনি।
সারাদেশে মসজিদ মাদরাসা নির্মাণ ও রোহিঙ্গাদের আরবী শেখানোর কথা বলে আমান নামের এই এনজিওটি বিদেশী দাতাদের কাছ বিপুল অর্থ পেয়ে আসছে বলে জানা গেছে। কি করে সবার চোখ ফাকি দিয়ে এই এনজিও পরিচালনা করছেন, এই প্রশ্নের উত্তরে এক সময় ছাত্র শিবির এবং জামায়াতের সাবেক এই নেতা জানান ১৯৯৫ সালে বিএনপি জামায়াতের সময় এনজিওটি নিবন্ধন পায়।
মৃত্যূদণ্ড প্রাপ্ত আসামীকে পালানোর সহযোগীতাকারী ও জঙ্গিবাদের দায়ে অভিযুক্ত একজন ব্যাক্তি কীভাবে এমন রহস্যজনক একটি এনজিও পরিচালনা করছেন তা জেনে বিস্মিত ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটির সভাপতি শাহরিয়ার কবির।
এদিকে র্যাবের লিগ্যাল এন্ড মিডিয়া উইং-এর পরিচালক খন্দকার আল মঈন জানাচ্ছেন আসামী গ্রেফতারে পর জামিন পাবার বিষয়টি আদালতের এখতিয়ার। তবে দেশের বেশ কিছু এনজিওর জঙ্গি অর্থায়নে জড়িত থাকার তথ্য জেনেছে র্যাব।
বিশ্লেষকরা মনে করছেন সন্দেহজনক তৎপরতায় জড়িত এমন লোকদের নজরদারিতে রাখা প্রয়োজন।