বগুড়ায় ৮ বছর বয়সী ছোট ভাইকে হত্যার ঘটনায় ১২ বছর বয়সী বড় ভাইয়ের কাছ থেকে জোর করে স্বীকারোক্তি আদায়কে তদন্ত কর্মকর্তার মারাত্মক অপরাধ বলে মন্তব্য করেছেন হাইকোর্ট।
এ বিষয়ে তদন্ত কর্মকর্তার নিঃশর্ত ক্ষমার আবেদনে অসন্তোষ জানিয়ে পরবর্তী শুনানির জন্য আগামী ৬ সেপ্টেম্বর দিন ধার্য্য করেছে আদালত।
রোববার (২২ আগস্ট) বিচারপতি জাহাঙ্গীর হোসেন ও বিচারপতি মো. আতাউর রহমানের হাইকোর্ট বেঞ্চ এ আদেশ দেন।
‘দুই পুলিশের ভুলে ১২ বছরের শিশুর ঘাড়ে ছোট ভাই হত্যার দায়’ শিরোনামে একটি সংবাদ প্রকাশ হয় বিভিন্ন গনমাধ্যমে। ওই সংবাদ সংযুক্ত করে হাইকোর্টে আবেদন করেন মোহাম্মদ শিশির মনির।
এই আবেদনের শুনানি নিয়ে আদালত মামলার তদন্ত কর্মকর্তাদের তলব করেন। আদালতের আদেশে রোববার সকালে তদন্ত কর্মকর্তা (পিবিআই) মুনসুর আলী এবং সাবেক তদন্ত কর্মকর্তা নয়ন কুমার আদালতে হাজির হন। এ সময় তদন্ত কর্মকর্তা নয়ন কুমার আদালতের কাছে নিঃশর্ত ক্ষমা প্রার্থনা করেন।
শুনানিতে রাষ্ট্রপক্ষরে ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল সারওয়ার হোসেন বাপ্পী বলেন, পুনরায় তদন্ত চেয়ে রাষ্ট্রপক্ষ আবেদন করেছে। যেটা সহজে দেখা যায় না। সাধারণত দেখা যায় পিটিশনাররাই পুনরায় তদন্তের আবেদন করেন। কিন্তু এ মামলায় দেখা যাচ্ছে রাষ্ট্রপক্ষই আবেদন করেছে। তদন্ত কর্মকর্তা নিঃশর্ত ক্ষমা চেয়েছেন। এখন তার আবেদনে আপনারা যদি সন্তুষ্ট হন তাহলে তাকে ক্ষমা করে দিতে পারেন।
এ সময় আদালত বলেন, উনি যদি ভুল করেন তাহলে তাকে কি আমরা ছেড়ে দেব?
আদালত আরও বলেন, এটা মারাত্মক অপরাধ। তিনি এটা উদ্দেশ্যপ্রণোদিত হয়ে করেছেন। ১২ বছরের একটি শিশুর স্বীকারোক্তি দিয়ে বলেছে ‘আমি আমার ভাইকে মেরে ফেলেছি।’ এটা কি সম্ভব? ১২ বছরের একটি ছেলে ৮ বছরের একটি ছেলেকে মেরে ফেলবে?
পরে আদালত এ বিষয়ে শুনানির জন্য আগামী ৬ সেপ্টেম্বর দিন ঠিক করে দেন। সেদিন সাবেক তদন্ত কর্মকর্তা নয়ন কুমারকে আদালতে হাজির থাকতে বলা হয়েছে।
উল্লেখ্য, ২০১৫ সাল থেকে ছোট ভাইকে হত্যার দায় নিয়ে ঘুরতে হচ্ছে ১২ বছর বয়সী বড় ভাইকে। ২০১৫ সালের ২৫ আগস্ট বগুড়ার কাটাখালি গ্রামের একটি পাটক্ষেত থেকে উদ্ধার করা হয় মহিদুল ইসলামের ছেলে সোহাগের মরদেহ। এরপর জিজ্ঞাসাবাদের কথা বলে পুলিশ বাড়ি থেকে ধরে নিয়ে যায় বড় ভাই সৌরভকে। জোর করে হত্যার স্বীকারোক্তিও নেওয়া হয়।
একাত্তর/এআর