বগুড়ায় স্বেচ্ছাসেবক দলের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর অনুষ্ঠানে সভাপতির বক্তব্যর সময় ধাক্কা দেওয়া নিয়ে যুবদলের এক নেতাকে ছুরিকাঘাতের ঘটনা ঘটেছে। এ সময় মারধরের শিকার হয়েছেন আরও এক নেতা। হামলার পরপরই দলের নেতারা পাল্টাপাল্টি অভিযোগ করেছেন।
শুক্রবার (১৯ আগস্ট) সন্ধ্যা সোয়া ছয়টার দিকে শহরের নবাববাড়ী রোডের জেলা বিএনপি কার্যালয়ের সামনে এ ঘটনা ঘটে।
ছুরিকাঘাতে আহত নেতার নাম মেফতা আল রশিদ মিল্টন। তিনি শহর যুবদলের সদস্য এবং কাটনারপাড়ার বাসিন্দা। অপর আহত নেতার নাম রবিউল ইসলাম। তিনি শহর স্বেচ্ছাসেবক দলের সিনিয়র যুগ্ম আহবায়ক।
বিএনপির নেতা-কর্মীদের সূত্রে জানা যায়, শুক্রবার স্বেচ্ছাসেবক দলের ৪২তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী ছিল। এ উপলক্ষে বিকেলে দলীয় কর্মসূচিতে স্বেচ্ছাসেবক দলসহ বিএনপির অন্য সংগঠনের নেতাকর্মীরা উপস্থিত হয়। বিকেলে প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে একটি র্যালি করে তারা। এরপর আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়।
সভায় সমাপনী বক্তব্য শুরু করেন স্বেচ্ছাসেবক দলের জেলা আহবায়ক মাজেদুর রহমান জুয়েল। তার বক্তব্য চলাকালে সভা থেকে হট্টগোল শুরু হয়। এর মধ্যে মিল্টন ছুরিকাঘাতে আহত হন। পরে তাকে উদ্ধার করে পাশের ডায়াবেটিক হাসপাতালে নিয়ে যায় অন্য নেতা-কর্মীরা। সেখানে প্রাথমিক চিকিৎসা দেয়া হয় মিল্টনকে।
এ ঘটনায় আহত রবিউল ইসলাম রতন বলেন, স্বেচ্ছাসেবক দলের আহবায়ক মাজেদুর রহমান জুয়েল বক্তব্য দিচ্ছিলেন। এর মধ্যে সভা থেকে কেউ একজন তাকে কথা সংক্ষেপ করতে বলেন। ওই সময় তাকে ধাক্কা দেয়া হয়েছে বলে জুয়েল প্রতিবাদ করে ওঠেন। এই নিয়েই শুরু।
রবিউল ইসলাম আরও বলেন, এক পর্যায়ে সেখানে ধাক্কাধাক্কি শুরু হয়। পরে মারধর হলে আমরা এগিয়ে যাই। এ সময় যুবদল নেতা মিল্টনের পায়ে ছুরি দিয়ে আঘাত করে হামলাকারীরা। আমিও দু’পক্ষের হট্টগোল থামাতে গেলে আঘাত পাই।
মেফতা আল রশিদ মিল্টন বলেন, ওখানে জুয়েল ভাই ছিল। তার সমর্থিত কিছু ছেলে যুবদলের এক কর্মীকে মারধর করছিলেন। আমি তাদের বাঁধা দিই। কিন্তু তারা আমাকে ছুরিকাঘাত করে।
জানতে চাইলে জেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের আহবায়ক মাজেদুর রহমান জুয়েল বলেন, আমি অসুস্থ অবস্থায় অনুষ্ঠানে যোগদান করি। অনুষ্ঠানে বক্তব্য দিচ্ছিলাম। তখন কোনো কারণ ছাড়াই যুগ্ম আহবায়ক সরকার মুকুল আমার পাঁজরে কনুই দিয়ে গুতো দেন। এ ঘটনায় আমি অবাক হয়ে যাই। জানতে চাইলাম তিনি কেন এমন করলেন? এরপর হট্টগোল হলে আমি ঘটনাস্থল ত্যাগ করি।
ছুরিকাঘাতের বিষয়ে আহবায়ক বলেন, আমি তো এমন কিছু জানি না। ঘটনাস্থল থেকে চলে আসার পর এ রকম কিছু হতে পারে।
তবে তার এমন অভিযোগ নাকচ করে জেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের যুগ্ম আহবায়ক সরকার মুকুল বলেন, এ ঝামেলা আহবায়কের পূর্ব পরিকল্পিত। দীর্ঘদিন ধরেই দলে এই ঝামেলা হচ্ছে। আজকে আমাদের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীতে বর্ণাঢ্য র্যালি হয়েছে। আনন্দের দিন। এমন দিনেই আহবায়কের লোকজন অস্ত্র নিয়ে অনুষ্ঠানে কেন আসবে।
আরও পড়ুন: পররাষ্ট্রমন্ত্র্রীর বক্তব্যের ব্যাখ্যা চান মির্জা ফখরুল
ধাক্কা দেয়ার প্রসঙ্গে সরকার মুকুলের বলেন, এমন অভিযোগ পুরোপুরি উদ্দেশ্যমূলক। তিনি অতীতেও এ ধরনের কার্যক্রম করেছেন। জেলা আহবায়ক দলের ক্ষতির জন্য এসব করছেন। আজকে প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীতে যুবদলের এক ভাই ছুরিকাহত হলো। এ ঘটনায় দলের ঊর্ধ্বতন নেতাদের জানানো হয়েছে। আমরা এর সুবিচার চাই।
এ বিষয়ে সদর ফাঁড়ির ইনচার্জ পরিদর্শক শাহিনুজ্জামান বলেন, খবর পেয়ে আমরা ঘটনাস্থলে যাই। হামলায় জড়িতদের খোঁজ চলছে।
একাত্তর/এসি