দেশের সবকিছুর দাম ঊর্ধ্বমুখী হলেও জমির দাম কি কমছে? পাবনায় নাকি এক বিঘা জমির দাম একশ’ টাকা। কোথাও আবার এক শতাংশ জমি মিলছে ৫৬৭ টাকায়। অবিশ্বাস্য হলেও পাবনার দুই প্রার্থীর হলফনামায় উঠে এসেছে এমন তথ্য।
পাবনা-৩ আসনের বর্তমান সংসদ সদস্য মকবুল হোসেনের হলফ নামায় এমন তথ্যই উঠে এসেছে। তিনি দুই হাজার টাকায় ২০ বিঘা জমি কিনেছেন বলে হলফ নামায় উল্লেখ করেছেন।
অপরদিকে পাবনা-৪ আসনের স্বতন্ত্র প্রার্থী মো. পাঞ্জাব আলী বিশ্বাস ৬৭ শতাংশ জমি কিনেছেন ৩৮ হাজার টাকায়। সেই হিসেবে শতাংশ প্রতি জমির দাম পড়েছে ৫৬৭ টাকা। তার হলফ নামার তথ্য সেটাই বলছে। কিন্তু পাবনায় হঠাৎ জমির দাম এতো দর পতনের কারণটা কী?
পাবনা-৩ আসনের সংসদ সদস্য মকবুল হোসেন বলেন, জমিটা কেনা ৬০-৬৫ বছর আগে। চলনবিলে যখন পানির ভেতরে ছিলো তখন কেনা হয়েছিলো। কেনার সময় এই জমিতে কোনো ফসল হতো না।
অন্যদিকে পাবনা-৪ আসনের স্বতন্ত্র প্রার্থী পাঞ্জাব আলী বিশ্বাস বলছেন, যে পরিমাণ অর্থ দিয়ে কেনা হয়েছে- তিনি তাই লিখেছেন। বানিয়ে কিছু করেননি।
এদিকে জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান জিএম কাদেরের সম্পদ গত পাঁচ বছরে বেড়েছে তিন গুণেরও বেশি। দুই গুণের বেশি সম্পদ বেড়েছে তার স্ত্রীর শেরীফা কাদেরের। ব্যাংকে নগদ টাকা, বাড়ি ভাড়া ও শেয়ার বেড়েছে জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান গোলাম মোহাম্মদ কাদের দম্পতির।
২০১৮ সালে কাদেরের নগদ টাকা ছিলো ১৪ লাখ ৪৭ হাজার ৯৭৩ টাকা। বর্তমানে তা ৪৯ লাখ ৮৮ হাজার ২৫৩ টাকা। স্ত্রী শেরীফা কাদেরের সম্পদ ছিল ২৭ লাখ ৬৪ হাজার ৭০১ টাকা। পাঁচ বছরে বেড়ে তা হয়েছে ৫৯ লাখ ৫৯ হাজার ৫৬৩ টাকা। ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানে পাঁচ বছর আগে জমা ছিল ১৩ লাখ ২ হাজার ৪৩৫ টাকা। এবার হয়েছে ৩৫ লাখ ৯৫ হাজার ৭৯৩ টাকা। স্ত্রীর ছিলা ৪ লাখ ৭ হাজার ২৫৮ টাকা। তা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ২৭ লাখ ৯ হাজার ৩৫৯ টাকা।
হলফ নামার তথ্যমতে, রংপুর-১ আসনের সংসদ সদস্য জাতীয় পার্টির বহিষ্কৃত নেতা মসিউর রহমান রাঙ্গার খামার কেন্দ্রিক আয় বেড়েছে ২৫ গুণ। নগদ অর্থের পরিমাণ বেড়েছে ৮ গুণ।
কুমিল্লা-৬ আসনে সংসদ সদস্য আ ক ম বাহাউদ্দীন বাহারের ব্যবসা বেড়েছে আড়াইগুণ। ঠিকাদারি ও ব্যবসার মূলধন বেড়েছে প্রায় ১৮ গুণ। ২০১৮ সালের দেয়া হলফ নামায় এইখাতে তিনি মূলধন দেখিয়েছেন ৮০ লাখ টাকা। এবার হলফনামায় তা হয়েছে ১৮ কোটি ১০ লাখ ৬৫ হাজার টাকা। বেড়েছে ঋণের পরিমাণও। ২০১৮ সালে ঋণ ছিলো প্রায় সাত কোটি ৩০ লাখ টাকা। বর্তমানে তা বেড়েছে হয়েছে প্রায় সাড়ে একুশ কোটি টাকা।
দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে পাবনার পাঁচটি সংসদীয় আসনের জন্য মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছিলেন ৩৭ জন। এর মধ্যে ৩টি বাতিল ও ৩৪টি বৈধ ঘোষণা দিয়েছেন জেলা রিটার্নিং কর্মকর্তা ও জেলা প্রশাসক।
পাবনা-৩ আসনের বৈধ প্রার্থীরা হলেন- পাবনা-৩ (চাটমোহর-ভাঙ্গুড়া ও ফরিদপুর) আসনে মকবুল হোসেন (আওয়ামী লীগ), আব্দুল হামিদ মাস্টার (স্বতন্ত্র), মীর নাদিম মোহাম্মদ ডাবলু (জাতীয় পার্টি), মাহবুবুর রহমান জয় চৌধুরী (বাংলাদেশ সুপ্রিম পার্টি-বিএসপি), বেলাল মোল্লা (ন্যাশনাল পিপলস পার্টি), খায়রুল আলম (গণতন্ত্রী পার্টি), কামরুজ্জামান মো. হাদী (জাকের পার্টি) ও আবুল বাশার শেখ (জাসদ)।
পাবনা-৪ (ঈশ্বরদী-আটঘরিয়া) আসনে গালিবুর রহমান শরীফ (আওয়ামী লীগ), বীর মুক্তিযোদ্ধা মো. আব্দুল খালেক (জাসদ), রেজাউল করিম (জাতীয় পার্টি), মো. পাঞ্জাব আলী বিশ্বাস (স্বতন্ত্র) ও মো. মনছুর রহমানের মনোনয়নপত্র বৈধ ঘোষিত হয়েছে।