দলের হুঁশিয়ারি উপেক্ষা করে উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে মাঠে আছেন মন্ত্রী-এমপিদের ১৩ জন স্বজন। আদেশ অমান্যকারীদের বিরুদ্ধে কী ব্যবস্থা নেয়া হবে এখন তা নিয়ে চলছে হিসেব-নিকেশ।
কেন্দ্রীয় নেতারা বলছেন, দলীয় পদ হারানোসহ নানা পর্যায়ের শাস্তির কথা ভাবা হচ্ছে। সেই সাথে পরবর্তী প্রজন্মের রাজনৈতিক ভবিষ্যতের কথা ভেবে, এখনও কেন্দ্রের নির্দেশনা মেনে নেয়ার আহ্বান জানাচ্ছেন তারা।
বলা হচ্ছে, দলের সাধারণ সম্পাদকের হুঁশিয়ারির পরেও নিজ নিজ এলাকার ক্ষমতা পরিবারের মধ্যে কুক্ষিগত রাখতেই স্থানীয় সরকারের পদগুলোও আত্মীয়-স্বজনদের মাধ্যমে নিজেদের হাতেই রাখতে চান মন্ত্রী-এমপিরা। এতে বঞ্চিত হচ্ছেন তৃণমূলের ত্যাগী নেতারা।
দলীয় সভাপতিরও লক্ষ্য তৃণমূলের নেতারাই স্থানীয় সরকারগুলোর নির্বাচনে জয়ী হয়ে নেতৃত্বে উঠে আসুক। এ কারণেই উপজেলা নির্বাচনে কঠোর অবস্থানে দলীয় সভানেত্রী।
আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক এসএম কামাল হোসেন বলেন, জননেত্রী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশনা মেনে আমাদের সকলের স্বজনদের প্রার্থীতা প্রত্যাহার করা উচিত।
দলের সাংগঠনিক সম্পাদক সুজিত নন্দী জানান, দলের ত্যাগী ও পরীক্ষিত নেতাদের মূল্যায়িত করার জন্যই এ ধরনের নির্দেশনা।
নির্দেশ অমান্য করা এমপি মন্ত্রীদের দলীয় পদ থেকে অব্যাহতিসহ বিভিন্ন কমিটি থেকে তাদের বাদ দেওয়াসহ নানা শাস্তির কথা বলা হচ্ছে। এমনকি তাদের পরবর্তী প্রজন্মের রাজনৈতিক ভবিষ্যৎ হুমকির মুখে পড়তে পারে বলে মনে করেন নেতারা।
আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক আবু সাঈদ আল মাহমুদ স্বপন এ বিষয়ে বলেন, আমি এখনও অনুরোধ করবো- তাদের যেনো বোধধয় হয়। তাদের নিজেদের রাজনৈতিক স্বার্থে এমনকি তাদের সন্তানদের ভবিষ্যৎ রাজনৈতিক স্বার্থে এবং পরিবারের অন্যান্য সদস্যদের ভবিষ্যৎ রাজনৈতিক স্বার্থে তারা সংবাদ সম্মেলন করে নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়াক।
আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মির্জা আজম বলেন, এই মুহূর্তে কোনো ব্যবস্থা নেয়া হলো কী হলো না, এটা বিষয় না। যাদের স্বজনরা এখনো নির্বাচনী মাঠে আছেন, তাদের আজকের যে কর্মকাণ্ড এর জন্য পরবর্তীতে যে কোনো রাজনৈতিক সম্মেলন হোক, নির্বাচন হোক তখন কিন্তু এটাই প্রতিবন্ধকতা হিসেবে সারাজীবন কাজ করবে।
চার ধাপে ষষ্ঠ উপজেলা পরিষদ নির্বাচন করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে নির্বাচন কমিশন, যার প্রথম ধাপে ১৫২ উপজেলায় ভোট হবে আগামী ৮ মে।
প্রার্থিতা প্রত্যাহারের সময় এরিমধ্যে শেষ হয়ে গেলেও এখনও নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়ানোর সুযোগ আছে বলেও জানিয়ে দিয়েছেন কেন্দ্রীয় নেতারা।
তারা বলছেন, হাইকমান্ডের সিদ্ধান্ত বাস্তবায়ন করা না গেলে তৃণমূলের রাজনীতি সংকট যেমন বাড়বে তেমনি প্রথম ধাপের নির্বাচনেই দলীয় শৃঙ্খলাও প্রতিষ্ঠা করা যাবে না। এতে নির্বাচনের বাকি ধাপগুলোও সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ হবে না।
২৩ ও ২৯ মে দ্বিতীয় ও তৃতীয় ধাপ এবং ৫ জুন শেষ ধাপের ভোট হবে।
এসব উপজেলায় চেয়ারম্যান, সাধারণ ভাইস চেয়ারম্যান ও সংরক্ষিত ভাইস চেয়ারম্যান পদে হবে সাধারণ নির্বাচন।
প্রথম ধাপের ১৫২ উপজেলার মধ্যে ২২ উপজেলায় ভোট হবে ইলেক্ট্রনিক ভোটিং মেশিনে, বাকিগুলোতে ব্যালট পেপারে ভোটগ্রহণ হবে। সকাল ৮টা থেকে বিকাল ৪টা পর্যন্ত একটানা এ ভোট চলবে।
উপজেলার ভোটে রিটার্নিং কর্মকর্তা হবেন জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা এবং জ্যেষ্ঠ জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা। উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তারা হবেন সহকারী রিটার্নিং কর্মকর্তা।