ভারতীয় আগ্রাসন ও সাম্রাজ্যবাদী শক্তি বাংলাদেশকে নতুন যুদ্ধক্ষেত্র বানানোর পাঁয়তারা করছে বলে অভিযোগ করেছেন হেফাজতে ইসলামের আমির আল্লামা শাহ মুহিব্বুল্লাহ বাবুনগরী। তিনি বলেন, এজন্য ইস্পাত কঠিন ঐক্য দরকার।
শনিবার (৩ মে) রাজধানীর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে চার দফা দাবিতে আয়োজিত মহাসমাবেশে আমিরের পক্ষে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন সংগঠনের যুগ্ম সংগঠনের যুগ্ম মহাসচিব আজিজুল হক ইসলামাদী।
আর অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান ড. মুহাম্মদ ইউনূসকে উদ্দেশ্য করে দলটির নেতারা বলেছেন, শেখ হাসিনার মতো ভুল করবেন না। ৯০ শতাংশ মুসলমানের দেশে কোরআন-সুন্নাহবিরোধী কোনো নীতি বাস্তবায়ন করার সাহস করবেন না। অবিলম্বে প্রতিবেদনসহ নারী বিষয়ক সংস্কার কমিশন বাতিল ঘোষণা করুন। শাপলা চত্বরে সংঘটিত গণহত্যার বিচার নিশ্চিত করুন।
সকাল ৯টায় হেফাজতে ইসলামের শীর্ষ পর্যায়ের নেতারা মহাসমাবেশ স্থলে পৌঁছান। শীর্ষ নেতারাসহ দেশ বরেণ্য উলামায়ে কেরাম মহাসমাবেশে বক্তব্য রাখেন।
বক্তারা বলেন, হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশের স্বাধীনতা সার্বভৌমত্ব রক্ষায় জীবন দিতে প্রস্তুত। কিন্তু কোরআন সুন্নাহ বিরোধী কোনো কর্মকাণ্ড বরদাস্ত করবে না।
হেফাজতের চার দফা দাবি:
১. নারী বিষয়ক সংস্কার কমিশন ও এর প্রতিবেদন বাতিল করা।
২. সংবিধানে বহুত্বদের পরিবর্তে আল্লাহর ওপর পূর্ণ আস্থা ও বিশ্বাস পুনর্বহাল করতে হবে।
৩. হেফাজতের নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে দায়ের হওয়া সব মামলা প্রত্যাহার ও শাপলা চত্বরের কথিত হত্যাকাণ্ডসহ সব গণহত্যার বিচার করতে হবে।
৪. ফিলিস্তিন ও ভারতে ‘মুসলিম গণহত্যা ও নিপীড়ন বন্ধে’ সরকারকে ভূমিকা রাখতে হবে।
নারী বিষয়ক সংস্কার কমিশন সম্পর্কে সমালোচনা করে হেফাজতে ইসলাম নেতারা বলেন, সরকার নারী বিষয়ক যে সংস্কার কমিশন গঠন করেছেন এর সদস্যরা নারী না পুরুষ তা বোঝা যাচ্ছে না। কিন্তু তারা যেসব প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে তা কোরআন সুন্নাহ বিরোধী। তাদের সংস্কার প্রতিবেদন যদি পাস করা হয় তাহলে জীবন দিয়ে রুখে দেওয়া হবে। মার্চ টু ঢাকার কর্মসূচি ঘোষণা করতে বাধ্য হবে হেফাজতে ইসলাম।
মুফতি ফখরুল ইসলাম বলেন, নির্যাতিত হলাম, জেল খাটলাম অথচ আমাদের মামলা প্রত্যাহার করা হয়নি। নারী বিষয়ক সংস্কার কমিশন যে প্রতিবেদন দিয়েছে তা ১৮ কোটি মুসলমানের বিরুদ্ধে। তা অবিলম্বে বাতিল করতে হবে।
মহাসমাবেশে হেফাজতে ইসলামের যুগ্ম মহাসচিব মাওলানা মামুনুল হক জানান, ফ্যাসিবাদী শক্তি পুর্নবাসন করার চেষ্টা করছে, তাদের বিরুদ্ধে লড়াই হবে, ফ্যাসিবাদের পুর্নবাসন মেনে নেওয়া হবে না।
মহাসমাবেশে বক্তব্য রাখেন গুরুত্বপূর্ণ নেতা ও অতিথিরা। এসময় তারা ইসলমবিদ্বেষী কোনো কিছু মেনে নেওয়া হবে না বলে ঘোষণা দেন।
মহাসমাবেশ থেকে চার দফা দাবিতে ২৩ মে দেশব্যাপী বিক্ষোভের ঘোষণা দেন হেফাজত ইসলামের মহাসচিব।