ভারতের বিপক্ষে এবার আর সেট পিস থেকে হতাশ হওয়া নয়, আছে নাম্বার নাইন, আছে প্ল্যানমাফিক নেয়া প্রস্তুতি। মালদ্বীপের ম্যাচে ভারতের ছুড়ে দেওয়া প্রতিটা চ্যালেঞ্জের জন্য নিজেরা প্রস্তুত বলে জানিয়েছেন ফুটবলাররা। পাশাপাশি হামজার আন্তরিকতায় টিমের সাথে বোঝাপড়া হয়েছে আরও মজবুত।
হামজা ইংলিশ প্রিমিয়ার লিগ স্টার, জিতেছেন এফএ কাপ শিরোপা, থাকেন ইংল্যান্ডে। কিন্তু ইগো জিরো। এক সপ্তাহও হয়নি ইব্রাহিম, তপুদের সাথে ভাব জমিয়ে ফেলেছেন, হয়ে উঠেছেন তাদের একজন। আর এর মধ্য দিয়ে হামজার টিমে খাপ খাওয়া নিয়ে যে দুশ্চিন্তা ছিলো, ভারত ম্যাচের আগে সেটাও একদম উধাও।
তবে ম্যাচের রেজাল্ট কি আর তারকা দেখে হয়? ছেত্রি, আপুইয়াদের সাথে টক্কর, মালদ্বীপের বিপক্ষে তাদের তিন গোলের ধরণ বাংলাদেশের টেবিলে অ্যানাইলাইসিসের অনেক কিছুই এনে দিয়েছে।
মালদ্বীপের ম্যাচে ভারতের তিন গোলের দুইটাই ছিল কর্নার থেকে, তৃতীয়টাও অনেকটা ফ্রি কিক আদলেই এসেছে। অন্যদিকে বাংলাদেশ, সেট পিসে গোল দেয়া, আর গোল না খাওয়াকে এখনও নিজেদের স্ট্রং জোন বানাতে পারেনি। ২০১৯এর সল্টলেকে জেতা ম্যাচ সেটাও সেট পিস থেকে আদিল খানের গোলে হাতছাড়া হয়।
লিস্টন, ছেত্রীদের মতো ফরওয়ার্ডরা তো আছেনই, ডিফেন্স থেকে উঠে রাহুল ভেকিও হেডে একের পর এক গোল করে যাচ্ছেন। বাংলাদেশেরও ডিফেন্সে তপু বর্মণ আছেন, তিনি কতটা রেডি?
শিলংয়ের জওহরলাল স্টেডিয়ামের দুই নম্বর মাঠে অনুশীলনের পর এই ডিফেন্ডার বলেন, ভারতের বিপক্ষে অনেক ম্যাচই খেলেছি। তার মধ্যে এবারের ম্যাচটি অন্যরকম। দেশের মানুষ ইতিবাচক। সবাই আমাদের দিকে তাকিয়ে আছে। আমাদের জন্য সবচেয়ে বড় বিষয় হলো গোল না খাওয়ার চেষ্টা করা। আমার সাথে যে তিনজন রক্ষণে থাকবে তাদের নিয়ে একসাথে যেন ভালো একটা লড়াই করতে পারি।
ভারতকে শক্তিশালী প্রতিপক্ষ হিসেবে উল্লেখ করে তপু বর্মন বলেছেন, ভারত সবসময়ই ভালো দল। দলের সব খেলোয়াড় আইএসএল খেলে এসেছে। ভারত দলে ইনজুরিতে কয়েকজন ছিটকে গেছেন। তাদের রিপ্লেসমেন্ট হিসেবে যারা এসেছেন তারাও ভালো। এক কথায় বলবো তারা ভালো দল। তারা যেভাবে প্রতিযোগিতা করে আসছে সেটাকে আমাদের মানতেই হবে।
ছেত্রিকে নিয়ে তপু বলেন, সুনীল অবসরে যাবার পর ম্যাচ জেতেনি। ফেরার পর ম্যাচ জিতেছেন। বুঝতেই পারছি সুনীল দলের জন্য কতটা গুরুত্বপূর্ণ। তার প্রতি আমাদের আলাদা নজর রাখতেই হবে।
গোলের খেলায় যদি গোল না করা যায়, তাহলে জোগো বনিতো হোক কিংবা সাম্বা-কোন কারিকুরি দিয়েই ভক্তদের মন ভরানো যায় না। কিন্তু বাংলাদেশের ঐ নাম্বার নাইন পজিশনেই দুর্বলতা। অবশ্য এবার সেই জার্সি পেয়েছেন শাহরিয়ার হোসেন ইমন। প্রিমিয়ার লিগে ১ গোল, আর ৩ অ্যাসিস্ট, সুযোগ পেলে ফাইনাল থার্ডে ত্রাস ছড়াতে হবে। অবশ্য ইব্রাহিম ইন্ডিভিজ্যুয়াল নয়, টিম গেমেই বিশ্বাসী।
তিনি বলেন, দলের সবার অবস্থা ভালো। অনেকদিন পরে জাতীয় দলে ফিরেছি। সেরা একাদশে থাকতে পারলে অবশ্যই ভালো লাগবে। বদলি হিসেবেও যদি নামি চেষ্টা করব দলে ইম্প্যাক্ট রাখার। আসলে সব জায়গায় প্রতিযোগিতা থাকবে, সেই চ্যালেঞ্জ নিয়েই এতদূর আসা, বাকিটা আল্লাহর ইচ্ছা যদি খেলতে পারি।
এর আগেও ভারতের বিপক্ষে খেলেছেন ইব্রাহীম। ২০১৯ সালে ভারতের বিপক্ষে ম্যাচে গোল করতে পারেননি তিনি। এবার বাংলাদেশের হয়ে গোল করে সেই আক্ষেপ ঘোচাতে চান তিনি। ইব্রাহীম বলেন, ভারতের বিপক্ষে সল্টলেকে যে ম্যাচটা হয়েছিল ২০১৯ সালে, আমি সেই ম্যাচেও ছিলাম। এবারও দলের সঙ্গে আছি। ব্যক্তিগত লক্ষ্য হলো এবার গোল করে নিজেকে আত্মতৃপ্তি দেব।
শিলংয়ে মাঠ অনুশীলন আর নানা ঝামেলার মাঝে নতুন উপদ্রব বৃষ্টি। যাতে ঠান্ডার তীব্রতা বেড়েছে আরো কয়েক দফা। অবশ্য তাতে সমস্যা দেখছেন না ফুটবলার থেকে টিম ম্যানেজার কেউই।