দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে মানিকগঞ্জে জাতীয় পার্টির সব প্রার্থীর মনোনয়নপত্র বাতিল হয়েছে। দুইজনের ঋণ খেলাপির দায়ে এবং একজনের গ্যাস বিল বকেয়ার কারণে মনোনয়নপত্র বৈধ হিসেবে গণ্য হয়নি বলে জানিয়েছেন জেলা প্রশাসক ও রিটার্নিং অফিসার রেহেনা আক্তার।
রোববার তিনি সাংবাদিকদের জানান, ঋণ খেলাপি হয়েছেন মানিকগঞ্জ-২ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য, জাতীয় পার্টির প্রেসিডিয়াম মেম্বার এস এম আব্দুল মান্নান।
মানিকগঞ্জ-১ ও মানিকগঞ্জ-৩ আসনের জহিরুল আলম রুবেলের মনোনয়ন ঋণ খেলাপির দায়ে বাতিল হয়েছে। বাড়ির গ্যাস বিল বকেয়া রয়েছে মানিকগঞ্জ-১ আসনের প্রার্থী, জেলা জাতীয় পার্টির সাধারণ সম্পাদক হাসান সাঈদের। এছাড়া মানিকগঞ্জ-১ আসনে জাতীয় পার্টি (জেপি) মনোনীত প্রার্থী মো. আফজালের মনোনয়নপত্রও বাতিল হয়েছে।
রিটার্নিং অফিসার রেহেনা আক্তার বলেন, মানিকগঞ্জের তিন আসনে মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছিলেন ৩৩ জন প্রার্থী। এরমধ্যে ২১ জনের মনোনয়নপত্র বৈধ হয়েছে। অন্য ১২ জনের মনোনয়নপত্র বিভিন্ন কারণে বৈধ হিসেবে গণ্য হয়নি। যাচাই-বাছাই শেষে রোববার জেলা প্রশাসকের সম্মেলন কক্ষে সকল প্রার্থী বা তাদের প্রতিনিধিদের উপস্থিতিতে বৈধ প্রার্থীদের নাম ঘোষণা করা হয়েছে। যাদেরটা বাতিল হয়েছে তারা ৫ থেকে ৯ ডিসেম্বরের মধ্যে আপিল করতে পারবেন।
ঘিওর, দৌলতপুর ও শিবালয় উপজেলা নিয়ে গঠিত মানিকগঞ্জ-১ আসনে ১০ জনের মধ্যে ছয়জনের মনোনয়নপত্রই বাতিল হয়েছে। বৈধ হয়েছে চারজনের। এই আসনের বৈধ প্রার্থীরা হলেন- আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী, জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও জজকোর্টের পিপি অ্যাডভোকেট আব্দুস সালাম; স্বতন্ত্র প্রার্থী যুবলীগ কেন্দ্রীয় কমিটির সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক ও জেলা আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য সালাউদ্দিন মাহমুদ জাহিদ; জেলা জাসদের সভাপতি, ঘিওর উপজেলা পরিষদের সাবেক দুইবারের চেয়ারম্যান, বীর মুক্তিযোদ্ধা আফজাল হোসেন খান জকি এবং জাকের পার্টির দ্বীন মোহাম্মদ খান।
যাদের মনোনয়নপত্র বাতিল হয়েছে তারা হলেন- স্বতন্ত্র প্রার্থী আব্দুল আলী বেপারী, জাতীয় পার্টির প্রার্থী জহিরুল আলম রুবেল ও হাসান সাঈদ, জাতীয় পার্টির (জেপি) প্রার্থী মো. আফজাল, গণফ্রন্টের মোহাম্মদ শাহজাহান খান ও বিএনএম’র মোনায়েম খান।
সিংগাইর, হরিরামপুর ও মানিকগঞ্জ সদর উপজেলার তিন ইউনিয়ন নিয়ে গঠিত মানিকগঞ্জ-২ আসনে ১৪ জনের মধ্যে ১০ জনের মনোনয়নপত্র বৈধ হয়েছে। বাতিল হয়েছে চারজনের। এই আসনের বৈধ প্রার্থীরা হলেন- আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী, টানা তিনবারের সংসদ সদস্য, সিংগাইর উপজেলা আওয়ামী লীগে সভাপতি, কণ্ঠশিল্পী মমতাজ বেগম; স্বতন্ত্র প্রার্থী-আওয়ামী লীগ কেন্দ্রীয় কমিটির সাবেক যুব ও ক্রীড়া বিষয়ক সম্পাদক দেওয়ান শফিউল আরেফিন টুটুল; সিংগাইর উপজেলা পরিষদের দুইবারের চেয়ারম্যান, আওয়ামী লীগের সিনিয়র নেতা মুশফিকুর রহমান খাঁন হান্নান; জেলা আওয়ামী লীগের কোষাধ্যক্ষ দেওয়ান জাহিদ আহমেদ টুলু; বাংলাদেশ তরিকত ফেডারেশনের অ্যাডভোকেট ফেরদৌস আহমেদ আসিফ; জাসদের রফিকুল ইসলাম সিদ্দিকী; বিএনএ’র এ কে এম ইকবাল; বাংলাদেশ সুপ্রিম পার্টির এ কে নাহিদ; কৃষক শ্রমিক জনতা লীগের তানভীন রহমান ও বাংলাদেশ কংগ্রেস’র প্রার্থী জাকির হোসেন।
যাদের মনোনয়নপত্র বাতিল হয়েছে তারা হলেন- জাতীয় পার্টির প্রেসিডিয়াম সদস্য ও এই আসনের সাবেক সংসদ সদস্য এসএম আব্দুল মান্নান, প্রজন্মলীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সহ-সভাপতি ইঞ্জিনিয়ার সারোয়ার আলম বাবু, স্বতন্ত্র প্রার্থী- স্বেচ্ছাসেবকলীগ কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য শাহাবুদ্দিন আহমেদ চঞ্চল ও তৃণমূল বিএনপির প্রার্থী জসিম উদ্দিন।
মানিকগঞ্জ পৌরসভা, সাটুরিয়া উপজেলা ও মানিকগঞ্জ সদর উপজেলার সাত ইউনিয়ন নিয়ে গঠিত মানিকগঞ্জ-৩ আসনে মনোনয়ন জমা দিয়েছিলেন ৯ জন। এরমধ্যে বাতিল হয়েছে দুইজনের মনোনয়নপত্র। বৈধ হয়েছে সাতজনের। এই আসনের বৈধ প্রার্থীরা হলেন- আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী, টানা তিনবারের সংসদ সদস্য, স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক স্বপন; গণফোরাম কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি, এই আসনের সাবেক আওয়ামী লীগে সংসদ সদস্য, বীর মুক্তিযোদ্ধা, অধ্যক্ষ মফিজুল ইসলাম খান কামাল; জাকের পার্টির দ্বীন মোহাম্মদ খান; জাসদের সৈয়দ সারোয়ার আলম চৌধুরী; তৃণমূল বিএনপি’র প্রার্থী মোয়াজ্জেম হোসেন খান মজলিশ; কৃষক-শ্রমিক-জনতা লীগের প্রার্থী এম হাবিব উল্লাহ এবং বিএনএম’র প্রার্থী খালেক দেওয়ান।
যাদের মনোনয়নপত্র বাতিল হয়েছে তারা হলেন- জাতীয় পার্টির কেন্দ্রীয় নেতা জহিরুল আলম রুবেল ও বাংলাদেশ কংগ্রেসের প্রার্থী সাবিনা বেগম।