রাজবাড়ীতে ভিজিএফের চাল বিতরণের তথ্য জানতে চাওয়ায় তিন সাংবাদিককে গালাগালসহ শারীরিকভাবে লাঞ্ছিত করা হয়েছে। একই সঙ্গে তাদের ইউনিয়ন পরিষদ থেকে বের করে দেওয়া হয়েছে।
সোমবার দুপুরে রাজবাড়ী সদর উপজেলার মুলঘর ইউনিয়ন পরিষদের কার্যালয়ে এ ঘটনা ঘটে। এ সময় মুলঘর ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান ও আওয়ামী লীগ নেতা শেখ মো. ওহিদুজ্জামান ওই সাংবাদিকদের হেনস্তা করেন।
লাঞ্ছিত সাংবাদিকরা হলেন- মাছরাঙ্গা টেলিভিশন ও প্রতিদিনের বাংলাদেশ পত্রিকার জেলা প্রতিনিধি ইমরান হোমেন মনিম, গণকণ্ঠের জেলা প্রতিনিধি আতিয়ার রহমান ও দৈনিক সময়ের কাগজের জেলা প্রতিনিধি শহিদুল ইসলাম।
এ ঘটনার একটি ভিডিও ফুটেজে সোস্যালে ছড়িয়ে পড়েছে। ওই ভিডিওতে দেখা গেছে, মুলঘর ইউনিয়ন পরিষদের বাড়ান্দায় ইউপি চেয়ারম্যান ওহিদুজ্জামান সাঙ্গপাঙ্গো নিয়ে ওই সাংবাদিকদের ওপর চড়াও হন এবং গালাগাল করতে থাকেন। এক পর্যায়ে পরিষদের বারান্দা থেকে ধাক্কা দিয়ে মাছরাঙ্গা টেলিভিশনের প্রতিনিধি ইমরান হোসেন মনিমকে নিচে ফেলে দেন।
হেনস্তার শিকার ওই সাংবাদিকরা বলেন, ইউনিয়ন পরিষদে ঈদ উপলক্ষে ভিজিএফের চাল বিতরণে অনিয়মের অভিযোগ পেয়ে সংবাদ সংগ্রহে যান। অনিয়মের তথ্য ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যানের কাছে জানতে চাইলে তিনি উত্তেজিত হয়ে গালাগাল ও এক পর্যায়ের চড়াও হন। ধাক্কা দিয়ে ফেলে দেওয়াসহ হত্যারও হুমকি দেন। এ বিষয়ে একটি মামলার প্রস্তুতি নেওয়া হচ্ছে।
ওই ইউপি চেয়ারম্যান ও রাজবাড়ী সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক শেখ মোঃ ওহিদুজ্জামান বলেন, তিনি সাংবাদিকদের সঙ্গে একটু উচ্চস্বরে কথা বলেছেন। তবে তাদের গালাগাল করেন নাই এবং ধাক্কা দেন নাই। যদিও ভিডিওতে সাংবাদিককে ধাক্কার বিষয়টি দেখা গেছে।
এদিকে এ ঘটনার নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছেন রাজবাড়ী প্রেস ক্লাব, রাজবাড়ী জেলা রিপোর্টাস ক্লাব, বাংলাদেশ মফস্বল সাংবাদিক ফোরাম রাজবাড়ী জেলা শাখা।
শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত, ওই ঘটনায় মূলঘর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান শেখ মোঃ ওয়াহিদুজ্জামানের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের হয়েছে।
সোমবার বিকেলে মাছরাঙ্গা টেলিভিশন ও প্রতিদিনের বাংলাদেশ পত্রিকার জেলা প্রতিনিধি ইমরান হোমেন মনিম বাদি হয়ে রাজবাড়ী থানায় মামলা দায়ের করেন।
এছাড়াও এ ঘটনার সুষ্ঠ তদন্ত ও বিচার দাবিতে রাজবাড়ীর জেলা প্রশাসক আবু কায়সার খান, পুলিশ সুপার জিএম আবুল কালাম আজাদের কাছে লিখিত অভিযোগ দিয়েছে জেলার কর্মরত সংবাদকর্মীরা।