জীবন যুদ্ধে থেমে নেই কুড়িগ্রামের অদম্য মেধাবী মানিক রহমান। দুই হাত নেই তার। পা দিয়ে লিখেই হাজী মোহম্মদ দানেশ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে মেধা তালিকায় পেয়েছেন ভর্তির সুযোগ। হতে চায় একজন সফটওয়্যার ইঞ্জিনিয়ার। মানিকের এমন সাফল্যে খুশি পরিবার, স্বজন ও শিক্ষকরা। মানিক চায় দেশের সেবা করতে।
কুড়িগ্রামের ফুলবাড়ী উপজেলার চন্দ্রখানা গ্রামের ব্যবসায়ী মিজানুর রহমান ও সহকারী অধ্যাপক মরিয়ম দম্পতির কোলে দুই হাত ছাড়া জন্ম নেয় মানিক রহমান। এতে সন্তানের ভবিষ্যৎ নিয়ে চিন্তিত হয়ে পড়েন বাবা-মা। কিন্তু মানিক যত বড় হতে থাকে লেখাপড়ার প্রতি আগ্রহ বাড়তে থাকে তার। ফলে হাত না থাকলেও পা দিয়েই লেখা ও সব ধরনের কাজের দক্ষতা ও কৌশল শিখতে থাকেন মা মরিয়ম বেগমের কাছ থেকে।
মানিককে বিদ্যালয়ে ভর্তি করালে পা দিয়ে লিখেই জেএসসি, এসএসসি ও এইচএসসিতে জিপিএ ৫ পায় সে। এবার হাজী মোহাম্মদ দানেশ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (হাবিপ্রবি) ভর্তি পরীক্ষায় ‘বি’ ইউনিটে মেধাতালিকায় ১৯২তম স্থান অর্জন করেছে মানিক রহমান। এতে দারুণ খুশি মানিকের বাবা-মা, প্রতিবেশী ও স্বজনরা।
মানিকের বাবা মিজানুর রহমান ও মা মরিয়ম বেগম জানান, ছোটবেলা থেকেই পা দিয়ে লেখা, গোসল, পোশাক পড়া, খাবার খাওয়া, মোবাইল ও ল্যাপটপ চালানো রপ্ত করে মানিক। এখন বিশ্ববিদ্যালয়ে লেখাপড়া শেষ করে এক জন দক্ষ সফটওয়্যার ইঞ্জিনিয়ার হওয়ার ইচ্ছা তার।
এলাকাবাসী জানায়, তারা দেখেছেন -মানিক ছোটবেলা থেকেই অদম্য মেধাবী।
মানিক রহমান বলেন, এক জন সফটওয়্যার ইঞ্জিনিয়ার হয়ে দেশের প্রযুক্তিগত মান উন্নয়ন করে দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়ন করতে চাই আমি।
মানিকের বিদ্যালয়ে তার এগিয়ে চলার পথে সহযোগিতা করেন শিক্ষক ও সহপাঠীরা। তাদের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানান মানিক।
কুড়িগ্রামের ফুলবাড়ী জসি মিয়া মডেল সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ে পড়াশোনা করেছে মানিক। এই বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. আবেদ আলী বলেন, মেধা ও অদম্য মানসিকতার দৃষ্টান্ত দুই হাত ছাড়া জন্ম নেয়া মানিক রহমান। স্কুলে নিয়মিত ক্লাস করতো সে। প্রতিটি পরীক্ষায় ভালো ফলাফল করেছে মানিক।