লিবিয়ার রাজধানী ত্রিপোলিতে সেনাবাহিনী এবং সরকারবিরোধী মিলিশিয়াদের মধ্যে দিনব্যাপী এক প্রাণঘাতী সংঘর্ষে অন্তত ২৩ জন নিহত হয়েছেন।
শনিবার (২৭ আগস্ট) লিবিয়ার পূর্বাঞ্চলের পার্লামেন্টের প্রধানমন্ত্রী হিসাবে স্বীকৃত ফাথি বাশাঘার অনুগত মিলিশিয়াদের একটি বহরকে প্রতিহত করার চেষ্টা করেছিল আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত লিবিয়ার সরকারের সশস্ত্র বাহিনী। এ থেকেই সংঘর্ষের সূত্রপাত।
ত্রিপলির স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, লড়াইয়ে কমপক্ষে ২৩ জন নিহত হয়েছে এবং আরও বহু আহত হয়েছে। নিহতদের মধ্যে দেশটির একজন তরুণ কমেডিয়ান মুস্তাফা বারাকাও রয়েছেন বলে একজন কর্মকর্তা জানিয়েছেন।
২০১১ সালে ন্যাটো সমর্থিত এক বিদ্রোহের মাধ্যমে দেশটির দীর্ঘদিনের শাসক কর্নেল মুয়াম্মার গাদ্দাফি ক্ষমতাচ্যুত হওয়ার পর থেকে লিবিয়া এক চরম বিশৃঙ্খলার মধ্যে রয়েছে। দেশটি রাজনৈতিক বিভেদ, সশস্ত্র সংঘর্ষ এবং ঘন ঘন রাষ্ট্র নেতা পরিবর্তনের মধ্যে দিয়ে গেছে। তা সত্ত্বেও, দেশটিতে গত দুই বছর ধরে তুলনামূলকভাবে বেশ শান্ত পরিস্থিতি বিরাজ করছিল।
দুই বছর পর নতুন করে আবারও সেখানে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটলো। পূর্বাঞ্চলের পার্লামেন্টের প্রধানমন্ত্রী হিসাবে স্বীকৃত ফাথি বাশাঘার এই সরকারের একজন প্রতিদ্বন্দ্বী। বাশাঘার অনুগত মিলিশিয়াদের একটি বহরকে প্রতিহত করার চেষ্টা করেছিল আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত লিবিয়ার সরকারের সশস্ত্র বাহিনী। এ থেকেই শুরু হয় সংঘর্ষ।
রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় গুলি ও বিস্ফোরণের খবর পাওয়া গেছে। শহরজুড়ে কালো ধোঁয়া উঠতে দেখা যায়। জরুরি সেবায় নিয়োজিত সংস্থাগুলো জানিয়েছে যে বেশ কয়েকটি হাসপাতালেও আক্রমণ করা হয়েছে। সংঘর্ষের কারণে আশপাশের এলাকা থেকে লোকজনকে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে।
আরও পড়ুন: জাতিসংঘের পারমাণবিক চুক্তির খসড়ায় রাশিয়ার বাগড়া
লিবিয়াতে জাতিসংঘের মিশন বলেছে যে যুদ্ধে ‘বেসামরিক জনবহুল এলাকার আশেপাশে নির্বিচারে মাঝারি এবং ভারী গোলাবর্ষণ’ হয়েছে। এমন পরিস্থিতিতে সেখানে
অবিলম্বে যুদ্ধবিরতির আহ্বানও জানিয়েছে জাতিসংঘের মিশন।
উল্লেখ্য, একসময় তেলসমৃদ্ধ দেশটির জীবনযাত্রার মান আফ্রিকায় সর্বোচ্চ ছিল, যেখানে বিনামূল্যে স্বাস্থ্যসেবা এবং শিক্ষার ব্যবস্থা ছিল। কিন্তু ২০১১ সাল থেকে প্রতিদ্বন্দ্বী বাহিনীগুলো মধ্যে ঘন ঘন লড়াইয়ে দেশটির সেই স্থিতিশীলতা এবং সমৃদ্ধি স্থবির হয়ে পড়েছে।
একাত্তর/জো