গত এক দশকে বিশ্বব্যাপী লিঙ্গ বৈষম্য পরিস্থিতির কোনো উন্নতি হয়নি বলে জাতিসংঘের এক প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে।
প্রতিবেদনটিতে বলা হয়েছে, সাংস্কৃতিক পক্ষপাত ও চাপ নারীর ক্ষমতায়নকে বাধাগ্রস্ত করে চলেছে এবং ২০৩০ সালের মধ্যে জাতিসংঘের লিঙ্গ সমতার লক্ষ্য পূরণের সম্ভাবনা নেই।
সোমবার প্রকাশিত ইউএনডিপির প্রতিবেদনটিতে জেন্ডার সোশ্যাল নরমস ইনডেক্স ব্যবহার করা হয়েছে, যার তথ্য নেয়া হয়েছে আন্তর্জাতিক গবেষণা প্রোগ্রাম ওয়ার্ল্ড ভ্যালুস সার্ভে (ডব্লিউভিএস) থেকে।
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে নারী অধিকার গোষ্ঠী এবং টাইমস আপ ও মি টু’র মতো সামাজিক আন্দোলন সত্ত্বেও, পক্ষপাতদুষ্ট সামাজিক নিয়ম এবং কোভিড-১৯ মহামারির কারণে অনেক নারী জীবিকা হারিয়েছেন, যা বৈষম্যের অগ্রগতিকে স্থবির করে দিয়েছে।
জরিপটি ২০১০ থেকে ২০১৪ সাল এবং ২০১৭ থেকে ২০২২ সাল পর্যন্ত বিশ্বের বিভিন্ন দেশ ও অঞ্চলের জনগোষ্ঠীর ওপর চালানো হয়েছে, যা পৃথিবীর মোট জনসংখ্যার প্রায় ৮৫ শতাংশ।
সর্বশেষ বিশ্লেষণে দেখা গেছে, প্রতি ১০ জনের মধ্যে প্রায় ৯ জন পুরুষ এবং নারী নারীদের বিরুদ্ধে মৌলিক পক্ষপাত ধারণ করেন। এই সময়ে নারীর বিরুদ্ধে কমপক্ষে একটি পক্ষপাত ধারণ করা মানুষের সংখ্যা বলতে গেলে কমেইনি।
ইউএনডিপির গবেষণা ও কৌশলগত অংশীদারিত্ব উপদেষ্টা এবং প্রতিবেদনের সহ-লেখক হেরিবার্তো তাপিয়া বলেছেন, সময়ের সাথে উন্নতির মাত্রা ‘হতাশাজনক’।
জরিপে আরও উল্লেখ করা হয়েছে, বিশ্বের প্রায় অর্ধেক মানুষ মনে করে যে পুরুষরা ভাল রাজনৈতিক নেতা, আর ৪৩ শতাংশ মনে করে পুরুষরা ভাল বাণিজ্য কর্মকর্তা।
ইউএনডিপিতে অন্তর্ভুক্তিমূলক অর্থনীতির জেন্ডার বিশেষজ্ঞ অ্যারো সান্তিয়াগো বলেছেন, ‘আমাদের লিঙ্গগত পক্ষপাতিত্ব, সামাজিক রীতিনীতি পরিবর্তন করতে হবে, কিন্তু চূড়ান্ত লক্ষ্য হল নারী ও পুরুষের মধ্যে, মানুষের মধ্যে ক্ষমতার সম্পর্ক পরিবর্তন করা’।
আরও পড়ুন: পুতিনের ‘হাতে হাত রাখার’ প্রতিশ্রুতি কিমের
শিক্ষাকে সর্বদা নারীর অর্থনৈতিক উন্নতির মূল চাবিকাঠি হিসাবে প্রশংসিত করা হলেও, জরিপটি শিক্ষা এবং আয়ের মধ্যে যোগসূত্র প্রকাশ করেছে। সেখানে দেখা গেছে, ৫৭টি দেশে প্রাপ্তবয়স্ক নারীরা পুরুষদের তুলনায় বেশি শিক্ষিত হলেও তাদের গড় আয়ের ব্যবধান ৩৯ শতাংশ।
ইউএনডিপি বলছে, প্রতি চারজনের মধ্যে একজনের বেশি বিশ্বাস করে যে একজন পুরুষ তার স্ত্রীকে মারধর করা ন্যায়সঙ্গত।
একাত্তর/এসজে