সিরিয়ার দামেস্কে ইরানি দূতাবাসে হামলার বদলা হিসাবে কথা মতো ইসরাইলকে দুর্দান্ত এক পাল্টা দিয়েছে ইরান। দেশটির ভূখন্ডকে লক্ষ্য করে প্রথমবারের মতো ড্রোন ও মিসাইল হামলা চালিয়েছে ইরান।
ইসরাইলি ডিফেন্স ফোর্স সূত্রের খবর, তিনশ’র বেশি ড্রোন ও মিসাইল দিয়ে এই হামলা চালানো হয়েছে। এই প্রথমবার ইরানের আকাশ আক্রমণের উদাহরণ দেখল্র বিশ্ব।
তবে ইরান তাদের আধুনিক অস্ত্র এতে একদমই ব্যবহার করেনি। ইরানের স্থানীয় সংবাদমাধ্যম আইএসএনএ দাবি করেছে, সে দেশের হাতে রয়েছে এমন ৯টি ক্ষেপণাস্ত্র যা ইসরাইলে গিয়ে হামলা চালাতে সক্ষম।
৯টি ক্ষেপণাস্ত্রের মধ্যে অন্যতম ‘সেজ্জিল’। নব্বইয়ের দশকে এই ক্ষেপণাস্ত্র নিয়ে গবেষণা শুরু করে ইরান। এর দৈর্ঘ্য ১৮ মিটার। দুই হাজার কিলোমিটার পর্যন্ত ছুটতে পারে। বহন করতে পারে ৭০০ কেজি বিস্ফোরক।
ইরানের তৈরি ‘খাইবার’-ও মধ্যম পাল্লার শক্তিশালী ক্ষেপণাস্ত্র। চতুর্থ প্রজন্মের ক্ষেপণাস্ত্র এটি। ১,৫০০ কেজি বিস্ফোরক নিয়ে ২,০০০ কিলোমিটার দূরে লক্ষ্যমাত্রায় আঘাত হানতে পারে এই ক্ষেপণাস্ত্র।
ইরানের অস্ত্রশালায় রয়েছে ‘এমাদ’ ক্ষেপণাস্ত্র। ১৭০০ কিলোমিটার দূরে লক্ষ্যমাত্রায় গিয়ে আঘাত হানতে পারে এটি। বহন করতে পারে ৭৫০ কেজি বিস্ফোরক।
উত্তর কোরিয়ার নোডং-ওয়ান ক্ষেপণাস্ত্রের অনুকরণে ‘শাহাব-৩’ তৈরি করেছে ইরান। মধ্যম পাল্লার এই ক্ষেপণাস্ত্র এক হাজার কিলোমিটার দূরে গিয়ে লক্ষ্যমাত্রায় আঘাত হানতে পারে।
পরবর্তী সময়ে চীনা প্রযুক্তির মাধ্যমে এর উন্নতি ঘটানো হয়েছে। এই মিসাইলে আরও উন্নত প্রযুক্তি যুক্ত করে ‘গদর-১১০’ বা ‘কাদর-১১০’ তৈরি করেছে ইরান।
তরল এবং কঠিন দুই ধরনের জ্বালানিতেই চলে এই ক্ষেপণাস্ত্র। দেড় হাজার কিলোমিটার দূরে উড়ে গিয়ে এটি নিখুঁতভাবে শক্রুর লক্ষ্যবস্তুতে আঘাত হানতে পারে। এটির ধ্বংস ক্ষমতা ঈর্ষণীয়।
ইসলামিক রেভলিউশনার গার্ড কোর আইআরজিসি সম্প্রতি প্রকাশ্যে এনেছে দূরপাল্লার ক্ষেপণাস্ত্র ‘পাভেগ’। ১,৬৫০ কিলোমিটার দূরে লক্ষ্যমাত্রায় আঘাত হানতে পারে এটি।
এই ক্ষেপণাস্ত্র একাই ইসরাইলের বড় শহরগুলোকে ধ্বংস করতে সক্ষম। এছাড়াও ইরানের ভাণ্ডারে রয়েছে হাইপারসনিক ক্ষেপণাস্ত্র। নাম ‘ফাত্তাহ-টু’। এর ইঞ্জিন চলে তরল জ্বালানিতে।
১,৫০০ থেকে ১,৮০০ কিলোমিটার দূরে লক্ষ্যমাত্রায় আঘাত হানতে পারে। রাডারে ধরা পড়ার আগেই আঘাত করতে পারে এটি। ফাঁকি দিতে পারে যে কোন আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থাকে।
মধ্যম পাল্লার ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র ‘খাইবার শেকান’-ও কম যায় না। ২০২২ সালে এই ক্ষেপণাস্ত্রের কথা প্রকাশ করে আইআরজিসি। ১,৪০০ কিলোমিটার ব্যাসার্ধ জুড়ে আঘাত হানতে পারে এই ক্ষেপণাস্ত্র।
মধ্যম পাল্লার ‘হজ কাসেম’-ও ইরানের তৈরি অন্যতম শক্তিশালী ক্ষেপণাস্ত্র। রাডারে ধরা পড়ার আগেই ১,৪০০ কিলোমিটার দূরে লক্ষ্যমাত্রায় আঘাত হানতে পারে এটি।
২০২০ সালের জানুয়ারিতে ইরানের কমান্ডার কাসেম সোলেইমানিকে হত্যা করে যুক্তরাষ্ট্র। তার নামেই এই ক্ষেপণাস্ত্রের নামকরণ। ২০২০ সালের আগস্টে ইরান সেনাবাহিনীতে যুক্ত হয়েছে এই ক্ষেপণাস্ত্র।