নজিরবিহীন তাপদাহে পুড়ছে ভারতের রাজধানী নয়াদিল্লি। বুধবার কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলটিতে ৫২ দশমিক ৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে। যা দেশটির ইতিহাসে সর্বোচ্চ তাপমাত্রা।
ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এনডিটিভি জানিয়েছে, দিল্লির মুঙ্গেসপুরের আবহাওয়া অফিস দুপুর ২টা ৩০ মিনিটে তাপমাত্রা ৫২ দশমিক ৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস রেকর্ড করে।
দিল্লি আবহাওয়া অফিসের আঞ্চলিক প্রধান কুলদীপ শ্রীবাস্তব জানিয়েছেন, রাজস্থান থেকে আসা উষ্ণ বাতাস মুঙ্গেশপুর, নারেলা ও নজফগড়ের মতো শহরগুলোর তাপমাত্রা বাড়িয়ে দিচ্ছে। আর তার ফলে পরিস্থিতি আরও ভয়াবহ হয়ে উঠছে।
গতকাল মঙ্গলবার নয়াদিল্লি সংলগ্ন দুই শহর নারেলা ও মুঙ্গেশপুরে ৪৯ দশমিক ৯ ডিগ্রি তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়। বুধবার দুপুর পর্যন্ত এটিই ছিলো দিল্লির ইতিহাসে সর্বোচ্চ তাপমাত্রা।
এদিন দিল্লির তাপমাত্রা প্রত্যাশিত তাপমাত্রার চেয়ে অন্তত ৯ ডিগ্রি সেলসিয়াস বেশি ছিলো।
এর আগে ২০০২ সালের রেকর্ড দিল্লিতে সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ৪৯ দশমিক ২ ডিগ্রি সেলসিয়াস রেকর্ড করা হয়েছিল।
তবে বুধবার দিল্লির ইতিহাসের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ডের দিনে সন্ধ্যায় অল্প সময়ের জন্য বৃষ্টি হয়েছে। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, এর ফলে আর্দ্রতার মাত্রা বাড়াতে পারে।
আবহাওয়া পরিস্থিতি চরমে পৌঁছানোই দিল্লিতে রেড অ্যালার্ট জারি করেছে আইএমডি। সংস্থাটি বলছে, তীব্র গরমে অসুস্থতা এবং হিট স্ট্রোকের আশঙ্কা বেড়ে গেছে।
নিউমেরিক্যাল ওয়েদার প্রেডিকশন ডেটা বলছে, ৩০ মে থেকে তাপপ্রবাহের অবস্থা থেকে ধীরে ধীরে শিথিল হয়ে আসবে।
এদিকে এ অস্বাভাবিক তাপমাত্রার কারণে বুধবার দিল্লিতে বিদ্যুতের চাহিদা রেকর্ড আট হাজার ৩০২ মেগাওয়াটে পৌঁছেছিল বলে জানিয়েছেন এক কর্মকর্তা। এ চাহিদা স্মরণকালের মধ্যে সর্বোচ্চ।
কারণ হিসেবে বলা হচ্ছে, তীব্র গরম থেকে বাঁচতে দিল্লির মানুষ বেশি পরিমাণে এসি, কুলার ও ফ্যান ব্যবহার করেছেন। এছাড়া পানি ঠান্ডা করতেও ফ্রিজের ব্যবহার বেড়েছে।
এদিন দিল্লি ছাড়াও ভারতের একাধিক অঞ্চলে অত্যন্ত উচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে। এর মধ্যে মরুভূমি রাজ্য রাজস্থানে ৫১ ডিগ্রি সেলসিয়াস এবং হরিয়ানার সিরসাতে ৫০ দশমিক ৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস রেকর্ড করা হয়েছে।
সাধারণত প্রতিবছর গরমেই দিল্লিকে তীব্র তাপপ্রবাহ মোকাবিলা করতে হয়। কিন্তু বর্তমানে এ তাপপ্রবাহ আরও দীর্ঘ হচ্ছে। এর জন্য জলবায়ু পরিবর্তন এবং বৈশ্বিক উষ্ণতা বৃদ্ধিকে দায়ী করা হচ্ছে।