ইসলামি প্রতিরোধ দলগুলোর সামর্থ্যকে ছোট করে দেখাতে চাইলেও যুদ্ধ শুরুর পর ইসরাইল ও এর মিত্ররা হাড়ে হাড়ে টের পাচ্ছে দলগুলোর শক্তিমত্তা। ইরানের অত্যাধুনিক কয়েক লাখ মিসাইলের ভান্ডার তো অক্ষত রয়েছেই। যুদ্ধ শুরুর পর স্থলযুদ্ধে অপরাজেয় হিজবুল্লাহর প্রতিরোধের পাশাপাশি নৌ শক্তিতে হুথির অপ্রতিরোধ্য ক্ষমতা ধ্বংসের দ্বারপ্রান্তে এনে দাঁড় করিয়েছে ইসরাইলকে।
এবার নিজেদের আরও এক অত্যাশ্চর্য অস্ত্র বের করে এনেছে ইরান সমর্থিত ইয়েমের সশস্ত্র গোষ্ঠি হুথি। আল কারিয়া নামের মনুষ্যবিহীন ড্রোন সাবমেরিনের তথ্য প্রকাশের পর, সেটির বিধ্বংসী ক্ষমতায় চমকে গেছে ইসরাইলসহ পশ্চিমা বিশ্ব। প্রথমে হুথিদের গোনায় না ধরলেও, লোহিত সাগরে হলিউডের সিনেমাকে হার মানানো তাদের সব দুঃসহাসিক অভিযান পশ্চিমাদের চোখে শুধু কপালে উঠে আছে।
হুথিদের ড্রোন, ব্যালিস্টিক মিসাইল, অ্যান্টি মিসাইল ও ড্রোন সিস্টেমসহ অত্যাধুনিক অস্ত্রের ভান্ডার চমকে দিতে থাকে মার্কিন-ইঙ্গো জোটকে। সবচেয়ে বড় কথা, শুধু অস্ত্রই নয় সেগুলো চালানোর সেনা ও প্রযুক্তিতে বিশ্বের সামরিক শক্তির যে কোন প্রথম সারির দলকে পাল্লা দেবে হুথি। এরই ধারাবাহিকতায় এবার হুথিরা সামনে আনলো নতুন নৌ অস্ত্র ‘আল-কারিয়া’।
হুথিদের দাবি, এই ড্রোন সাবমেরিনটি এতোটাই শক্তিশালী যে, পানির নিচে বিস্ফোরণ ঘটিয়ে উড়িয়ে দিতে পারে আমেরিকার সবচেয়ে বড় যুদ্ধজাহাজকেও। সানা সরকার ২৭ অক্টোবর ইয়েমেনের পশ্চিম উপকূলে একটি ব্যাপক সামরিক মহড়ার এই নতুন অস্ত্র প্রকাশ্যে আনে। ইয়েমেন প্রেস এজেন্সি জানাচ্ছে, প্রতিশ্রুত বিজয় এবং পবিত্র জিহাদের সমর্থনে তাদের লড়াইয়ে নতুন অস্ত্রটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।
ইয়েমেনের এক সিনিয়র সামরিক সূত্র আল-মায়াদিনকে বলেছে, ওয়াশিংটন ও সানার মধ্যে আসন্ন সংঘর্ষের প্রস্তুতি হিসাবেই ড্রোন সামেরিনের সফল পরীক্ষা চালানো হয়েছে। তিনি সতর্ক করেছেন, আমেরিকা এবং ব্রিটেনকে অবশ্যই বুঝতে হবে যে, তারা ইয়েমেনের কোনো দুঃসাহসিক অভিযান থেকেই রেহাই পাবে না এবং তাদের পূর্ববর্তী নৌ ও বিমান ব্যর্থতা থেকে শিক্ষা নেওয়া উচিত।
হুথির সক্ষমতা কমাতে ইয়েমেনে এমকিউ নাইন অত্যাধুনিক ড্রোনের বেশ কিছু হামলা চালায় যুক্তরাষ্ট্র। মার্কিন এসব ড্রোন শনাক্ত ও ধ্বংস করা প্রায় অসম্ভব বলে জানানো হলেও হুথিদের কাছে থাকা অস্ত্র ও প্রযুক্তির কাছে পাত্তাই পায়নি এসব ড্রোন। ব্যর্থ হয়েছে বি টু স্টেলথ বিমানের হামলাও। অক্ষতই রয়েছে হুথির লাখো অস্ত্রের ভান্ডার। উল্টো রাশিয়া থেকে এনেছে ১০ মিলিয়ন ডলারের অস্ত্র।
পশ্চিমাদের জন্য আতঙ্ক হয়ে আসা এমন সব খবরের মধ্যেই সাগরে মনুষ্যবিহীন ড্রোন সাবমেরিন আল কারিয়া মোতায়েনের ছবি প্রকাশ করেছ হুথি। পানির নিচ দিয়ে নিঃশব্দ আক্রমণে যুক্তরাষ্ট্রের সবচেয়ে বড় যুদ্ধ জাহাজকেও ধ্বংস করে দিতে সক্ষম এই অস্ত্র। এই ড্রোনের বিস্ফোরণ ক্ষমতা এমনই যে আঘাতের পর জাহাজগুলোর চূর্ণ বিচূর্ণ অংশ খুঁজে পাওয়ায় সম্ভব হবে না কারও।