আমেরিকার প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প পাল্টাপাল্টি শুল্কারোপ করে গোটা দুনিয়াতে যে নতুন নতুন বাণিজ্য যুদ্ধ শুরু করেছেন, তার বিরুদ্ধে একট্টা হয়ে লড়তে চীনের প্রস্তাব ফিরিয়ে দিয়েছে অস্ট্রেলিয়া। ট্রাম্পের শুল্কের বিরুদ্ধে চীনের সঙ্গে একজোট হয়ে লড়াই করার প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করেছে অস্ট্রেলিয়া।
শুধু তাই নয়, নিজেদের সবচেয়ে বড় বাণিজ্যিক অংশীদার চীনের উপর নির্ভরতাও কমিয়ে আনার কথা বলেছে দেশটি। অস্ট্রেলিয়া এমন এক সময়ে এই সিদ্ধান্ত নিলো যখন মার্কিন শুল্কযুদ্ধ মোকাবেলার উপায় খুঁজতে আমেরিকার সবচেয়ে বড় মিত্র ইউরোপ ও কানাডা।
বাণিজ্য পরিস্থিতি মোকাবেলায় চীনের রাষ্ট্রদূতের প্রস্তাবিত যৌথ উদ্যোগ প্রসঙ্গে অস্ট্রেলিয়ার ডেপুটি প্রধানমন্ত্রী রিচার্ড মারলেস স্কাই নিউজকে বলেন, বৈশ্বিক পর্যায়ে কোনো প্রতিযোগিতায় আমরা চীনের সঙ্গে একজোট হতে যাচ্ছি না। আমরা তাই করবো, যেখানে অস্ট্রেলিয়ার জাতীয় স্বার্থ সমুন্নত থাকে এবং বিশ্বব্যাপী আমাদের বাণিজ্যকে প্রসারিত করে।
রিচার্ড মারলেস ইউরোপীয় ইউনিয়ন, ইন্দোনেশিয়া, ভারত, যুক্তরাজ্য ও মধ্যপ্রাচ্যের সঙ্গে অস্ট্রেলিয়ার বাণিজ্যিক সম্পর্ক শক্তিশালী করে অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির দিকে এগিয়ে যাবে বলে জানান।
বিভিন্ন দেশের পণ্য আমদানির ওপর ব্যাপক হারে শুল্ক আরোপ করছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। এতে অস্থির হয়ে উঠেছে বিশ্ব পুঁজিবাজার।
এই পরিস্থিতির মধ্যে বেশ কিছু দেশের অনুরোধের প্রেক্ষিতে ৯০ দিনের জন্য নতুন শুল্কনীতি স্থগিত করার ঘোষণা দিয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট।
তবে এই সুবিধা পাচ্ছে না প্রতিদ্বন্দ্বী চীন। দেশটির যুক্তরাষ্ট্রের পণ্যে পাল্টা ৮৪ শতাংশ শুল্কারোপ করায় ক্ষেপেছেন ট্রাম্প। ক্ষুব্ধ হয়ে দেশটির পণ্যে ১২৫ শতাংশ শুল্ক আরোপের ঘোষণা দিয়েছেন তিনি।
দ্য এইজ সংবাদপত্রের একটি কলামে অস্ট্রেলিয়ায় নিযুক্ত চীনের রাষ্ট্রদূত জিয়াও কিয়ান ক্যানবেরাকে বেইজিংয়ের সঙ্গে এক হয়ে বৈশ্বিক বহুপাক্ষিক বাণিজ্য ব্যবস্থাকে রক্ষা করার আহ্বান জানান।
জিয়াও কিয়ান বলেন, নতুন বাস্তবতায় বৈশ্বিক পরিবর্তনের জন্য অস্ট্রেলিয়া ও আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের সঙ্গে একসঙ্গে কাজ করতে প্রস্তুত রয়েছে চীন।
অস্ট্রেলিয়ার প্রধানমন্ত্রী অ্যান্থনি আলবানিজ বলেছেন, অস্ট্রেলিয়ানরা কেবলমাত্র নিজের পক্ষে কথা বলবে। আর দেশটির প্রতিরক্ষামন্ত্রী রিচার্ড মার্লেস বলেছেন, অস্ট্রেলিয়া কখনও ‘চীনের হাত ধরে থাকবে না। তিনি বলেন, এটি অস্ট্রেলিয়ার জাতীয় স্বার্থ অনুসরণের বিষয়, চীনের সাথে সাধারণ যোগাযোগ করার বিষয় নয়।
অস্ট্রেলিয়ার উপর যুক্তরাষ্ট্র ১০ শতাংশ পারস্পরিক শুল্ক আরোপ করেছে। তবে চীনের সঙ্গে বৈরী সম্পর্ক অস্ট্রেলিয়ার অর্থনীতির উপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে। অস্ট্রেলিয়ায় উৎপাদিত পণ্যের এক-তৃতীয়াংশের বাজার হচ্ছে চীন। বিপরীতে যুক্তরাষ্ট্রে রপ্তানি হয় মাত্র পাঁচ শতাংশ পণ্য।