ফ্রান্স অনির্দিষ্টকালের জন্য পশ্চিম আফ্রিকার দেশ নাইজারে তার দূতাবাস বন্ধ করার পরিকল্পনা করেছে। ক্ষমতাসীন সামরিক জান্তার দ্বারা আরোপিত বিধিনিষেধের কারণে কূটনৈতিক কাজ করতে অক্ষম হওয়ায় এই পদক্ষেপ নিতে যাচ্ছে দেশটি।
বৃহস্পতিবার সোশ্যাল মিডিয়া প্লাটফর্ম এক্সে প্রকাশিত একটি চিঠি হতে এই পরিকল্পনার খবর জানা গেছে। খবর রয়টার্স’র।
মঙ্গলবার ফরাসি রাষ্ট্রদূত সিলভাইন ইত্তের স্বাক্ষরিত একটি চিঠিতে বলা হয়েছে, ‘ফরাসি প্রজাতন্ত্রের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় দুঃখের সঙ্গে অনির্দিষ্টকালের জন্য দূতাবাস বন্ধ করতে বাধ্য হচ্ছে।’ চিঠিটি ফরাসি দূতাবাসে কর্মরত নাইজারের কর্মচারীদের কাছে পাঠানো হয়েছে।
গত জুলাই মাসে অভ্যুত্থানের মাধ্যমে ফ্রান্সপন্থী প্রেসিডেন্ট মোহাম্মদ বাজুমকে ক্ষমতাচ্যুত করে নাইজারের সেনাবাহিনী। এরপর থেকে সাবেক উপনিবেশিক শাসক ফ্রান্সের সঙ্গে দেশটির সম্পর্কের টানপোড়েন শুরু হয়।
প্রতিবেশী মালি এবং বুরকিনা ফাসোর ক্ষমতাসীন জান্তাদের কৌশল অনুসরণ করে নাইজারের সামরিক জান্তাও ফ্রান্সের রাষ্ট্রদূত সিলভাইন ইত্তেকে বহিষ্কারের জন্য পুলিশকে নির্দেশ দিয়েছিল। এছাড়া ফরাসি সৈন্যদেরও নাইজার থেকে চলে যাওয়ার জন্য বলা হয়েছে।
ফ্রান্স প্রথমে এই আদেশ উপেক্ষা করেছিল। এক মাস পরে প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁ ঘোষণা করেন, ফরাসি রাষ্ট্রদূত প্যারিসে ফিরে আসবে। ফরাসি সেনারাও নাইজার ছেড়ে চলে যাবে।
সোশ্যাল মিডিয়ায় শেয়ার করা চিঠিতে দাবি করা হয়েছে, অভ্যুত্থানের পরে নিয়মিতভাবে কাজ করার জন্য ফরাসি দূতাবাসের অনুরোধের অনুকূল সাড়া দেয়নি নাইজার কর্তৃপক্ষ।
এদিকে, বার্তা সংস্থা রয়টার্স এই বিষয়ে জানার জন্য ফরাসি কর্মকর্তাদের সঙ্গে যোগাযোগ করেছে। কিন্তু তারা নথির সত্যতা নিশ্চিত করেননি। আবার তা অস্বীকারও করেননি। তারা কেবল জানিয়েছেন, গত গ্রীষ্মের পর থেকে দূতাবাসের পরিস্থিতি কঠিন হয়ে উঠেছে এবং সীমাবদ্ধতার কারণে এর কার্যক্রম পরিচালনা করা ক্রমশ অসম্ভব হয়ে পড়েছে।
গত ৩০ জুলাই নাইজারে অবস্থিত ফরাসি দূতাবাসে হামলা করেছিল বিক্ষোভকারীরা। এরপর দেশটির শাসক সামরিক জান্তা ফরাসি দূতাবাসের চারপাশ অবরোধ করে রাখে এবং নাইজারে নিযুক্ত ফরাসি রাষ্ট্রদূত ইত্তেকে অবাঞ্ছিত ঘোষণা করে। সেপ্টেম্বরে তিনি নাইজার ছেড়ে ফ্রান্সে চলে যান।