ভারতে ভোটপর্ব শেষ হতেই আবার সহিংস হয়ে উঠলো উত্তর-পূর্বাঞ্চলের রাজ্য মনিপুর। এবার মুখ্যমন্ত্রী এন বীরেন সিংয়ের অগ্রবর্তী গাড়িবহরে এলোপাথাড়ি গুলি চালিয়েছে কুকি সন্ত্রাসীরা। এতে আহত হয়েছেন একজন নিরাপত্তারক্ষী।
সোমবার সকালে এ ঘটনা ঘটে। মুখ্যমন্ত্রীর অগ্রগতি নিরাপত্তা দলের কনভয়টি ইম্ফল থেকে জিরিবাম জেলার দিকে যাওয়ার পথে আক্রান্ত হয় হয় বলে ইন্ডিয়া টুডের প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে।
বীরেন সিংয়ের মঙ্গলবার জিরিবাম সফর করার কথা। এর আগে অগ্রবর্তী নিরাপত্তা দলটি সেখানে যাচ্ছিল। ৩৭ নম্বর জাতীয় মহাসড়কের ওপরই আচমকাই চোরাগোপ্তা হামলা চালায় সন্ত্রাসীরা। কনভয়টি মনিপুরের রাজধানী ইম্ফল থেকে প্রায় ২৬ কিলোমিটার দূরে টি লাইজং গ্রামের কাছে পৌঁছানো মাত্রই এলোপাথাড়ি গুলি চালাতে শুরু করে কুকি জঙ্গিরা।
আনন্দবাজার পত্রিকা লিখেছে, ভোটপর্ব মিটতেই গত বৃহস্পতিবার থেকে নতুন করে উত্তেজনা ছড়িয়েছে মণিপুরে। মেইতেই এবং কুকি জনগোষ্ঠীর সংঘর্ষে মৃত্যু এবং ঘর ছাড়ার ঘটনা ঘটেছে মণিপুরের জিরিবাম জেলায়। কুকি জঙ্গিদের হামলার মুখে ইতোমধ্যেই ২০০ জনের বেশি মেইতেই গ্রামবাসী এলাকা ছেড়েছেন। তাঁদের ঠাঁই হয়েছে স্থানীয় জিকি স্পোর্টস কমপ্লেক্সের ত্রাণশিবিরে।
গত এক বছরের গোষ্ঠী হিংসা পর্বে জিরিবামে কোনও বড় হিংসা না ঘটলেও লোকসভা ভোটের পর বদলে গিয়েছে ছবি। বৃহস্পতিবার বিকেলে জিরিবাম গুলালতল এলাকার কৃষক এস শরৎ কুমার সিংহের গলাকাটা দেহ ফাইজল পুঞ্জির জঙ্গল থেকে উদ্ধার করা হয়।
ওই এলাকায় কুকি সম্প্রদায়ের বসতি থাকায় খুনের ঘটনায় জনজাতিদের অভিযুক্ত করে উত্তেজিত জনতা থানার সামনে বিক্ষোভ দেখায়। মঙ্গলবারই অশান্ত ওই এলাকা পরিদর্শনে যাওয়ার কথা মুখ্যমন্ত্রী বীরেনের। তার আগে নিরাপত্তা খতিয়ে দেখতে জিরিবাম জেলায় যাচ্ছিলেন মুখ্যমন্ত্রীর নিরাপত্তাকর্মীরা।
আনন্দবাজার পত্রিকা লিখেছে, তৃতীয় বার প্রধানমন্ত্রী হিসাবে শপথ নিয়েছেন নরেন্দ্র মোদী। দিল্লিতে যখন শপথ গ্রহণের অনুষ্ঠান চলছে, সে সময়ই জম্মু-কাশ্মীরে জঙ্গি হামলার ঘটনা ঘটে। সেই ঘটনায় এখনও পর্যন্ত ১০ জনের মৃত্যু হয়েছে। জখম হয়েছেন ৩৩ জন। জম্মু ও কাশ্মীরের পর এবার মণিপুরেও জঙ্গি হামলার ঘটনা প্রকাশ্যে এল। মোদীর দ্বিতীয় জমানায় অন্যতম চিন্তার কারণ হয়ে উঠেছিল মণিপুর। মেইতেই এবং কুকি জনগোষ্ঠীর সংঘর্ষে বারবার উত্তপ্ত হয়ে ওঠে উত্তরপূর্ব ভারতের এই রাজ্যটি।