সেকশন

সোমবার, ১৯ মে ২০২৫, ৫ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২
 

সুপারিশ অনুযায়ী সংস্কার করেই নির্বাচনে যেতে হবে: নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী

আপডেট : ২০ এপ্রিল ২০২৫, ০৬:০৫ পিএম

নির্বাচন সংস্কার কমিশনের প্রতিবেদনের সুপারিশ অনুযায়ী নির্বাচনব্যবস্থা সংস্কার করেই নির্বাচনে যেতে হবে বলে মন্তব্য করেছেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) মুখ্য সমন্বয়ক নাসির উদ্দিন পাটওয়ারী।  

রোববার (২০ এপ্রিল) নির্বাচন ভবনে প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) এমএম নাসির উদ্দিনের সঙ্গে প্রায় দুই ঘণ্টা বৈঠক করে এনসিপি। পরে দলটির মুখ্য সমন্বয়ক এ বিষয়ে সাংবাদিকদের সাথে কথা বলেন।

নাসির উদ্দিন পাটওয়ারী বলেন, ২০২৪ সালের গণঅভ্যুত্থানে যারা শহীদ, আহত; গত ১৫ বছরের যারা গুম খুনের শিকার হয়েছেন, বড় একটি জায়গা ছিলো আমাদের ভোটাধিকার কেড়ে নেয়া হয়েছিলো। জালিয়াতির মাধ্যমে বাংলাদেশকে একটি ফ্যাসিস্ট কাঠামোয় রুপান্তর করা হয়েছিলো। এই কাঠামো রূপান্তরে অন্যতম ভূমিকা রেখেছিলো নির্বাচন কমিশন (ইসি)। এই সংস্কারের মধ্য দিয়ে আমরা যে নতুন একটি বাংলাদেশ পুনর্গঠন করতে যাচ্ছি, এই সংস্কার কার্যক্রমের মধ্য দিয়ে আমরা যাতে নির্বাচন কমিশনকেও নিয়ে যেতে পারি, সেটা নিয়ে আমাদের দীর্ঘক্ষণ আলোচনা হয়েছে।

তিনি আরও বলেন, আমরা বলেছি গত তিনটি নির্বাচনে যারা অংশ নিয়েছিলো, প্রার্থী ও নির্বাচন কমিশনের অনেক কর্মকর্তা-কর্মচারী যারা এই বিষয়গুলোর (অনিয়ম) সঙ্গে জড়িত ছিলো, তদন্তের মাধ্যমে দেশবাসীর সামনে তাদের দৃশ্যমান বিচারের আওতায় আনতে হবে। যাতে ভবিষ্যৎ বাংলাদেশে কোনো প্রতিষ্ঠান, স্বাধীন, সাংবিধানিক হোক বা অসাংবিধানিক হোক, কোনো ব্যক্তি যেন প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে না গিয়ে বাংলাদেশের হাজারো মানুষের রক্তের ওপর প্রতিশ্রুতিবদ্ধ হয়ে, নতুন একটি যাত্রা করতে পারে। এবং এই দুঃসাহস যেন কেউ না দেখাতে পারেন। কমিশন প্রতিশ্রুতিবদ্ধ হয়েছেন। তারা বলেছেন, আমাদের কর্মকর্তা-কর্মচারী যারা রয়েছেন, তাদের কাছ থেকে শপথ নিয়েছেন। কিন্তু আমরা বলেছি, শুধু শপথ নিলে হবে না, ১৫ বছর যারা এই কাজগুলো করেছে, তাদের যথাযথ আইনি প্রক্রিয়ার মধ্যে আনতে হবে।

নাসির বলেন, বর্তমান নির্বাচন ব্যবস্থায় প্রিজাইডিং অফিসারদের সংবিধানিক জায়গায় তাদের বড় একটা ক্ষমতা দেয়া হয়েছে। কিন্তু পরবর্তীতে কোথায় কীভাবে নির্বাচন হয়েছে সে নিয়ে কোনো দায়ভার নেয় না নির্বাচন কমিশন। তাই আমরা বলেছিলাম গেজেট পূর্ববর্তী ৪৮ ঘণ্টার মধ্যেই নির্বাচন কমিশন থেকে একটি সার্টিফিকেশন দিতে যে এই নির্বাচন বিশ্বাসযোগ্য, সুষ্ঠু হয়েছে; যাতে পরবর্তীতে নির্বাচন কমিশনকে আইনের আওতায় আনা যায়। আমরা দেখেছি, গত ১৫ বছরে নির্বাচন কমিশন কোনো সার্টিফিকেশন দেয় নাই। বরং বিভিন্ন দলীয় অফিস থেকে সার্টিফিকেশনগুলো এসেছে। এজন্য আমরা সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠানকে আমরা সাংবিধানিক আকারে দেখতে চাই। আমরা কমিশনকে মানুষের জবাবদিহিতার আওতায় আনতে চাই।

প্রবাসীদের ভোটাধিকার দেয়া হয় নাই উল্লেখ করে এনসিপির এই নেতা বলেন, এখন পর্যন্ত কোনো ভালো পদ্ধতি পায়নি কমিশন। প্রবাসীদের ভোটাধিকার যদি নিশ্চিত না করা হয়, তাহলে নির্বাচন প্রশ্নবিদ্ধ হবে। আমরা নবীনতম দল। ১৫ বছরের অনেক দল যারা ইসিতে কাগজ জমা দিয়েও নিবন্ধন পায়নি, এখন সুবর্ণ সুযোগ এসেছে। আমরা এনসিপি ও অন্যান্য দলকে সুযোগ দেয়ার জন্য সময় বাড়ানোর আবেদন করেছি। তারা বিবেচনাধীন রেখেছে বলে জানিয়েছেন।

তিনি আরও বলেন, রাজনৈতিক দলের যে সংস্কৃতি রয়েছে, এই সংস্কৃতির মধ্যে সুষ্ঠু নির্বাচন অসম্ভব হয়ে পড়েছে। দলগুলোর মধ্যে গণতন্ত্র নেই, দলগুলো ভালো মানুষকে প্রার্থী দেয় না। খারাপ সংস্কৃতির মধ্যে নির্বাচনি ব্যবস্থার মধ্যে ঠেলে দিয়েছে। তাই আমরা বলেছি দলগুলোকেও যে আচরণবিধির মধ্যে নিয়ে আসতে পারে, তাদের অভ্যন্তরীণ যেন গণতন্ত্র ঠিক থাকে, নতুন একটা সংস্কৃতির দিকে যেন যাত্রা শুরু করতে পারে, আমরা সে দাবী জানিয়েছি। আমরা দেখেছি, নামে বেনামে ১৫ বছরে অনেক দলকে নিবন্ধন দেয়া হয়েছে। একই নামে অনেক দলকে নিবন্ধন দেয়া হয়েছে। অনেক দলের অফিসও নেই তাদেরও নিবন্ধন দেয়া হয়েছে। তাই নিবন্ধন নবায়নের কথা বরেছি। তারা এ বিষয়ে সম্মত হয়েছে।

এনসিপি মুখ্য সমন্বয়ক বলেন, সংস্কার কমিশনের প্রতিবেদনের প্রতিটি পাতা ওয়ার্ড ওয়ার্ড বাই ওয়ার্ড অনুসরণ করে নির্বাচনে যেতে হবে। পুরোনো সিস্টেমে ধর তক্তা, মার পেরেক; যখন ইচ্ছা তখন দ্রুত সময়ের মধ্যে একটা নির্বাচন করার সুযোগ আর ছাত্র সমাজ দেবে না। এজন্য একটি সুন্দর প্রক্রিয়ার মধ্যে দিয়ে যেতে হবে। প্রত্যেকটি ওয়ার্ড বাই ওয়ার্ড, প্রত্যেকটি লাইন বাই লাইন, যে প্রস্তাব সংস্কার কমিশন থেকে এসেছে সেগুলো নিয়ম নীতির মধ্যে দিয়ে প্রায়োগিক আকারে নিয়ে এসে নতুন বাংলাদেশে নির্বাচনের যাত্রা সূচনা করতে হবে।  

মৌলিক সংস্কারের আলোকে নির্বাচন কমিশনের সংস্কার চেয়েছেন, তাহলে এই কমিশনের প্রতি আস্থা আছে কিনা? এমন প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠান হিসেবে নির্বাচন কমিশন থেকে আমরা যে কথাগুলো শুনতে পাই, সেগুলো আমরা এখনও প্রধান উপদেষ্টার কাছ থেকে শুনিনি। রোডপম্যাপের কথা আমরা শুনিনি। কিন্তু নির্বাচন কমিশন থেকে এসেছে। এজন্য আমরা বলতে চাই, নির্বাচন কমিশন কথা বলার সময় নিজেদের জায়গা থেকে সতর্ক থাকবে। 

তিনি বলেন, প্রধান উপদেষ্টা যে কথা বলেছেন ডিসেম্বর থেকে জুনের মধ্যে নির্বাচন, সে অনুসারে তারা কাজ শুরু করতে পারে, কিন্তু রোডম্যাপ বা সরকার থেকে কোনো নির্দেশনার আসার আগেই তারা যদি নিজেদের ভেতর থেকে কথা বলে থাকেন, সেটা নিয়ে আমরা সন্দেহ পোষণ করি। আমরা বলেছি ২০২২ সালের যে নিয়ম নীতিগুলো ছিলো সেটা নিয়ে বিএনপিও বিরোধিতা করেছিলো। সেই নিয়মের অধীনে নির্বাচন না হয়ে একটা সংস্কারের মাধ্যমে যেন নির্বাচন হয়। গত ১৭ এপ্রিল আমরা ইসিতে যে চিঠি দিয়েছি, এতে সংস্কারের বিষয়টি ফোকাস করেছিলাম, যেন তারা সেদিকে ধাবিত হয়।

আমরা সার্চ কমিটির মাধ্যমে ইসি গঠনের বিরোধিতা করি জানিয়ে এনসিপির এই নেতা বলেন, আমরা সংস্কার প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়ে নির্বাচন কমিশন চাই। সেখানে ঐকমত্য কমিশন যদি সম্মত হয়, তারা যদি এ বিষয়ে যদি ব্যবস্থা নেয়, এটা সরকারের একটা সিদ্ধান্ত। যারা কমিশনার রয়েছে, তারা নয়। আমরা সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠান আকারে দেখি। সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠান হিসেবে ঐকমত্য কমিশন থেকে যদি পুনর্গঠনের সিদ্ধান্ত আসে সে বিষয়ে আমরা দেখবো। যদি না হয় নির্বাচনের আগে তখন আমরা পরবর্তীতে কমেন্ট করবো।

প্রধান উপদেষ্টার ঘোষিত সময়সীমার মধ্যে যদি কমিশন তফসিল ঘোষণা করে তাহলে আপনাদের অবস্থান কী হবে -এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, নির্বাচনি সংস্কার অতিজরুরি। বর্তমান প্রক্রিয়ায় ঐকমত্য কমিশন থেকে আসার সিদ্ধান্তের আলোকে যদি নির্বাচন হয়, আমরা আশা করি যে একটা সুন্দর নির্বাচন হবে। বর্তমান ব্যবস্থায় অনেকগুলো বিষয়ে সংস্কার জরুরি। কমিশনও অনেক সংস্কারের জন্য একমত পোষণ করেছেন।  

রোববার ইসির সঙ্গে জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) এটাই ছিলো প্রথম বৈঠক। মুখ্য সমন্বয়ক নাসির উদ্দিন পাটওয়ারীর নেতৃত্বে বৈঠকে দলটির যুগ্ম আহ্বায়ক অনিক রায়, খালেদ সাইফুল্লাহ, মুজাহিদুল ইসলাম শাহিন ও তাজনূভা জাবীন ইসির সঙ্গে বৈঠকে বসেছিলেন।

আরবিএস
সংগঠনটি দেশের স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্বের রক্ষাকবচ হয়ে উঠবে বলে মন্তব্য করেছেন এনসিপির সদস্য সচিব আখতার হোসেন। 
১৩১ সদস্যের আহ্বায়ক কমিটি ঘোষণার মাধ্যমে আনুষ্ঠানিকভাবে আত্মপ্রকাশ করেছে জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) যুব সংগঠন ‘জাতীয় যুবশক্তি’।
একাত্তরে স্বাধীনতার বিরোধিতার জন্য জামায়াতকে জাতির কাছে ক্ষমা চাওয়ার আহবান জানিয়েছেন, জুলাইয়ের চেতনার রাজনৈতিক দল- জাতীয় নাগরিক পার্টি- এনসিপি’র নেতারা।
একাত্তরকে পাশ কাটানোর সুযোগ নেই। বরং একাত্তরকে ভিত্তিমূল ধরেই চব্বিশের অভ্যুত্থান হয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন জাতীয় নাগরিক পার্টি-এনসিপির মুখ্য সমন্বয়ক নাসিরুদ্দীন পাটোয়ারী।
কয়েকজন শীর্ষ নেতার বিরুদ্ধে দুর্নীতি, চাঁদাবাজি, টেন্ডারবাজি, জমি দখল, নিয়োগ বাণিজ্যসহ বিভিন্ন অভিযোগ তুলে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের রংপুর জেলা ও মহানগর কমিটির ১৬ নেতা পদত্যাগ করেছেন।
নাটোরে বিএনপি চেয়ারপারসনের সাবেক উপদেষ্টা ও সাবেক উপমন্ত্রী অ্যাডভোকেট এম রুহুল কুদ্দুস তালুকদার দুলু এবং তার স্ত্রী নাটোর-২ আসনের ২০১৮ সালের বিএনপি মনোনীত সংসদ সদস্য প্রার্থী সাবিনা ইয়াসমিন...
ঝিনাইদহে মাছ বিক্রি নিয়ে দুই দল গ্রামবাসীর মধ্যে সংঘর্ষ হয়েছে। এতে অন্তত ৪০ জন আহত হয়েছেন। তাদের উদ্ধার করে সদর হাসপাতালসহ বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
রাজধানীর ভাটারা থানার একটি মামলায় গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে ঢাকাই সিনেমার আলোচিত নায়িকা নুসরাত ফারিয়াকে। রোববার (১৮ মে) রাতে জিজ্ঞাসাবাদ শেষে তাকে গ্রেপ্তার দেখানো হয়।
লোডিং...
সর্বশেষপঠিত

এলাকার খবর


© ২০২৫ প্রকাশক কর্তৃক সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত