ইসলামী যুব আন্দোলন বাংলাদেশের ‘যুব কনভেনশন’ এর জন্য রাজধানীর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে যে বরাদ্দ দিয়েছিলো গণপূর্ত অধিদপ্তর, তা বাতিল করা হয়েছে। তারপরও শুক্রবার সেখানে সমাবেশ করার ঘোষণা দিয়েছে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের যুব সংগঠনটি।
বৃহস্পতিবার গণপূর্ত অধিদপ্তরের তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী মোহাম্মদ মনিরুল ইসলামের সই করা এক চিঠিতে সোহরাওয়ার্দী উদ্যান ব্যবহারের অনুমতিপত্রটি বাতিল করার তথ্য জানানো হয়।
মনিরুল ইসলাম গণমাধ্যমে বলেন, এর আগে পুলিশ ক্লিয়ারেন্স সাপেক্ষে শুক্রবার উদ্যানের ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউট অংশে ‘যুব কনভেনশন’ করার জন্য অনুমতি দেয়া হয়েছিলো। এখন পুলিশ থেকে যেহেতু তাদেরকে অনুমতি দেওয়া হয়নি। এজন্য আমরা বরাদ্দপত্রের ১৩ নম্বর শর্তানুযায়ী সোহরাওয়ার্দী উদ্যান ব্যবহারের অনুমতিপত্রটি বাতিল করেছি।
ঢাকা মহানগর পুলিশের রমনা বিভাগের উপকমিশনার মো. মাসুদ আলম বলেন, শুক্রবার সকালে মেডিকেল ভর্তি পরীক্ষার কারণে আমরা তাদের সম্মেলনটি পরে করতে বলেছিলাম। তারা পরে আমাদের সঙ্গে আর যোগাযোগ করেননি।
তবে শুক্রবার সেখানেই সমাবেশের প্রস্তুতি এগিয়ে নেওয়ার কথা জানিয়ে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের কেন্দ্রীয় সহ-প্রচার ও দাওয়াহ বিষয়ক সম্পাদক শহিদুল ইসলাম কবির গণমাধ্যমে বলেন, আগামীকাল ১৭ জানুয়ারি, শুক্রবার, বাদ জুম্মা থেকে ঐতিহাসিক সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে ইসলামী যুব আন্দোলন বাংলাদেশ-এর উদ্যোগে যুব কনভেনশন অনুষ্ঠিত হবে ইনশাআল্লাহ।
তিনি আরও বলেন, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের আমীর মুফতী সৈয়দ মুহাম্মাদ রেজাউল করীম পীর সাহেব চরমোনাই এতে প্রধান অতিথি হিসেবে গুরুত্বপূর্ণ বক্তব্য রাখবেন।
এর আগে শুক্রবার উদ্যানের ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউট অংশে ‘যুব কনভেনশন’ করার জন্য গণপূর্ত অধিদপ্তরের অনুমতি পেয়েছিলো ইসলামী যুব আন্দোলন। কিন্তু তাতে একুশে বইমেলার প্রস্তুতি থমকে গেলে বাংলা একাডেমি আপত্তি তোলে।
বৃহস্পতিবার এ বিষয়ে মেলা পরিচালনা কমিটির সভাপতি ও বাংলা একাডেমির মহাপরিচালক অধ্যাপক মোহাম্মদ আজম একটি চিঠি দিয়েছেন সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়ে।
অধ্যাপক মোহাম্মদ আজমের সই করা ওই চিঠিতে বলা হয়েছে, বাংলা একাডেমি অমর একুশে বইমেলা ২০২৫ আয়োজনের জন্য (গণপূর্ত অধিদপ্তর থেকে প্রাপ্ত চিঠি সংযুক্ত-১) সোহরাওয়ার্দী উদ্যান ১ জানুয়ারি থেকে ৩ মার্চ ২০২৫ পর্যন্ত বরাদ্দ পেয়েছে। বইমেলার প্রস্তুতি, বিশেষত স্টল নির্মাণের কাজ আংশিক সম্পন্ন হয়েছে।
এরই মধ্যে বিভিন্ন সূত্রে জানা গেছে, গণপূর্ত অধিদপ্তর একই সময়ে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে অন্যান্য সমাবেশ ও কার্যক্রম আয়োজনের জন্য অনুমতি প্রদান করেছে। এতে বইমেলা হুমকির মুখে পড়েছে। একই সময়ে অন্য কোনো সমাবেশ উদ্যানে হলে বইমেলা আয়োজন করা অসম্ভব।
বাংলা একাডেমি বিষয়টি গুরুত্বের সঙ্গে দেখার জন্য সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়কে অনুরোধ জানিয়ে চিঠিতে বলা হয়েছে, এই পরিপ্রেক্ষিতে বিষয়টি খতিয়ে দেখে বইমেলার জন্য বরাদ্দকৃত স্থানে অন্য কোনো সভা সমাবেশের অনুমতি বাতিল করা প্রয়োজন। বিষয়টি বিশেষভাবে বিবেচনা করার জন্য অনুরোধ জানানো যাচ্ছে।