উনিশটি ওয়াগানে ১ হাজার ১২২ মেট্রিক টন পাথর নিয়ে নীলফামারীর চিলাহাটি স্টেশনে এলো আরো একটি ভারতীয় পণ্যবাহী ট্রেন।
বৃহস্পতিবার (৫ আগস্ট) ভারতের হলদিবাড়ী রেলওয়ে স্টেশন থেকে ছেড়ে দুপুর ১টায় চিলাহাটি স্টেশনে পৌঁছে ভারতের ওই পণ্যবাহি ট্রেনটি।
এরপর ইমিগ্রেশন শেষে পাথর বোঝাই ওয়াগনগুলো রেখে হলদিবাড়ীর উদ্দেশ্যে দুপুর পৌনে দু’টার দিকে ভারতীয় রেলওয়ে ইঞ্জিনটি চিলাহাটি স্টেশন ত্যাগ করে বলে নিশ্চিত করেন চিলাহাটি রেলওয়ে স্টেশন মাস্টার আশরাফুল ইসলাম।
তিনি জানান, ‘‘চিলাহাটি-হলদিবাড়ী রেলপথ উদ্বোধনের সাড়ে সাত মাস পর গত ১ আগস্ট ভারতের উত্তরপূর্ব সীমান্ত রেলওয়ের ডামডিম স্টেশন থেকে পাথর বোঝাই প্রথম পণ্যবাহী ট্রেনটি হলদিবাড়ী-চিলাহাটি রেলপথ দিয়ে নীলফামারীর চিলাহাটি স্টেশনে পৌঁছে। পণ্যবাহী ট্রেনের ৪০টি ওয়াগনে দুই হাজার ২৮৫ দশমিক ২০ মেট্রিকটন পাথর আসে।
বৃহস্পতিবার একই ভাবে ১৯টি ওয়াগানে ১ হাজার ১২২ মেট্রিক টন পাথর নিয়ে নীলফামারীর চিলাহাটি স্টেশনে এলো আরো একটি ভারতীয় পণ্যবাহি ট্রেন। এ নিয়ে ভারতের দু’টি পণ্যবাহী ট্রেন হলদিবাড়ী হয়ে চিলাহাটি আসলো।
ভারত থেকে এসব পাথর আমদানি করেছে চায়না সেভেন ইঞ্জিনিয়ারিং কনস্ট্রাকশন লিমিটেডের পক্ষে সিএ-এফ এজেন্ট খান এন্ড সন্স এজেন্সি।’’
আরও পড়ুন: শরণখোলায় আমন চাষীদের মাঝে হাহাকার
ব্রিটিশ আমল থেকে অবিভক্ত ভারতের এই অঞ্চলে যোগাযোগের অন্যতম প্রধান রেলপথ ছিল হলদিবাড়ী-চিলাহাটি রেলপথ। এই পথ দিয়ে দার্জিলিং থেকে খুলনা হয়ে কলকাতা পর্যন্ত একাধিক পণ্যবাহী ও যাত্রীবাহী ট্রেন চলাচল করতো।
১৯৪৭ সালে দেশভাগের পর ভারত ও তৎকালীন পূর্বপাকিস্তানের মধ্যে চলাচলের পথ ছিল চিলাহাটি-হলদিবাড়ী রেলপথ। পাক-ভারত যুদ্ধের সময় ১৯৬৫ সালের ৬ সেপ্টেম্বর চিলাহাটি-হলদিবাড়ী রেলপথটি বন্ধ হয়ে যায়। সেই থেকে স্থবির হয়ে পড়ে নীলফামারীসহ আশপাশের জেলার ব্যবসা-বাণিজ্য।
তখন থেকেই ব্যবসায়ীসহ এলাকার মানুষের দাবি ছিল পুনরায় এই রেলপথ চালু করার। এই দাবিতে কয়েক দশক থেকে জেলা শহরসহ বিভিন্ন উপজেলায় মানববন্ধনসহ বিভিন্ন কর্মসূচি পালন করে জেলা ব্যবসায়ীসহ সাধারণ মানুষ।
ওই দাবির প্রেক্ষিতে দীর্ঘ ৫৫ বছর পর পুনরায় রেলপথটি চালুর উদ্যোগ নেয় দু’দেশের সরকার।
দীর্ঘ ৫৫ বছর বন্ধ থাকার পর ২০২০ সালের ১৭ ডিসেম্বর হলদিবাড়ি-চিলাহাটি রেলপথে পণ্যবাহী ট্রেন এবং চলতি বছরের ২৭ মার্চ একই রুটে যাত্রীবাহী ‘মিতালী’ এক্সপ্রেস ট্রেন চলাচলের উদ্বোধন করেন দু’দেশের প্রধানমন্ত্রী।
১ আগস্ট থেকে এই রেলপথে পণ্যবাহী ট্রেন নিয়মিত চলাচল শুরু হলেও মহামারি করোনার কারণে বর্তমানে বন্ধ রয়েছে যাত্রীবাহী মিতালী এক্সপ্রেস ট্রেন চলাচল বলে জানায় রেলওয়ে বাংলাদেশ রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ।
একাত্তর/এসজে