রাজবাড়ী জেলার গোয়ালন্দ উপজেলার চরাঞ্চলে বিষধর সাপ রাসেলস ভাইপারের (চন্দ্রবোড়া) উপদ্রব বেড়েছে। স্থানীয়দের ভাষ্য, গত দুই সপ্তাহে সাপটির দংশনে হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়েছেন চার কৃষক। বর্তমানে মাঠে যেতেও ভয় পাচ্ছেন তারা।
স্থানীয়রা জানান, শুক্রবার (১৮ এপ্রিল) দুপুরে রাজবাড়ী জেলার গোয়ালন্দ উপজেলার মজলিসপুর চরে গরুর ঘাস কাটতে গিয়ে রাসেলস ভাইপারের কামরে অসুস্থ হয়ে পরেন বাহেরচর দৌলতদিয়া এলাকার বাসিন্দা মালেকা বেগম। সঙ্গে থাকা কৃষকরা তাকে দ্রুত গোয়ালন্দ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যান। পরে উন্নত চিকিৎসার জন্য ফরিদপুর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়।
তারা আরও জানান, এর আগে গত সপ্তাহে চর মজলিসপুর ও চর মহিদাপুরে কৃষক শুকুর শেখ, সাগর শেখ ও আসলাম মিয়াকে দংশন করেছে রাসেলস ভাইপার, যা স্থানীয়দের ভাষায় চন্দ্রবোড়া নামেও পরিচিত।
এলাকাবাসী জানান, সাপের উৎপাতে চরাঞ্চলে কাজ করা কষ্টকর হয়ে গেছে। একই অবস্থা দৌলতদিয়া ইউনিয়নের চর করনেশনা, আঙ্কের শেখের পারা, মহিদাপুর চরসহ বেশ কয়েকটি এলাকায়।
তারা বলেন, মাঠ ভরা পাকা ফসল থাকলেও সাপের ভয়ে মাঠে যেতে ভয় পাচ্ছেন। বাম্পার ফসল উৎপাদনকারী এইসব চরাঞ্চলে কৃষি কাজ ব্যহত হচ্ছে মারাত্মকভাবে। যারাও মাঠে যাচ্ছে সব সময় মনে করছে এই বুঝি সাপ এসে কামরে দিয়ে গেলো। পুরো এলাকায় এখন সাপের আতঙ্কে নির্ঘুম রাত কাটে তাদের।
গোয়ালন্দ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের চিকিৎসক সরিফুল ইসলাম জানান, বিষধর সাপে কাটলে অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে।
তিনি জানান, হাসপাতালে সাপে কাটা রোগীর জন্য পর্যাপ্ত অ্যান্টিভেনম থাকলেও তা দেওয়ার পরের ব্যবস্থা গ্রহণের কোনো সাপোর্ট নেই। তাই এই ধরণের রোগীকে ফরিদপুরে পাঠানো হচ্ছে।
গোয়ালন্দ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. নাহিদুর রহমান জানান, উপজেলার নতুন আপদের নাম ‘সাপ’। তাই সাপ থেকে বাঁচতে স্থানীয় কৃষি ও প্রাণিসম্পদ বিভাগ ও কৃষকদের নিয়ে সচেতনতামূলক কর্মসূচি চালানো হবে। কৃষকদের দেওয়া হবে গাম বুট ও হ্যান্ডস গ্লোবস।
গত বছর একই সময়ে রাজবাড়ীর গোয়ালন্দে বিষধর রাসেলস ভাইপার বা চন্দ্রবোড়া কামরে মারা গিয়ে ছিল চার কৃষক, আর আহত হয়েছিল অন্তত ১৫ জন।