ইন্দো-ইতালিয়ান ছবি ‘পরিক্রমা’ নিয়ে এবার কান চলচ্চিত্র উৎসবের ছবির মার্কেটে যোগ দিয়েছিলেন নন্দিত নির্মাতা গৌতম ঘোষ। ব্যস্ত শিডিউলে একাত্তরের সঙ্গে কথা বলেছেন বাঙালির ‘মনের মানুষ’ গৌতম।
তিনি বলেন, ইচ্ছা আছে আবারও বাংলাদেশে গিয়ে সিনেমা বানানোর। আরও বলেন, বর্তমানে ডিজিটাল মিডিয়ার দাপটে নির্মাতার চ্যালেঞ্জটা অনেক বেশি। তার থেকে সিনেমাটা আলাদা করতে হবে। এখানেই নির্মাতার মুন্সিয়ানা।
এর আগে পাঁচবার কান চলচ্চিত্র উৎসবে আমন্ত্রণ পেয়েছিলেন গৌতম। ১৯৮২ সালে প্রথম কান উৎসবে যোগ দিয়েছিলেন ‘দখল’ সিনেমা নিয়ে। এরপর ‘অর্ন্তজলী যাত্রা’, ‘পদ্মা নদীর মাঝি’, বিসমিল্লাহ খানের ওপর তথ্যচিত্র ও ‘গুড়িয়া’ ছবির দৌলতে আরও চারবার। এর মধ্যে ভূ-মধ্যসাগরে বয়ে গেছে কতো স্রোতধারা। সেলুলয়েড থেকে সিনেমার ভাষা হয়েছে ডিজিটাল। সিনেমার ভাষার মতোই বদলে গেছে কতো কিছু। তখনও বিশ্বের সবচেয়ে বড় এই উৎসবে শিল্প এবং ব্যবসার অদ্ভুত সমন্বয় দেখেছেন। তার মতে, এখন সেটা আরও বড়সড় আকার নিয়েছে।
গৌতম বলেন, কান হচ্ছে এমন একটা ফেস্টিভাল যা অদ্ভুত শিল্প ও ব্যবসার সমন্বয়। এটা কিন্তু ফ্রেঞ্চরা দারুণভাবে জানে, একদিকে যেমন শিল্পমাধ্যম, তার সঙ্গে যুক্ত করা হয় বিশ্বসেরা সিনেমা, আবার একটা বিরাট মার্কেট তৈরি করে। তার থেকে তারা আয়ও করে অনেক। কিন্তু ওরা যোগাযোগ করিয়ে দেয় বাকি বিশ্বের সঙ্গে। এই জায়গাটা হচ্ছে পৃথিবীর সবচেয়ে বড় সিনেমা ইভেন্টের জায়গা।
ভিন্ন আলাপে বর্তমান ডিজিটাল মাধ্যমের দাপটে সিনেমার চ্যালেঞ্জ নিয়ে বললেন গৌতম। তার ভাষায় সহস্র ইমেজ এখন ঘুরে বেড়াচ্ছে। তার থেকে সিনেমার ইমেজ আলাদা হতে হবে।
গৌতমের ভাষায়, সহস্র সহস্র কোটি কোটি ইমেজেস ঘুরে বেড়াচ্ছে। আমাদের কাছে চ্যালেঞ্জ হচ্ছে- আমি এমন ইমেজ তৈরি করবো যেটা অন্য কেউ তুলতে পারবে না। তাহলে কিন্তু মানুষ সেই ইমেজ দেখতে যাবে। কারণ, সিনেমা হচ্ছে ব্যাসিকেলি ভিজুয়াল আর্ট। সেখানে ভিজ্যুয়াল অনেক গুরুত্বপূর্ণ ব্যাপার। আমার মনে হয়, এই অডিও ভিজুয়াল বোর্ম্বাডমেন্টে, আমরা ভোর বেলা ঘুম থেকে উঠে রাতে ঘুমাতে যাই, যখন আমরা চারিদিকে অজস্র অডিও ভিজ্যুয়াল। তার থেকে সিনেমাকে আলাদা করতে হবে, সেটাই আমাদের চ্যালেঞ্জ।
বাংলাদেশ প্রসঙ্গ আসতেই বাঙালির মনের মানুষ গৌতম ঘোষ বললেন, তার প্রাণের ইচ্ছে, আবারও বাংলাদেশে ছবি নির্মাণের।
বললেন, আমার দুই বাংলা নিয়ে কাজ করতে ভালো লাগে। আমি বাংলাদেশে তিনটা ফিচার ফিল্ম তৈরি করেছি এবং বাংলাদেশের বিভিন্ন টেকনিশিয়ান, আর্টিস্টের সঙ্গে কাজ করে খুশি হয়েছি। আর আমার নিজের দেশ ফরিদপুর। ফলে আমার একটা আলাদা টান থাকবেই। আমার নতুন একটা ছবি করবো বাংলাদেশে। একটুখানি চিন্তা ভাবনা করছি। একটু সেটেল হোক পরিবেশটা। আমার ধারণা নির্বাচন হবে। এরকম রাজনৈতিক উঠানামা তো হতেই থাকে। আমার নিজের প্রাণের খুব ইচ্ছে, আমি আবার বাংলাদেশে গিয়ে ছবি তৈরি করবো।
তবে বলতে চাইলেন না, ছবির প্রেক্ষাপট।