পাকিস্তানে প্রথমবারের মতো নারী পরিচালিত পুলিশ স্টেশন চালু হয়েছে। গত সোমবার (২৫ অক্টোবর) আজাদ জম্মু ও কাশ্মীরের রাওয়ালকোটে পুলিশ স্টেশনটির উদ্বোধন করা হয়েছে।
যেকোনো ধরনের অন্যায়ের প্রতিকার ও আইন-বিষয়ক পরামর্শে নারীদের মাঝে আত্মবিশ্বাস তৈরির লক্ষ্য নিয়ে এই পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। পাকিস্তানের গণমাধ্যম ডউন অনলাইনের এক প্রতিবেদনে এসব তথ্য উঠে আসে।
পুলিশ স্টেশনটি উদ্বোধন করেন পাকিস্তান পুলিশের মহাপরিদর্শক (আইজিপি) সোহেইল হাবিব তাজিক। তিনি বলেন, ১১ সদস্যের দল নিয়ে আপাতত এই স্টেশনের যাত্রা শুরু। স্টেশন হাউস অফিসার (এসএইচও) হিসেবে এই দলের নেতৃত্বে থাকবেন পুলিশের উপপরিদর্শক (এসআই) জাহিদা হানিফ।
মূলত স্টেশনের দায়িত্বপ্রাপ্তরা নারীদের বিভিন্ন অভিযোগ তদন্ত করবেন বলেও জানান পুলিশের মহাপরিদর্শক। কর্মক্ষেত্র ও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে হয়রানি, সাইবার আক্রমণ, শিশু নির্যাতন ও পারিবারিক সহিংসতার বিষয়গুলোও তদন্ত করবেন তারা। এছাড়া নারীকে অভিযুক্ত করা সম্পত্তি–বিষয়ক নানা বিবাদও তাদের কার্যক্রমের আওতায় পড়বে।
আরও পড়ুন: ড্রেজারের পাঁচ শ্রমিককে তিন মাসের জেল, একজনকে জরিমানা
লিঙ্গসমতার দিক থেকে আন্তর্জাতিক পর্যায়ে পাকিস্তানের অবস্থান ১৫৩তম উল্লেখ করে পুলিশের মহাপরিদর্শক জানান, মাত্র তিনটি দেশ পাকিস্তানের পেছনে রয়েছে। এসময় লিঙ্গ বৈষম্যকে উদ্বেগজনক বিষয় বলেও উল্লেখ করেন তিনি। এই ব্যবধান কমিয়ে আনতেই নারীদের পুলিশ স্টেশনকে আরেকটি ধাপ বলে জানান তিনি।
এসময় আজাদ জম্মু ও কাশ্মীরের বাকি দুই বিভাগীয় সদরেও একটি করে নারী পুলিশ স্টেশন খোলা হবে বলে জানান আইজিপি সোহেইল হাবিব তাজিক। স্টেশনগুলো নারীদের বিরুদ্ধে সংঘটিত অপরাধ-বিষয়ক গবেষণার কেন্দ্রস্থল হয়ে উঠবে বলে আশা প্রকাশ করেন তিনি।
এছাড়া নারীরা সাধারণত পুরুষ কর্মকর্তাদের কাছে তাঁদের সঙ্গে ঘটে যাওয়া অপরাধ সম্পর্ক বলতে দ্বিধা বোধ করেন। সেক্ষেত্রে নারীদের সোচ্চার করতে ও তাদের সাথে হওয়া অপরাধের ধরন চিহ্নিত করতে এই ধরনের পুলিশ স্টেশন উত্সাহিত করবে বলেও জানান আইজিপি।
তবে পাকিস্তানের আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীতে নারী ও পুরুষের সমতায় এখনো অনেকখানিই পিছিয়ে আজাদ জম্মু ও কাশ্মীর। এখানে আট হাজার পুলিশের মধ্যে নারী সদস্যের সম্ভাব্য সংখ্যা সর্বোচ্চ ১৫০। পাকিস্তানের নিয়ন্ত্রণে থাকা অঞ্চলটিতে ২০১৬ সালের অক্টোবরে প্রথম এসএইচও হন একজন নারী উপপরিদর্শক।
একাত্তর/টিএ