গত সপ্তাহে বাল্টিক সাগরের তলদেশে নর্ডস্ট্রিম প্রাকৃতিক গ্যাস পাইপলাইন সিস্টেমে চারটি ছিদ্র দেখা দিয়েছে। এ নিয়ে পাল্টাপাল্টি অভিযোগ করেছে রাশিয়া ও পশ্চিমা দেশগুলো। এমন পরিস্থিতিতে এ ঘটনার তদন্ত চেয়ে রাশিয়ার মিত্রদেশ চীন নিজেদের অবস্থান স্পট করেছে।
জাতিসংঘে নিযুক্ত চীনা উপ-প্রতিনিধি কেং সুয়াং জানান, রাশিয়ার নর্ডস্ট্রিম গ্যাস পাইপলাইনের ছিদ্র ও বিস্ফোরণের বিষয়ে চীন অনেক উদ্বিগ্ন। এ পাইপলাইন হলো ইউরোপের জ্বালানি পরিবহন ধমনী। বিভিন্ন পক্ষের সঙ্গে একযোগে আন্তর্জাতিক অবকাঠামোর নিরাপত্তা রক্ষা করতে চায় চীন।
তিনি আরও বলেন, চীন লক্ষ্য করেছে, এবারের বিষয়টি দুর্ঘটনা নয়। বরং স্বেচ্ছায় তৈরি বিপর্যয়। বিষয়টি সঠিক হলে তা আন্তর্জাতিক আইনের লঙ্ঘন। সংশ্লিষ্ট পক্ষগুলো (রাশিয়া ও ইউরোপ) মনে করে, এ ঘটনার সার্বিক, ন্যায্য ও পেশাদার তদন্ত করা অত্যন্ত জরুরি।
দ্রুত এ বিষয়ে একটি সমাধানে পথে আসতে উভয় পক্ষকে আহ্বান জানান এ চীনা কর্মকর্তা।
চীনের রাষ্ট্রীয় সংবাদমাধ্যম চায়না রেডিও ইন্টারন্যাশনাল এক প্রতিবেদনে জানায়, এবারের ঘটনায় ইউরোপের জ্বালানি সংকট আরও গুরুতর হয়েছে। এতে জ্বালানির দাম বাড়বে এবং বিশ্বের গ্রাহকদের ক্ষতি হবে।
এরইমধ্যে বাড়তি খরচ গুনতে হচ্ছে ইউরোপীয়দের। গ্যাসের অভাবে ব্যাহত হতে পারে উৎপাদন ব্যবস্থা। আসতে পারে অর্থনৈতিক মন্দা, এমনটাই বলছেন ইউরোপীয় জ্বালানি বিশেষজ্ঞরা।
জ্বালানির দাম কমানোর দাবিতে জার্মানি, যুক্তরাজ্যসহ ইউরোপের একাধিক দেশে বিক্ষোভ করেছে নাগরিকরা। এসব বিক্ষোভ সমাবেশে ইউরোপের জ্বালানি নীতির সমালোচনা করেন তারা।
এর আগে সেপ্টেম্বর মাসের শেষ সপ্তাহে নর্ডস্ট্রিম প্রাকৃতিক গ্যাস পাইপলাইন সিস্টেমে প্রথম ছিদ্রের সন্ধান মেলে। একই সপ্তাহে গুরুত্বপূর্ণ এই পাইপলাইনে চতুর্থ ছিদ্রের খোঁজ পাওয়া যায়।
আরও পড়ুন: পাইকারি বিদ্যুতের দাম বাড়ানোর ঘোষণা যে কোন দিন
মার্কিন সংবাদমাধ্যম সিএনএন বলছে, নর্ডস্ট্রিমের যেসব স্থানে ছিদ্র হয়েছে তার আশেপাশে রাশিয়ান নৌবাহিনীর জাহাজ ও সাবমেরিনের উপস্থিতি লক্ষ্য করেছে ইউরোপীয় নিরাপত্তা কর্মকর্তারা।
এ বিষয়ে রাশিয়ার মুখপাত্র দিমিত্রি পেসকোভকে জিজ্ঞাসা করা হলে তিনি বলেন, ওই এলাকায় ন্যাটর উপস্থিতি আরও অনেক বেশি।
রাশিয়ার নর্ড স্ট্রিম-১ প্রকল্পের ব্যবস্থাপনা সংস্থা নর্ড স্ট্রিম প্রাকৃতিক গ্যাস পাইপলাইন কোম্পানি প্রকাশিত এক বিবৃতিতে বলেছে, ‘নর্থ স্ট্রিম’ পাইপলাইনের ক্ষতির পরিমাণ নির্ণয় না-করা পর্যন্ত, পাইপলাইনটির গ্যাস সরবরাহ পুনরুদ্ধার করার পূর্বাভাস দেওয়া অসম্ভব। আনুষ্ঠানিক অনুমতি পাওয়ার পর কোম্পানিটি প্রাকৃতিক গ্যাস পাইপের চাপ স্থিতিশীল হবে এবং ফাটল বন্ধ হওয়ার পর পাইপলাইনের ক্ষয়ক্ষতির এলাকা মূল্যায়ন করা যাবে।
একাত্তর/আরবিএস